নিয়মিত চেকআপে এসে ডাক্তার ফাতেমা জানতে চাইলেন, এখন কেমন সময় কাটছে? কবি বললেন— হৃদয়ের চাষবাস করে।
“আমি জীবনের শেষ স্টেজে এসে পৌঁছেছি। হয়ত পৃথিবী আর আমার ভার বহন করতে পারছে না। পাখির মতো আমিও নিঃশব্দে চলে যাব কোনো অজানা ও অচেনা জায়গায়। তোমরা ভালো থাকো, পৃথিবী ভালো থাকুক।”— কথাগুলো প্রিয় কবি হেলাল হাফিজের। কেন আবার ফিরে ফিরে এই অভিমানের স্বর! একাকিত্ব হয়ত একটা সময় ভালো লাগে, কিন্তু অসুস্থতার পর একাকিত্ব মৃত্যুর মতো স্বাদ এনে দেয় নিত্য যাপনে। মন নির্ভরতা চায়।
তোমার জন্য সকাল দুপুর,
তোমার জন্য সন্ধ্যা
তোমার জন্য সকল গোলাপ
এবং রজনিগন্ধা
‘অচল প্রেমের গদ্য’— হেলাল হাফিজ
কষ্টের ফেরিওয়ালা কবি হেলাল হাফিজ। অল্প লিখেও যিনি গল্প হয়েছেন। দ্রোহ, বিপ্লব আর ভালোবাসার কবি হেলাল হাফিজ। আজ তার ৭৭তম জন্মদিন। তিনি ১৯৪৮ সালে ৭ অক্টোবর নেত্রকোনায় জন্মগ্রহণ করেন। পিতা খোরশেদ আলী তালুকদার এবং মাতা কোকিলা বেগম। নেত্রকোণা শহরেই কেটেছে কবির শৈশব, কৈশোর এবং প্রথম যৌবন। শৈশবে মাকে হারানো কবি হেলাল হাফিজ আশ্চর্য এক বেদনাবোধ নিয়ে বেড়ে উঠেছেন। এই বেদনাবোধ থেকেই হয়ত তার মাঝে কবিতার জন্ম।
প্রথম বই ‘যে জলে আগুন জ্বলে’ কাব্যগ্রন্থের পাঠকপ্রিয়তা যেন একটি ইতিহাস। বলা যায় পাঠকপ্রিয়তার দিক থেকে বাংলা ভাষায় এর ধারেকাছেও কোনো কবিতার বই নেই। ৫৬টি কবিতা নিয়ে ১৯৮৬ সালে প্রকাশ পায় ‘যে জলে আগুন জ্বলে’। এরপর ৩৫ বছর ধরে ক্রমাগত মুদ্রণ চলছে। এই একটি বই কবি হেলাল হাফিজকে যতটা দিয়েছে, কেড়েও নিয়েছে অনেকটা। কারণ বইটির জনপ্রিয়তা দেখে ২৫ বছর তিনি নিজের আর কোনো কবিতার বই প্রকাশ করার সাহস করেনি! কেন? এই প্রশ্নের উত্তর দিয়েছিলেন কবি, “এই তুমুল জনপ্রিয়তা আমার মধ্যে এক ধরনের ভীতি তৈরি করেছে। আমি আতঙ্কিত হয়ে পড়েছি। এরপরে আমি আর কী লিখব? আমি যে নতুন করে লিখব, আমার লেখা যদি মানুষ পছন্দ না করে! আমার কবিতা যদি ‘যে জলে আগুন জ্বলে’ এর কবিতার কাছাকাছি না যেতে পারে! আমার কবিতা যদি মানুষ না পড়তে চায়। এই এক অদ্ভুত আতঙ্ক আমার মধ্যে তৈরি হল এবং দিনে দিনে নিজেকে গুটিয়ে