ঢাকার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীর শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করার ঠিক দু’দিনের মাথায় রবিবার ঢাকায় নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মা খোদ বাংলাদেশের বিদেশ মন্ত্রকে এসে বৈঠক করলেন বিদেশ দপ্তরের সচিব মহম্মদ জসীম উদ্দিনের সঙ্গে। কূটনৈতিক সূত্রের দাবি, হাসিনার প্রত্যর্পণ নিয়ে চলতে থাকা টালমাটাল আবহে বৈঠকটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ।যদিও প্রণয়ের দাবি, এটি নিছক রেগুলার বৈঠক ছিল। তাঁর কথায়, ‘আমরা দুই দেশের নিরাপত্তা ও উন্নয়ন নিয়ে আলোচনা করেছি। আমাদের ইতিবাচক একটা দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক রয়েছে। আমরা একে উপরের উপর নির্ভরশীল। আমি মনে করি পারস্পরিক নির্ভরতার এই সম্পর্ক আরও এগিয়ে নেওয়া দরকার।’
প্রণয়ের কাছে ঢাকার সাংবাদিকেরা জানতে চেয়েছিলেন, দিল্লিতে অবস্থানরত হাসিনা ইস্যুতে বৈঠকে কোনও কথা হয়েছে কি-না? জবাবে ভারতের হাইকমিশনার জানান, এ বিষয়ে সুনির্দিষ্ট কোনও আলোচনা হয়নি। তবে, ঢাকার বিদেশ মন্ত্রকের এক আধিকারিক নাম গোপন রাখার শর্তে জানান, হাসিনা-ইস্যুতেই তাঁদের মধ্যে আলোচনা হয়েছে। ঢাকার বিদেশ উপদেষ্টার পরামর্শেই প্রণয় ভার্মার সঙ্গে কথা বলেছেন সচিব।’
হাসিনার নামে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে ১৮ নভেম্বরের মধ্যে হাসিনাকে গ্রেপ্তার করে ট্রাইব্যুনালে হাজির করানোর নির্দেশও দেওয়া হয়েছে। কিছু আইনি মারপ্যাঁচ থাকলেও বিদেশ উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন ইতিমধ্যেই জানিয়েছেন, হাসিনাকে ফেরাতে জোরালো পদক্ষপ করবে অন্তর্বর্তী সরকার।
অন্তর্বর্তী সরকারের মাথাব্যথা রয়েছে সংস্কার এবং ভোট নিয়েও। জোড়া ইস্যুতে ধারাবাহিক আলোচনার অংশ হিসেবে শনিবার অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে দ্বিতীয় দফার বৈঠকে বসেছিল বেশ কয়েকটি রাজনৈতিক দল ও জোট সংগঠন। সূত্রের খবর, দ্রুত সংস্কার সেরে নির্বাচন অনুষ্ঠানের প্রস্তাব দিয়েছে বেশির ভাগ দল। প্রথম দিনের সভায় বিএনপি-ও একই দাবি তুলেছিল।
ভোটের আগে দ্রুত সংস্কার চেয়েও চাপ বাড়িয়েছিল বিএনপি। বরং জামায়াতে ইসলামির অবস্থান কিছুটা হলেও ভিন্ন। তারা অবশ্য ভোটের আগেই রাষ্ট্র সংস্কারের পদক্ষেপ জোরালো করতে অন্তর্বর্তী সরকারকে অতিরিক্ত ‘সময়’ দিতেও চাইছে বলে খবর।