দ্বিতীয় সমস্যা লিঙ্গবৈষম্য—শুধু নারী ও পুরুষের মধ্যে নয়, বরং অন্যান্য লিঙ্গও এখানে গুরুত্বপূর্ণ। এই বৈষম্য ঘরের ভেতরে ও বাইরে উভয় ক্ষেত্রেই ঘটে। সম্পত্তি ও সন্তানের অধিকার, খেলাধুলা, কর্মসংস্থান ও চলাফেরার মতো ক্ষেত্রগুলোতে নারীর প্রতি বৈষম্য এখনো অত্যন্ত প্রবল এবং সামাজিক আইনগত বিধিব্যবস্থা প্রতিকূল। নারীর নিরাপদ জীবন, চলাফেরা, শিক্ষা ও কাজের অধিকার, সম্মান, স্বাধীন সিদ্ধান্তের ক্ষমতা বৈষম্যহীন বাংলাদেশের অন্যতম শর্ত, যা এখনো পূরণ হয়নি।
তৃতীয় সমস্যা জাতিগত ভাষাগত বৈষম্য। এখন পর্যন্ত বাংলাদেশে বাঙালি ছাড়া অন্য জাতিসত্তা ও ভাষাভাষীর অস্তিত্ব সাংবিধানিকভাবে স্বীকৃত নয়। উপরন্তু তাদের জমি, ভাষা, সংস্কৃতি—সবকিছুই দখলদারদের থাবার মুখে। এর ওপর আছে সার্বক্ষণিক নিরাপত্তাহীনতা।
চতুর্থ সমস্যা ধর্মীয় বৈষম্য। শুধু সংখ্যাগুরু থেকে ভিন্ন ধর্মের মানুষই বৈষম্যের শিকার নন, একই ধর্মের মধ্যেও সংখ্যালঘু ও দুর্বল গোষ্ঠী বৈষম্য ও নিপীড়নের শিকার হচ্ছে। ইসলামের ভেতরে ও বাইরে দুর্বল জনগোষ্ঠীর প্রতিনিয়ত নিরাপত্তাহীনতায় দিন কাটানো বৈষম্যবাদী ব্যবস্থারই ফলাফল।
মুক্তিযুদ্ধের পর দীর্ঘ এক দশকের লড়াইয়ের মধ্য দিয়ে ১৯৯০ সালের গণ-অভ্যুত্থান সামরিক স্বৈরশাসন উৎখাত করলেও স্বৈরতন্ত্র ও বৈষম্যবাদী রাজনীতির আধিপত্য থেকে বাংলাদেশকে মুক্ত করতে পারেনি।