সাহিত্য বিভাগের আয়োজনে নির্ধারিত প্রশ্নে সাক্ষাৎকার দিয়েছেন কবি কুমকুম দত্ত। জন্ম ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর চট্টগ্রাম জেলায়। বাংলা সাহিত্যে স্নাতকোত্তর। প্রকাশিত কাব্যগ্রন্থ: পরানছায়া (২০২১), চাঁদের হরফে সংসারে (২০২৩), আকাশে ঝুলে আছে মুগ্ধ পিছুটান (২০২৪)।
বাংলা ট্রিবিউন: কোন বিষয় বা অনুভূতি আপনাকে কবিতা লিখতে অনুপ্রাণিত করে?
কুমকুম দত্ত: কবিতা আমার কাছে প্রার্থনার মতো। প্রতিদিন আমার চারপাশে ঘটে যাওয়া ঘটনাপ্রবাহ অনেক সময় আমাকে অনুপ্রাণিত করে কবিতা লিখতে।
বাংলা ট্রিবিউন: আপনি কী ধরনের থিম বা বিষয় নিয়ে কবিতা লিখতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন?
কুমকুম দত্ত: যেকোনো বিষয় নিয়ে লিখতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করি। বিশেষ করে নর-নারীর প্রেমানুভূতি আমাকে নাড়া দেয়।
বাংলা ট্রিবিউন: আপনি তাৎক্ষণিক অনুপ্রেরণায় লেখেন, নাকি ধীরে ধীরে শব্দ সাজান?
কুমকুম দত্ত: দুইভাবে লিখি। অনেক সময় তাৎক্ষণিকভাবে লিখতে বাধ্য করে অনেক কিছু।
বাংলা ট্রিবিউন: আপনার কবিতার ভাষা ও শৈলী কীভাবে বেছে নেন?
কুমকুম দত্ত: আমি বাংলায় মাস্টার্স করেছি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। বাংলা ভাষা ও শৈলী সম্পর্কে অনেক কিছু শেখা হয়েছে তখন। এখনও অজানা রয়ে গেছে অনেক কিছু। আমি মনে করি, এটি হচ্ছে একটি রুটিন ওয়ার্ক। আমার কাছে সাহিত্য সাধনা হচ্ছে—নিরলস পরিশ্রমের ফসল। প্রচুর পড়াশোনা করতে হয়।
বাংলা ট্রিবিউন: কোন কোন কবির প্রভাব আপনার লেখায় আছে?
কুমকুম দত্ত: এইরকম বিশেষ কোনো কবির প্রভাব নেই। রবীন্দ্রনাথ থেকে শুরু করে জীবনানন্দ পর্যন্ত এবং বর্তমানে অনেক তরুণ কবির কবিতাও আমি মনোযোগ সহকারে পড়ি।
বাংলা ট্রিবিউন: কথাসাহিত্যের চর্চা করেন? এ চর্চা আপনার কবিতায় কতটুকু প্রভাব রাখে?
কুমকুম দত্ত: আপাতত করছি না। তবে ভবিষ্যতে ইচ্ছা আছে কিছু ছোটগল্প আর উপন্যাস লেখার। এজন্য ধীরে ধীরে মানসিকভাবে প্রস্তুত হতে হচ্ছে।
বাংলা ট্রিবিউন: আপনার প্রথম কবিতার বই সম্পর্কে কিছু বলুন। প্রথম বই প্রকাশের অনুভূতি কেমন ছিল?
কুমকুম দত্ত: আমার প্রথম কাব্যগ্রন্থের নাম “পরানছায়া”। খড়িমাটি থেকে প্রকাশিত। এ কবিতার পাণ্ডুলিপি করোনাকালীন সময়ে লেখা। শিরোনামহীন ছোট ছোট অণুকবিতা দিয়ে সাজানো বইটি। প্রথম কাব্যগ্রন্থের আত্মপ্রকাশ অনেকটা প্রথম সন্তানের মতো আনন্দময়।
বাংলা ট্রিবিউন: সমকালীন সামাজিক, রাজনৈতিক বা সাংস্কৃতিক ঘটনা কি আপনার কবিতায় প্রভাব ফেলে? যদি ফেলে, তবে কীভাবে তা প্রকাশিত হয়?
কুমকুম দত্ত: অবশ্যই প্রভাব ফেলে। প্রত্যেক কবি ও লেখকের সামাজিক দায়বদ্ধতা থাকা উচিত।
বাংলা ট্রিবিউন: পাঠকদের মন্তব্য আপনার লেখায় কোনো পরিবর্তন আনে?
কুমকুম দত্ত: পাঠকদের জন্য মন্তব্যের দরজা সব সময় অবারিত। তবে গঠনমূলক মন্তব্য করলে ভালো। এতে লেখকের উপকার হয়। কারণ প্রত্যেক মানুষের জানার সীমাবদ্ধতা আছে।
বাংলা ট্রিবিউন: ভবিষ্যতে কী ধরনের কবিতা লিখতে চান? নতুন কোনো ধারা বা শৈলীতে কাজ করার ইচ্ছা আছে কি?
কুমকুম দত্ত: অনেকে আক্ষেপ করে বলেন, বাংলা কবিতা দিন দিন তার জনপ্রিয়তা ও রূপের জৌলুস হারাচ্ছে। আমি মনে করি, কথাটি সর্বাংশে সত্য নয়। বাংলা কবিতার ভাষাগঠন ও আঙ্গিকে প্রচুর পরিবর্তন এসেছে। বর্তমান সময়ে অনেক ভালো কবিতা লেখা হচ্ছে সম্পূর্ণ ভিন্ন আঙ্গিকে ও ভিন্ন ধারায়।