Homeসাহিত্যবানু মুশতাকের ‘Heart Lamp’

বানু মুশতাকের ‘Heart Lamp’


কন্নড় ভাষার লেখক বানু মুশতাকের প্রথম ইংরেজি অনুবাদগ্রন্থ Heart Lamp: Selected Stories আন্তর্জাতিক বুকার পুরস্কার ২০২৫ সংক্ষিপ্ত তালিকায় স্থান পেয়েছে।

কন্নড় ভাষার লেখক বানু মুশতাক দীর্ঘদিন ধরে দক্ষিণ ভারতের মুসলিম নারীদের জীবন-যন্ত্রণাকে তার লেখার বিষয় করে তুলেছেন।

তার লেখায় নারী শুধু নিপীড়িত নয়, প্রতিবাদী ও আত্মবিশ্বাসী হয়ে জ্বলেও ওঠে। তাই বানুকে ‘বন্দায়া’ অর্থাৎ বিদ্রোহী লেখক হিসেবে চিহ্নিত করা হয়।

তার ‘Heart Lamp’ প্রথম ইংরেজি ভাষায় অনূদিত গল্পগ্রন্থ, যা দীপা ভাস্তির অনুবাদে বিশ্বে নতুনভাবে স্বীকৃতি লাভ করেছে।

এই গ্রন্থে ১২টি ছোটগল্প রয়েছে। প্রতিটি গল্পে নারীর ভেতরকার ক্রোধ, যন্ত্রণা ও আত্মমর্যাদা ফুটে উঠেছে। তার ভাষা সরল ও অলঙ্কারহীন হওয়া সত্ত্বেও জীবনের গভীরতম আবেগকে স্পর্শ করতে পেরেছে।

সামাজিক সংস্কার, ধর্মীয় গোঁড়ামি ও পুরুষতান্ত্রিক বিধিনিষেধের বেড়াজালে আটকে পড়া নারীর উপর তিনি আলো ফেলেছেন, যারা জন্মেছেন কেবল সন্তান ধারণ ও গৃহস্থালি কাজ করার জন্য। তার গল্পে এই নারীরাই ধীরে ধীরে সচেতন হয়ে ওঠেন নিজেদের বঞ্চনা সম্পর্কে।

‘Black Cobras’ গল্পে যেমন এক বঞ্চিত নারী ধীরে ধীরে গ্রামের অন্য নারীদের একত্রিত করে এক নীরব বিদ্রোহ গড়ে তোলেন। ধর্মীয় নেতার দিকে ছুড়ে দেন অভিশাপ—“কালো গোখরো তোমার চারপাশে পাক খাক”—হয়ে ওঠে প্রতীকী প্রতিবাদ।

‘Heart Lamp’ গল্পে যখন এক স্বামী দীর্ঘ বৈবাহিক জীবনের পর স্ত্রীকে ছেড়ে যৌতুকের লোভে বিয়ে করে এক তরুণীকে, তখন কাহিনির কেন্দ্রে উঠে আসে মায়ের প্রতি কন্যার অসীম ভালোবাসা।

শেষ গল্প ‘Be a Woman Once, Oh Lord!’ একটি অসাধারণ নিরীক্ষা। ঈশ্বরের প্রতি রাগ, অভিমান, এবং চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেওয়া এই গল্পে এক নারী তাকে বলে বসেন—‘তুমি তো কেবল এক অনভিজ্ঞ কুমার, যিনি বিশ্ব সৃষ্টি করতে গিয়েও বুঝতে পারোনি নারীর কষ্ট কাকে বলে।’ এই বাক্য যেন পুরো সংকলনের সারকথা।

সমালোচকদের মতে, বইটির দুর্বলতা তার ছকে বাঁধা কাঠামো। বহু গল্পে এক ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি পাঠকের মাঝে একঘেয়েমি তৈরি করতে পারে। স্বামীর নির্যাতন, নারীর নীরবতা ও পরে ক্ষীণ প্রতিবাদ—এই তিন পর্ব প্রায় প্রতিটি গল্পেই বিদ্যমান।

অনুবাদক দীপা ভাস্তি লেখকের এই আবেগ ও ভাষার সুরকে ধরে রাখার আন্তরিক চেষ্টা করেছেন, যদিও আক্ষরিক অনুবাদ থেকে তিনিও মুক্ত নন।

বানু মুশতাকের জন্ম ১৯৪৮ সালে দক্ষিণ ভারতের কন্নড়ে। পেশায় আইনজীবী ও অধিকারকর্মী। কর্ণাটক সাহিত্য একাডেমি পুরস্কার (১৯৯৯), দীপা ভাস্তির অনুবাদে হাসিনা অ্যান্ড আদার স্টোরিজ গ্রন্থের জন্য পেন ইংলিশ অনুবাদ পুরস্কার (২০২৪) পেয়েছেন ।





Source link

এই বিষয়ের আরো সংবাদ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -spot_img

এই বিষয়ে সর্বাধিক পঠিত