নিলাম। বহু চেষ্টা করেছি এই ভীতি কাটিয়ে ওঠার জন্য। কোনো লেখকেরই সব লেখা সমান হয় না। তা যত বড় লেখকই হন। কবি তো বটেই, কোনো লেখাই উপন্যাস বল, ছোটগল্প বল, প্রবন্ধ বল— এক লেখকের সব লেখাই তো এক মানের হয় না। কোনো লেখা একটু বেশি ভালো হয়, একটা মধ্যম মানের হয়। কিন্তু এই ভীতি আমার কাটল না। বরং যতদিন যেতে লাগল, ততই আমার বইটির জনপ্রিয়তা চলল বেড়ে।”
আড়াই দশক লেগেছে কবির এই ভীতি কাটতে। পরে ‘যে জলে আগুন জ্বলে’ এর ৫৬টি কবিতার সঙ্গে আরো ১৫টি নতুন কবিতা নিয়ে ২০১২ সালে প্রকাশ পায় ‘কবিতা ৭১’ নামের একটি বই। আর সবশেষ ২০১৯ সালে প্রকাশিত হয়েছে ‘বেদনাকে বলেছি কেঁদো না’ কাব্যগ্রন্থটি।
হেলাল হাফিজ স্বল্পপ্রজ হলেও বিংশ শতাব্দীর শেষাংশে বিশেষ জনপ্রিয়তা অর্জন করেন। তিনি কষ্ট ফেরি করেন। যার কাছে রয়েছে হরেক রকম কষ্ট। আসলেই কী কষ্ট? নাকি তিনি ফেরি করেন এক বুক ভালোবাসা? নাকি বেদনা ও অভিমানের করেন বসবাস! আশ্চর্য রকম সব কবিতা তার। বাংলা কবিতার ইতিহাসে হেলাল হাফিজ তাই ভালোবাসা, কষ্ট এবং কবিতার আশ্চর্য এক ফেরিওয়ালা।
তার রচিত কবিতাগুলোর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে— নিষিদ্ধ সম্পাদকীয়, নিরাশ্রয় পাঁচটি আঙুল, দুঃসময়ে আমার যৌবন, অস্ত্র সমর্পণ, অগ্ন্যুৎসব, বেদনা বোনের মতো, ইচ্ছে ছিল, প্রতিমা, অন্যরকম সংসার, নিখুঁত স্ট্রাটেজি, আমার সকল আয়োজন, অনির্ণীত নারী, অশ্লীল সভ্যতা, কবিতার কসম খেলাম, পরানের পাখি, বাম হাত তোমাকে দিলাম, উপসংহার, হিরণবালা, দুঃখের আরেক নাম, প্রত্যাবর্তন।
‘বেদনাকে বলেছি কেঁদো না’ বইটা নিয়ে একটু কথা বলি। এক কবি কথায় কথায় ‘বেদনাকে বলেছি কেঁদো না…’ নিয়ে বলেছেন— নাহ্! হেলাল হাফিজ এই বইটায় নিজেকে ছাড়িয়ে যেতে পারেননি! নিজেকে ছাড়িয়ে যেতে পারে কেউ? গেছে কখনো? আমরা এমন অনেক চটকদার কথা বলি, অর্থ হয় না, কিছু হয় না। হেলাল হাফিজের শ্রেষ্ঠ কবিতা কোনটা? ‘যে জলে আগুন জ্বলে’ বইয়ের ‘নিষিদ্ধ সম্পাদকীয়’? ‘অস্ত্র সমর্পণ’? ‘বাম হাত তোমাকে দিলাম’? না ‘বেদনাকে বলেছি কেঁদো না’ বইয়ের ‘ব্রহ্মপুত্রের মেয়ে’? ‘লীলা’? ‘কৃষ্ণপক্ষ’?
