Homeসাহিত্যলাবণ্য দাশের চিঠি ।। পর্ব—পাঁচ

লাবণ্য দাশের চিঠি ।। পর্ব—পাঁচ


আমি অনেক সময় ভাবি, তোমার ভিডিওতে তোমার দাদার জীবনটা অনেক ভালো হতে পারে। সুখী সে। আর সুখী হলে মানুষের মধ্যে অস্থিরতা থাকার কথা না। তুমি যতটা বিলাসী জীবন পেয়েছ তা পেতে না আবার পেতে পারো। তোমার দাদা তোমার মেধা মানুষ, ভালো রেজা কিন্তু এই যে কোনো চাকরিতে মনল্টাতে না পারা, কী করবে না পারাবী, ভারাক্রান্ত মনে একবার মধ্যবর্তী অঞ্চলে ওদিকে ছোটা তুমি অসুখী মানুষই করবে? আমাদের পৃথিবী তোর মধ্যেই জঞ্জাল পড়েছিল তার কাছে। জঞ্জাল নিয়ে কে পড়া চায়? তখন তোমার দাদার খুব ইচ্ছে হবে আবার ব্যাচেল হতে হবে। তলেদিনে মঞ্জুর জন্ম না হলে কী হবে না, হয়ত আপনারা যেতো।

নাও হতে পারে, আবার জীবনের কাছে কাছের কাছে বা বলি প্রকৃতির কাছে মানুষের কাছে বিভিন্ন রকম অসহায় বলেই প্রাণী মৌমাছি কাকার বনের হরিণ বাঘের বা হরিণ শিকারীর কাছে আবার শিকারিও না আমার পাশের ছোট ছোট অসহায় এই অবস্থার কথা বলার জন্য তার লেখা তার লেখা। বারবার নিয়ে যাও। তার গল্পের নেতা উমা স্বামীর দীর্ঘ বেকার সহ্য করতে না আত্মহত্যা করে—আমি এই অংশটির সাথে আমার জীবন হুবহু মিল পাই। আমিও তো আত্মহত্যা করতে চাই। তোমার দাদা পরিস্থিতি আমার যে আত্মহত্যা করার কথা তা বলেছে নিশ্চয়ই উমাকে সে এঁকে উমার গল্প করছে তার নিজের আর নিজের কথা। সেই মনে মনে ‘ জীবন লিখই ‘— এই নিয়ে তার নিজের মত করে। কিন্তু দেখো আমি কিন্তু উমার মতো আত্মহত্যা করি। আমি জীবন অব্যাহতি নিশ্চিন্তে অক্ষম থাকার সহিত। আমি সীমান্ত দাঁড় করার জন্য নিয়ন্ত্রক লড়াই করছি।

তুমি ব্যবহার করে মানুষ। তড়িঘড়ি আমাকে বিয়ে করার সিদ্ধান্তটা ঠিকঠাক মত ভোলার জন্য চাপই- শুধু আমি এখন আরও বলেছি। তাদেরইকি তথ্য অনুযায়ী সরে পড়ার সময়—প্রবল একাত্ব থেকে মুক্তি পেতে সে স্বাধীন পিতাপল্লীতে। কিন্তু আমার গানও জীবন নিয়ে কবি জীবনন্দের নিরীক্ষা। কবিতায় অশ্লীলতার অভিযোগ তার বিরুদ্ধে ঠিকঠাক ছিল? তাই আমার কাছে তা গ্রহণ করার বিশ্বাস যে পূতাপল্লী সম্পর্কে সেই সময়ে বুকে তার বিপরীতে গিয়েছিলেন তিনি শুধু অভিজ্ঞতা চেয়েছিলেন এবং সামগ্রিকভাবে প্রতিতা ললি এবং পূতারের মনের সম্পর্কযুক্ত অভিজ্ঞতা। যদি তার যৌনতার জন্য যেতে পারে তাহলে সেই অভ্যাস যাতো আর যতই দূরত্ব থাক আমিই যেতাম। শুধু তোমার দাদার যে রুচিবোধ বুঝতে পারে না।

