বিশ্ব ইজতেমার মাঠ নিয়ে সৃষ্ট বিরোধের জেরে বৃহস্পতিবার লংমার্চের মাধ্যমে টঙ্গীর ইজতেমা ময়দান দখলের হুমকি দিয়েছেন তাবলীগ জামাতের শুরা নেজামের (জুবায়েরপন্থি) নেতা মুফতি আমানুল হক।
বুধবার (১৮ ডিসেম্বর) কাকরাইল মসজিদে আয়োজিত এক জরুরি সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ ঘোষণা দেন।
তাবলীগ জামাতের দুই পক্ষের সংঘর্ষ এবং হতাহতের ঘটনার প্রেক্ষিতে সরকার উভয় পক্ষকেই ইজতেমা ময়দান ছাড়ার নির্দেশ দিয়েছে। পাশাপাশি কামারপাড়া, আবদুল্লাহপুর, উত্তরা এবং তুরাগ নদীর দক্ষিণ-পশ্চিম এলাকায় যেকোনো সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধ করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত হয়। বৈঠকের পর সাদপন্থিদের প্রতিনিধি রেজা আরিফ বলেন, ‘সরকারের নির্দেশনায় উভয় পক্ষকে ময়দান ছেড়ে দিতে বলা হয়েছে। মুখোমুখি সংঘর্ষ এড়াতে আমরা সরকারের অনুরোধে সাড়া দিয়ে ময়দান ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’
এর আগে মঙ্গলবার রাত থেকে বুধবার ভোর পর্যন্ত টঙ্গীর ইজতেমা ময়দানে সাদ ও জুবায়েরপন্থিদের মধ্যে সংঘর্ষে তিনজন নিহত হন। নিহতরা হলেন বাচ্চু মিয়া (৭০), তাইজুল ইসলাম (৬৫) এবং বেলাল (৬০)। বাচ্চু মিয়ার বাড়ি কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়া, বেলালের ঢাকার দক্ষিণ খান, আর তাইজুলের বাড়ি বগুড়া।
২০ ডিসেম্বর থেকে পাঁচ দিনের জোড় ইজতেমা করার জন্য সাদপন্থি মুসল্লিরা ময়দানে প্রবেশের চেষ্টা করলে সংঘর্ষ শুরু হয়। রাত ৩টার পর সাদপন্থিরা কামারপাড়া ব্রিজ পার হয়ে ময়দানে প্রবেশ করলে সেখানে অবস্থান নেওয়া জুবায়েরপন্থিদের সঙ্গে তাদের সংঘর্ষ হয়।
সাদপন্থিরা ফটক ভেঙে ময়দানে প্রবেশ করে এবং ঘুমিয়ে থাকা জুবায়েরপন্থিদের ওপর হামলা চালায়। এতে উভয় পক্ষের বহু মুসল্লি আহত হন। আহতদের টঙ্গী শহীদ আহসান উল্লাহ মাস্টার জেনারেল হাসপাতাল এবং ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
সরকার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে এবং ভবিষ্যৎ সংঘর্ষ এড়াতে উভয় পক্ষের প্রতি উস্কানিমূলক বক্তব্য এড়িয়ে চলার আহ্বান জানিয়েছে। পাশাপাশি, ইজতেমা ময়দানের দায়িত্ব সরকার নিজের হাতে নেওয়ার সিদ্ধান্ত জানিয়েছে।
এই সংঘর্ষের ঘটনায় তাবলীগ জামাতের দুই পক্ষের মধ্যে দীর্ঘদিনের বিরোধ নতুন করে সামনে এসেছে, যা দেশের ধর্মীয় পরিবেশে উত্তেজনা সৃষ্টি করেছে।
এন পি/