Homeলাইফস্টাইলপেহেলগামের শহীদ আদিল হুসাইন

পেহেলগামের শহীদ আদিল হুসাইন


বীরদের কথা আমরা অনেক পড়েছি বইপত্রে। চলচ্চিত্রেও দেখেছি তাঁদের কর্মকাণ্ড। বাস্তবেও তেমন মানুষ আছেন, যাঁরা নিজেদের জীবন তুচ্ছ করে অন্যের জীবন বাঁচাতে এগিয়ে যান। কখনো কখনো তা করতে গিয়ে মারা যান; আবার কখনো বিজয়ী হয়ে ফিরে আসেন। কিন্তু সৈয়দ আদিল হুসাইন শাহ ফিরতে পারেননি। সন্ত্রাসীদের বুলেট তাঁর শরীর ঝাঁজরা করে দিয়েছে। তিনি শহীদ হয়েছেন।

২২ এপ্রিল ভারতের বিখ্যাত পর্যটন গন্তব্য কাশ্মীরের পেহেলগামে পর্যটকেরা ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলার মুখে পড়েন। এতে মারা যান ২৬ জন পর্যটক। আহত হন অনেকে। এই মর্মান্তিক ঘটনায় পর্যটকদের বাঁচাতে এগিয়ে যান সৈয়দ আদিল হুসাইন শাহ।

সরকারি সূত্রে জানা গেছে, নিহতদের মধ্যে ছিলেন দুজন বিদেশি। একজন সংযুক্ত আরব আমিরাতের এবং অন্যজন নেপালের নাগরিক।

এ ছাড়া সেদিন ভারতের কর্ণাটক, মহারাষ্ট্র, হরিয়ানা ও উত্তর প্রদেশ থেকে আসা পর্যটকেরা ছিলেন পেহেলগামে। আদিল ছিলেন একমাত্র স্থানীয় বাসিন্দা, যিনি হামলায় প্রাণ হারান।

আদিল হুসাইন পর্যটকদের ঘোড়ায় করে পেহেলগামের পার্কিং এলাকা থেকে বাইসারান নামক পাহাড়ি চারণভূমিতে নিয়ে যেতেন। সেখানে শুধু হেঁটে বা ঘোড়ায় চড়ে পৌঁছানো যায়। ঘটনার দিনও তিনি একদল পর্যটককে সেখানে নিয়ে যান। ঠিক তখনই শুরু হয় সন্ত্রাসী হামলা। পর্যটকেরা আতঙ্কে প্রাণ বাঁচাতে ছোটাছুটি শুরু করলে আদিল এক সন্ত্রাসীর কাছ থেকে রাইফেল ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেন। এ সময় তাঁকে গুলি করে মেরে ফেলা হয়।

শহীদ আদিল হুসাইন ছিলেন তাঁর পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি। পরিবারের সদস্যদের মধ্যে রয়েছেন তাঁর স্ত্রী, ছোট সন্তান, বৃদ্ধ মা-বাবা। তাঁর মৃত্যুতে পরিবারটি এখন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে।

আদিলের বাবা সৈয়দ হায়দার শাহ বলেন, ‘আমার ছেলে প্রতিদিনের মতো সেদিনও সকালে কাজের জন্য পেহেলগাম গিয়েছিল। বেলা ৩টার দিকে হামলার খবর শুনে আমরা ওকে ফোন দিই। কিন্তু ফোন বন্ধ পাই। পরে বিকেল ৪টা ৪০ মিনিটে ফোন খোলে, কিন্তু কেউ উত্তর দেয় না। আমরা থানায় ছুটে যাই। সেখানেই জানতে পারি, আমার সন্তান গুলিবিদ্ধ হয়েছে। পরে জানতে পারি, আমার ছেলেকে হত্যা করা হয়েছে। যারা মেরেছে, তাদের কঠোর শাস্তি চাই।’

আদিলের মা-বাবা সরকারের কাছে বিচার ও সহানুভূতির আবেদন জানিয়েছেন। তাঁরা চান, আদিলের মতো সাহসী ও নিরীহ মানুষের মৃত্যু যেন এভাবে আর না হয়।

এ হামলার দায় স্বীকার করেছে দ্য রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট। এটি নিষিদ্ধ পাকিস্তানভিত্তিক সন্ত্রাসী সংগঠন লস্কর-ই-তাইয়েবার একটি সংগঠন। তাদের দাবি, পর্যটকেরা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সমর্থক হওয়ায় হামলা চালানো হয়।

সূত্র: এনডিটিভি ও সিএনবিসি





Source link

এই বিষয়ের আরো সংবাদ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -spot_img

এই বিষয়ে সর্বাধিক পঠিত