অসংখ্য মেধাবীর জন্মভূমি সেনহাটির আরেক সন্তান প্রেসিডেন্সি ম্যাজিস্ট্রেট কুমুদবন্ধু দাস। ১৮৮৮ সালে সেনহাটি মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে বাংলা, বিহার, উড়িষ্যা এবং আসাম থেকে সর্বোচ্চ নম্বর পেয়ে এন্ট্রান্স পরীক্ষায় প্রথম স্থান অধিকার করেছিলেন। তাঁকে রায় বাহাদুর উপাধি দিয়েছিল ব্রিটিশ সরকার।
ইতিহাস ও সাহিত্যের বিভিন্ন বই থেকে জানা যায়, সেনহাটি গ্রামে অধিকাংশ মানুষ শিক্ষিত ও রাজনীতিসচেতন ছিলেন। ব্রিটিশবিরোধী স্বদেশি আন্দোলনের অন্যতম ব্যক্তিত্ব রসিক লাল দাস, দ্বিজরাজ ভট্টাচার্য, রতিকান্ত দত্তের জন্ম এই গ্রামেই।
কলকাতা থেকে প্রকাশিত সুবোধ সেনগুপ্ত ও অঞ্জলি বসু সম্পাদিত, ‘সংসদ বাঙালি চরিতাভিধান’ থেকে জানা যায়, অগ্নিযুগের শহীদ বিপ্লবী অনুজাচরণ সেনের জন্ম সেনহাটিতে। কলকাতার অত্যাচারী পুলিশ কমিশনার চার্লস টেগার্ট সাহেবকে মারতে গিয়ে তাঁর বোমাটি তাঁর কাছেই ফেটে যায় এবং মারাত্মকভাবে আহত হয়ে ঘটনাস্থলেই মারা যান।
একই বইয়ে উল্লেখ আছে, ব্রিটিশবিরোধী স্বদেশি আন্দোলনের অন্যতম ব্যক্তিত্ব বিপ্লবী অতুল সেনের জন্ম সেনহাটিতে। দ্য স্টেটসম্যান পত্রিকার সম্পাদক আলফ্রেড ওয়াটসনকে অপসারণের সিদ্ধান্ত নেয় বিপ্লবীরা। এই গুরুদায়িত্ব পালনের ভার যুগান্তর দলের নিষ্ঠাবান কর্মী অতুল সেনের ওপর। ওয়াটসনকে এককভাবে আক্রমণ করতে গিয়ে তিনি ব্যর্থ হন। ধরা পড়ার মুহূর্তে তিনি পটাশিয়াম সায়ানাইড খেয়ে আত্মহননের পথ বেছে নেন।
সতীশ চন্দ্র মিত্রের যশোহর-খুলনার ইতিহাস গ্রন্থ থেকে জানা যায়, মহাপণ্ডিত বিনোদরাম সেন কবি রত্নাকর, মাসিক শিশু পত্রিকা সখার প্রবর্ত্তক শিশুসাহিত্যিক প্রমদাচরণ সেন, ভূতপূর্ব হাইকোর্টের উকিল বঙ্কিমচন্দ্র সেন, রায় বাহাদুর বিপিনবিহারী সেন, রিপন কলেজের ভূতপূর্ব অধ্যক্ষ ত্রিগুণাচরণ সেন, ‘সদ্বৈদ্য-কুলপঞ্জিকা’র গ্রন্থাকার রামকান্ত কবিকণ্ঠাহার, প্রসিদ্ধ লেখক কালীপ্রসন্ন দাসগুপ্ত সেনহাটির কৃতী সন্তান।