Homeবিনোদনজাতীয় বাজেটে সংস্কৃতি খাতে ন্যূনতম ১ শতাংশ বরাদ্দের প্রস্তাব

জাতীয় বাজেটে সংস্কৃতি খাতে ন্যূনতম ১ শতাংশ বরাদ্দের প্রস্তাব


সংস্কৃতি খাতে জাতীয় বাজেটে ন্যূনতম ১ শতাংশ বরাদ্দের দাবি করেছেন সংস্কৃতিকর্মীরা। তাঁরা বলছেন, বিগত এক যুগে জাতীয় বাজেটের আকার বাড়লেও উল্লেখযোগ্য হারে বাড়েনি সংস্কৃতি খাতের বরাদ্দ। গত এক দশকে বাজেটে সংস্কৃতি খাতে বরাদ্দ শূন্য দশমিক শূন্য ৯ শতাংশ থেকে শূন্য দশমিক ১৬ শতাংশের ওপরে ওঠেনি। তাই এ খাতের বাজেট বাড়ানোর দাবি উঠেছে।

গতকাল শুক্রবার বিকেলে সংস্কৃতি খাতের বাজেট পর্যালোচনা ও প্রস্তাবনা শীর্ষক সেমিনারে নিজেদের বক্তব্য তুলে ধরেন সংস্কৃতিকর্মীরা। থিয়েটার আর্টিস্টস অ্যাসোসিয়েশন অব ঢাকা (টাড) শিল্পকলা একাডেমির সেমিনার কক্ষে এ আয়োজন করে।

বাজেটে বরাদ্দ বাড়ানোর পাশাপাশি বেশ কিছু প্রস্তাবও তাঁরা পেশ করেন। এর মধ্যে রয়েছে—অসচ্ছল সংস্কৃতিসেবী ও সংগঠনের ভাতা বাড়িয়ে ১৫ হাজার টাকা করা, সংস্কৃতি পেশাজীবীদের পেনশন সুবিধা দেওয়া, সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ে শিল্প সংস্কৃতি-সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের যুক্ত করা, বিভিন্ন দেশের সঙ্গে সাংস্কৃতিক বিনিময় ও বাঙালি সংস্কৃতি কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা, আর্কাইভগুলোর ডিজিটালাইজেশন করা, লোকসংস্কৃতি উন্নয়নে আলাদা ইনস্টিটিউট তৈরি এবং সাংস্কৃতিক বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে দক্ষ জনবল নিয়োগ দেওয়া।

সেমিনারে ধারণাপত্র পাঠ করেন থিয়েটারকর্মী তৌফিকুল ইসলাম ইমন। তিনি বলেন, ‘২০২৪-২৫ অর্থবছরে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের বাজেট বরাদ্দ ছিল ৭৭৯ কোটি টাকা, যা মূল বাজেট ৭ লাখ ৯৭ হাজার কোটি টাকার ০.০৯৭৭ শতাংশ। আমরা পর্যবেক্ষণ করছি যে প্রতিবছর জাতীয় বাজেটের আকার বাড়ছে, কিন্তু সংস্কৃতির কাঠামো-পরিকাঠামো বাড়ছে না। যতটুকু বরাদ্দ দেওয়া হচ্ছে, তা অবকাঠামো নির্মাণে সীমাবদ্ধ থেকে যাচ্ছে। আর সেখানেও চলছে অবাধ লুটপাট। নির্ধারিত সময়ে কাজটি সম্পন্ন না করতে পারায় প্রাক্কলন ব্যয়ও বৃদ্ধি পাচ্ছে। ফলে জাতীয় বাজেট এবং জাতীয় বাজেটে সংস্কৃতি খাতের বরাদ্দ জন-আকাঙ্ক্ষার সঙ্গে সংগতিহীন থেকে যাচ্ছে।’

প্রধান অতিথি আনু মুহাম্মদ বলেন, ‘সরকারের দুটি কাজ করতে হবে—একটা হলো প্রতিষ্ঠান তৈরি; আরেকটা হলো সংস্কৃতিকর্মীদের টিকে থাকার জন্য অর্থনৈতিক ব্যবস্থা তৈরি করা। একজন সুরকার, ওস্তাদ, তিনি যদি টিকেই থাকতে না পারেন, সংস্কৃতিচর্চা কীভাবে হবে। আমি আপনাদের দাবির সঙ্গে একমত।’

সেমিনারের সভাপতি অভিনেতা ও নির্দেশক আজাদ আবুল কালাম বলেন, ‘সংস্কৃতি খাতে ন্যূনতম ১ শতাংশ বরাদ্দের দাবি উঠলেও তা সব সময় দাবিই থেকে যায়। এবার রাজনৈতিক লেজুড়বৃত্তিক সরকার ক্ষমতায় নেই। সুতরাং বর্তমান সরকারের কাছে বাজেটে সংস্কৃতি খাতে বরাদ্দ বাড়ানোর দাবি জানাই।’

নৃত্যশিল্পী লুবনা মরিয়ম বলেন, ‘আমাদের সংস্কৃতির ব্যবস্থাপনার বিষয়টি সঠিক করতে হবে। এ জন্য “ডেটা ফর কালচার” প্রয়োজন। আমরা অনুদানের জন্য বসে নেই, ডেটা প্রয়োজন। ডেটা ছাড়া আমাদের কথা কেউ শুনবে না।’

নাট্যকার ও নির্দেশক মামুনুর রশীদ বলেন, ‘বাহাত্তর থেকেই শাসকগোষ্ঠীর সংস্কৃতির প্রতি একটা অবজ্ঞা রয়েছে। তারা সব সময় এটাকে তুচ্ছার্থক চোখে দেখেছে।’

অভিনেতা তারিক আনাম খান বলেন, ‘শুধু টাকা বাড়লেই যে সংস্কৃতির চর্চা বেগবান হবে, তা নয়। আমি মনে করি, প্রতিষ্ঠান বানানো দরকার, যেখানে মুক্তভাবে সংস্কৃতির চর্চা করা যাবে।’

সংগীতশিল্পী সুজিত মোস্তফা বলেন, ‘বাংলাদেশের শিল্পীরা অবহেলিত, অপমানিত একটা সমাজ। আমরা আরও বড় একটা হুমকির মুখে আছি, সেটা হলো ইন্টারনেটের বিস্তৃতি। ওটিটি, ইন্টারনেটে প্রচুর নাটক হচ্ছে। থিয়েটারে কয়জন আসে, সেটা আমি জানি না। নতুন কনসেপ্ট এসেছে ভাইরাল। অশিক্ষিত ছেলেমেয়েরা টিকটক করছে। রুচির মান নামতে নামতে কোথায় নেমেছে! এখন গান কেউ শোনে না। গান শোনার জন্য ভিজ্যুয়াল তৈরি করতে হয়।’

অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন সংস্কৃতিকর্মী অমিত রঞ্জন দে, আসাদুল ইসলাম প্রমুখ।





Source link

এই বিষয়ের আরো সংবাদ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -spot_img

এই বিষয়ে সর্বাধিক পঠিত