শ্রেষ্ঠ কবিতা— গোলমেলে ব্যাপার, বিরক্তিকর এবং সর্বতোভাবেই বাণিজ্যিক ধারণা। কবি তার সর্বস্ব নিয়েই কবি। সব শব্দ সব অক্ষর নিয়ে।
“আগামী, তোমার হাতে
আমার কবিতা যেন
থাকে দুধে-ভাতে”
কী দারুণ উচ্চারণ! পৃথিবীর সব কবির হয়ে এক কবির। শব্দ সব প্রকাশ করতে পারে না। যতটুকু পারে, মানে আমি যতটুকু পারি, লিখলাম। এই হলেন হেলাল হাফিজ। প্রেমের কবি, প্রেমিকাদের কবি, অভিমানের কবি, সত্য-মিথ্যার কবি হেলাল হাফিজ।
মিথিক্যাল চরিত্র হেলাল হাফিজ এক মস্ত বোহেমিয়ান এ কথা জগতের সকলের জানা। মানুষের ভেতর হুলুস্থুল অনটন কাজ করে সেই বোহেমিয়ান জীবনের হাতছানিতে। সংসারী মানুষ তা পেরে ওঠে না। কিন্তু, ইচ্ছাটা আগুনের নীল শিখার মতো জ্বলতে থাকে। লোকে অনেক সময় তার কবিতার চেয়েও তার বোহেমিয়ান সত্তাকে অধিক ভালোবেসে ফেলে। তার ভেতরে নিজেদের খুঁজতে চায় অথবা খুঁজে পায়। ফলে এই যে ১০০ এর কম কবিতা লিখে মানুষের মনের কবি হয়ে ওঠা— এটাও একটা কারণ বলে ভ্রম হয়। নইলে এ মাটিতে কম শক্তিশালী কবির তো জন্ম হয়নি। তার সকল কবিতা যে খুব পোক্ত, খুব শানিত, খুব মার্গীয় তাও নয়। বরং তার কবিতার চেয়ে কবিতার লাইন অধিক জনপ্রিয়। সেসব এতো মোক্ষম আর এতো প্রবল যে আমরা তাকে পারি না এড়াতে।
কবি নিজেই এড়িয়ে গেছেন সবকিছু। কী প্রেম, কী বিরহ, কী বেদনা, কী আনন্দ! নিরবতা এবং অলসতা যে কবির সব থেকে প্রিয়, তিনি তো বঞ্চিত নন। পীড়িত নন। বরং অভিমানগ্রস্থ লিলিথের মতোই স্বেচ্ছাবঞ্চিনা বুকে নিয়ে ছেড়েছেন সুখের স্বর্গ। ফিরে তাকাননি, সহস্র ডাক উপেক্ষা করে তিনি নিজেই হয়েছেন নির্মোহ এক প্রান্তর। প্রখর একাকিত্বের রৌদ্রে সেঁধে হেঁটেছেন। আশ্চর্য নিঃসঙ্গতায় ভর করে কাটিয়ে দেন সমস্ত জীবন। সেই রৌদ্রের ভেতরেই এক অবাক ছায়া কবি নিজে। সেখানে প্রেম পবিত্রতা বিপ্লব আবার অভিমানের সুমিষ্ট শব্দ তিরতির কেঁপে চলে মগড়া নদীর জলে। সবিতা সেনের প্রিয় কচুরিপানার ঝাঁকড়া বেগুনি রঙের একগুচ্ছ ফুল হাতে ঠাঁই, দাঁড়িয়ে রয়েছেন কবি কার অপেক্ষায়? কবিতা নাকি সবিতা!