আমি বলেছি আমার বিশ্বাস তোমার দাদা আমাকে পরীক্ষামূলকভাবে আচরণ করা। যখন আমার পরিচয় তুমি তাকে বিয়ে করবে না তার বাড়ির চাহিদা তার নিজের কাছেও বলবে, তাই আমাকে পছন্দ করার সিদ্ধান্ত নিতে হবে। আমাকে কোনো উপায়ই করে ফেললো বিয়ে। তানবে শরীর, ভোলাবে সব শক্তি। কিন্তু আমি সেই মানুষটি আমার কাছ থেকে পেতে হলে আমাকে দেবার দায়িত্ব আছে কি করে তা মেনে নেওয়া যায়? নারী যে শুধু দেহই এটা সম্পূর্ণভাবে ক্ষতিকর নয়, ভালোবাসা পেতে হলে তাকে ভালোবাসতে হবে সেই সাধারণ মানুষের মানতো না। কিন্তু তোমার দাদা কি সাধারণ মানুষ? আমার শাশুড়ি তার মধুর শশুর সম্পর্কে লিখেছেন, ‘চিরজীবনের বন্ধু, সুহৃদ, আনন্দের পরামর্শদাতা, জীবন গঠনের নিয়ন্তা—সুখ-দুঃখের সাথি। পরম প্রেম দিয়া সতত করিতেছেন।’ আর তোমার দাদা কী করেছেন? মাতৃভক্ত ছেলে সে। ভূখণ্ডের জন্য মন্ডা ছেড়েছে, ব্যর্থতা পরিশ্রম ভুমিছে কিন্তু তার ইতিহাসের প্রেমটা সম্ভাবনানি? আমার শশুর শাশুড়ি পারস্পরিক পছন্দে বিয়েতে। একই আদর্শ তাদের। পৃথিবীর চালিকাশক্তি ছিল সেই প্রেম। সে তা বুঝবে না তা হতে পারে না।

আমাকে বলেছে যে কলেজের ঠিকানা থাকতে হবে যখন তখনও নম্বর পড়ার টেবিলে থাকতে পারবে সেতো আমি তার লেখা গুরুত্ব দিই? আমি সবসময় চেয়েছি সে কাজ করুক, সম্মান অর্জন করুক। সে সম্মানিত হলে আমারই তো ভালো লাগার কথা সবচেয়ে বেশি তাই না? রাগারাগি যে সদস্যও তো তারেড়েমির জন্য। যদিও সত্যিকারভাবে কুড়ে ছিল সে না। টেবিলদিনেই পড়ো বাতো কিন্তু ভালো বিমুখ, প্রচার বিমুখ মানুষ কত বা মূল্যবান সমাজে? আমি কি তাকে অবমূল্যায়ন করেছি? তুমি করনি? পরিবার মানুষ করেনি? শান্তিরা বলে বাসর রাত থেকে আমার বরিশালে বসবাসের পুরোটা সময় তোমার দাদা তোমার পেছন তৈরি করেছে। একবার মন স্থির করে বরিশাল আসে আবার কলকাতাই অনেকদিন তুমি চে বসো। আপনি যখন অনুমতি দেন তখন আপনি না? আপনার কথা অবহেলার জন্য অবশ্য কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হয়নি।

তাকে অবহেলা করেছেন আমার শাশুড়িও। তিনি ভেবুল ঠাকুরপোকে যতটা গুরুত্ব দিতে তোমার মিলুদাকে তা কখনো দেননি। কিভাবে বা কী করে; দায়িত্বের কথা, কথা সব ভেতোবুল ঠাকুরপোর সাথে কথা বলতে হবে। আমাদের দেশও তাকে চালাতে বলা হয়। পল আমি তা নিয়েছি আরমে মরেছি। যে মানুষ বেকার, স্ত্রী-কন্যা সহ অন্যের অর্থ প্রতিপালিত, পরিবারে প্রায় তার স্ত্রী দূর্বস্থার কোন সীমা থাকে? আমার শাশুড়ি শিড়ি এবং কবি রূপ আমার ব্যক্তি স্বতন্ত্র বার বার হস্তক্ষেপ করতে। বলতে গেলে ক’টা কাপড় নেব এ নিয়েও তিনি নাক গলাতেন। প্রতিবাদ করতে রাগারাগি হত। এ রকমটি আমার জানিনির বেলায় কখনো শেষনি। তার বেলায় অন্য এক ব্যবসায়িক অবস্থা। শাশুড়িমাকে আমি খারাপ না আদরও তিনি করেছেন। সেই সময়টির কথা, স্থান-কাল-পাত্রভেদে দৃষ্টিভঙ্গি যাবার কথা। সেই সময়টা সামনেই ছিল যখন পার্টির ব্যক্তিস্বাতন্ত্র্য ভোটাধারী মান্য করার চেষ্টা করা হয়েছিল। ব্যবহার আমার মনগড়া কথা নয়। তোমার উপস্থিতি তাই করে।

ইউরোপীয় চিঠিপত্রে সম্মান করার মত আচরণটি বইতে আছে বার্তায়ও সুসভ্য মানুষেরা আলোচনাই বলতে কিন্তু তার অনুশীলনে প্রভাবটি ছিল না। তোমার দাদাওকল বিদেশি সাহিত্য পড়েছিল বলে ছিল কবিতায় ও সাহিত্য কবিতায় মনোমনস্ক ছিল। তার গল্প-উপনেসে সার্কেরা দলের সদস্যরা। যদিও আমাকে আমার কোনো ব্যবস্থা হয়েছে। আমি যে তাকে পছন্দ করি, বিয়েতে যে আমার আগ্রহ নেই তা সে আমাকে নিয়েছিল। কিন্তু সমাজের সাধারণ মানুষের মতো সে ধরে নিয়েছিল আমার মতো সুন্দর তার অস্থিরতা, অতৃপ্ত যৌনকামনা সব ঠিক করতে পারে। কবিতা সাহিত্যিক বর্ণনাই ছিল। কিন্তু তোমার দাদার মতো সংবেদনশীল মানুষও নারীর প্রতি প্রায় একই মনোভঙ্গি পোষণ কর!

তোমার দাদার একটা কথা আছে ‘সকলেই কবি নয়, কেউ কেউ’ তা তোমার দাদা তো জাতির কবি। তার কবিতার পদে পদে সে দর্শন লিপিবদ্ধ করেছে প্রেম আর নিরুদ্বেগতা, শূন্যতা, জীবন নিগূঢ় অসারতা সবই তো আছে তাহলে আমি কেন আমাকে ভিলেন বানাল? তুমি তার জন্য ব্যবস্থা গ্রহণ করো। অশালীনভাবে বলে— ‘ওর স্ত্রী তো ভয়ংকর, আমাদের উপযুক্ত পাত্রী ছিল না, মিলুদাকে ভাজাপোড়া ছেড়েছে’ আরও অনেক কথা বলে৷ তারপর সেই ঐতিহাসিকই ‘ঢাকার মেয়েরা জ্যান্ত খেকো এমন হয়’—একজন ভাবনি এই ভাষাটি আমাকে জানাতে পারে। মানবিকতার মাপকঠিতে লক্ষ্য রাখা যায় জানা যায়? তুমি এক কথায় যেমন দেখতে চাও অন্য কবিতা লেখা আর তোমার দাদার ভক্তরা। কাঠগড়ায় দাঁড় করানো খুব সহজ তাই সেই পথটাই সকলে বেছে নিয়েছিল।





Source link

এই বিষয়ের আরো সংবাদ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -spot_img

এই বিষয়ে সর্বাধিক পঠিত