তার বেদনা যদি দ্রবীভূত না হয়ে এসময়ে এসে আরও ঘনীভূত হয়, তবে অবাক হবার কিছু নেই। তিনি যদি আমাদের দিকে তাকিয়ে বলেন, “নিউট্রন বোমা বোঝো, মানুষ বোঝো না!” তাতে করে আমাদের মাথা লজ্জায় হেট হবে কি হবে না, সে কথা অবশ্য আজ নিশ্চিত করে বলা যায় না।
এসব আশ্চর্য বোধক চিহ্নের স্রষ্টা তার সৃষ্টির মাঝে প্রেমের পাপড়ির মতো সযত্নে ফুটে থাকবেন আজন্ম পৃথিবীর নদী জল মাটিতে। মিথ হয়ে জেগে থাকবেন আলো এবং অন্ধকারের সূচিত আকাশে। আমরা তার দিকে চোখ রেখে বলতে থাকব, জেগে থাকো লিলিথের কবি হেলাল হাফিজ। তোমার বিনয়কণ্ঠে আবার অভিমান ফুটে উঠুক।
তার কিছু কবিতা ও কবিতার লাইন বহু এবং বহুবিধ চর্চায় প্রবাদতুল্য হয়ে উঠেছে। হয়ে উঠেছে তরুণ-তরুণীদের আবেগ প্রকাশের মাধ্যম, প্রেম নিবেদনের যথার্থ কলা। তিনি বেঁচে থাকুন নিদারুণ কবিতায়, নিদারুণ শিল্পে।
জন্মদিন নিয়ে লিখতে বসে ২০২২ এ ৭৫তম জন্মদিনে বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্রে একটি ছোট্ট আয়োজনে কবি কথা বলেছিলেন। তা এই লেখার সঙ্গে যোগ করার লোভ এবং প্রয়োজনবোধও তাড়া করছে।
জন্মদিনের ভাষণ
কবি হেলাল হাফিজ
৭/১০/২০২২, বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র।
আমাকে না চেনা মানে
সকালের শিশির না চেনা,
ঘাঁসফুল, রাজহাঁস, উদ্ভিদ না চেনা
গাভিন ক্ষেতের ঘ্রাণ, জলের কলস কাক
পলিমাটি চেনা মানে আমাকেই চেনা
আমাকে চেনো না
আমি তোমাদের ডাকনাম
উজাড় যমুনা।
বড্ড অকিঞ্চিৎকর মানুষ আমি। মারাত্মক এক স্বপ্ন নিয়ে জীবন শুরু করেছিলাম। সেই স্বপ্নের ‘স’ এর নিচে ‘ব’ ফলা ছিল না। প্রকৃতির সঙ্গে কে-ই বা পারে? অবুঝ তিন বছরের একজন শিশু হয়ে, আমি যেদিন মাতৃহীন হই, আমি বুঝতেই পারিনি। পৃথিবীর শ্রেষ্ঠতম ভালোবাসাটি অনুভব করতে পারিনি।
কোনো স্মৃতি নেই, কোনো কথা নেই, কোনো স্ক্রিপ্টও নেই। যত দিন গেছে আমিও মনে মনে তৈরি হয়েছি। প্রকৃতির বিরুদ্ধে এর প্রতিশোধ আমি নেবই নেব। সেই প্রতিশোধ নিতে গিয়ে জীবন যে কষ্টের সম্মুখীন হল, যে যাতনা আমাকে পোহাতে হলো, তা ভাষায় বর্ণনা করার মতো ক্ষমতা আমার নেই।
যত দিন গেছে একটু একটু করে বড় হয়েছি, বয়স বেড়েছে। মাতৃহীনতার বেদনা আমাকে আমূল গ্রাস করে ফেলেছে। সেইসব কৈশোর এবং প্রথম যৌবন। আমি ছিলাম খেলাধুলার মানুষ। কিন্তু যতই বয়স বাড়তে লাগল। মাতৃহীনতার এই বেদনা আমাকে গ্রাস করে ফেলল। খেলাধুলা দিয়ে সেই বেদনাকে প্রশমিত না করতে পেরে আমি লেখালেখির জগতের দিকে মুখ ঘোরালাম। সেই লেখালেখির জীবন নিতান্ত কম নয়। ৭৫ বছরের একটা জীবন পেয়েছি। খুব কম মানুষে এতো লম্বা আয়ু পায়। কিন্তু এই দীর্ঘজীবন আমি পুরোটা কাজে লাগাতে পারিনি। কিছু অপচয় হয়ে গেছে। কিছু নয় যথেষ্ট অপচয় করে ফেলেছি সময়ের। সেই অপচয়ের জন্য আমি লজ্জিত দুঃখিত এবং আজকের আমার এই পরম আত্মীয়দের কাছে, অকুণ্ঠচিত্তে ক্ষমাপ্রার্থী।
খুব কম লিখেছি জীবনে। কিন্তু জীবন খরচ করে লিখেছি। আমার উদ্দেশ্য ছিল, আমি লক্ষ্য করেছি। সেই সময়ে আমি ৭০ ও ৮০ দশক পর্যন্ত তিনশ কি চারশ বই বেরোতো এখন যেটা কয়েক হাজার। যেদিন মেলা শেষ হলো পরের দিন আর কোনো বইয়ের নাম গন্ধ শোনা যেত না। কোনো কবিতার কথা শোনা যেত না, কোনো, কোনো পঙক্তির কথা শোনা যেত না। এটা আমাকে খুব পীড়িত করেছিল, ভাবিত করেছিল। আমি সিদ্ধান্ত নিলাম যে আমি খুব কম লিখব। বইয়ের সংখ্যা অত্যন্ত কম হোক তাতে কিছু যায় আসে না। কিন্তু এমন একটি কাব্য আমি প্রকাশ করে যেতে চাই। যে কাব্য মেলা যেদিন শেষ হবে বইয়ের পরমায়ুও শেষ হয়ে যাবে। এমন কোনো কাব্য না লিখে এমন কাব্যগ্রন্থ লিখতে চাই, যেটি এক থেকে অনেক মেলা পর্যন্ত এর আয়ু দীর্ঘায়িত হবে। মানুষ স্মরণে রাখবে, মানুষ তার মনে ও মগজে সেই বইয়ের স্মৃতি লালন করবে। ১৭ বছর লেখালেখি করে প্রায় এক বছরে পাঁচশ বা ছয়শ কবিতা থেকে ৫৬টি কবিতা বেছে, যে জলে আগুন জ্বলে’ পাণ্ডুলিপি তৈরি করেছি।
এই বইটি অন্য এক নামে ছাপা হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু সেই নামটি আমার মনঃপূত ছিল না। আমারই দেওয়া নাম। খুব খুঁতখুঁতে লাগছিল। সে জন্যে বই ছাপা হয়ে যাওয়ার পরেও আমি আমার রয়্যালিটির টাকা থেকে প্রকাশকের ক্ষতিপূরণ দিয়ে এই নতুন নাম ’যে জলে আগুন জ্বলে’ নামে প্রকাশ করেছিলাম।
আমরা অহি নাজিলের কথা শুনি। বিশ্বাস করুন এই নামটি, মনে হয় আমার অহি নাজিল হয়েছিল। এবং যেদিন এই বাক্যটি আমার মগজে আসল সেদিনের অনুভূতি আমি ভাষায় প্রকাশ করতে পারব না।
আমার যাপিত জীবনের সিংহভাগ কবিতার জন্যে ব্যয় করেছি। এবং এই কবিতাকে ধ্রুবতারা ভেবে আমার জীবন যাপন করছি। আমি এদেশের মানুষের যে ভালোবাসা আদর সম্মান পেয়েছি সেটাও অভূতপূর্ব। অতুলনীয়। আমার এই, শুধু এই প্রজন্মের নয়— মানব সভ্যতার, প্রায় প্রতিটি মানুষ প্রত্যেকেই টাকা জমাতে চায়। আমি চেয়েছিলাম আমরি কবিতা দিয়ে অর্থ বা বিত্ত নয় আমি মানুষ জমাতে চাই।
সেই মানুষ জমাতে গিয়ে জীবনে যে ধারণার অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হয়েছি। তাও আমার জীবনের অকথিত বেদনার ইতিহাস হয়ে আছে। কবিতা আমাকে অনেক দিয়েছে। এই ঋণ আমার জীবদ্দশায় শোধ করার ক্ষমতা আমার নেই। আপনাদের ভালোবাসা আমাকে ঘাস থেকে, তৃণ থেকে উদ্ভিদে রূপান্তরিত করেছে। আমি নত হই, বিনত চিত্তে। কেবলই নত হতে শিখেছি। নত হতে চাই, নত হতে চাই।
আপনাদের সকলের আশীর্বাদ এবং শুভাশিস নিয়ে, আমার আজকের এই জন্মদিনের অনুষ্ঠানে আগত সকল ভাই-বোনকে, আমার অকৃত্রিম ভালোবাসা জানিয়ে, শ্রদ্ধা জানিয়ে, আমি আমার বক্তব্য এখানেই শেষ করছি। আমার অভিনন্দন। আমার অভিনন্দন। আমার অভিনন্দন…