Homeসাহিত্যনেতানিয়াহুর সঙ্গে ড. ইউনূসের করমর্দনের ছবিটি এডিটেড

নেতানিয়াহুর সঙ্গে ড. ইউনূসের করমর্দনের ছবিটি এডিটেড


ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি সেনাবাহিনী আইডিএফের হামলা ও গণহত্যা চলছেই। গতকাল রোববার একদিনে প্রায় ৫০ জন নিহত হয়েছে। ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর চলমান ধ্বংসযজ্ঞের প্রতিবাদে এবং ফিলিস্তিনিদের প্রতি সংহতি জানিয়ে আজ সোমবার দেশব্যাপী বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ক্লাস ও পরীক্ষা বর্জন কর্মসূচি চলছে।

এরই মধ্যে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস হ্যান্ডশেক করেছেন দাবিতে একটি ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়েছে। এসব পোস্টে এমনও দাবি করা হয়েছে যে, নোবেলজয়ী ড. ইউনূস ইসরায়েলকে ১০০ কোটি টাকা অনুদান দিয়েছিলেন।

ছবিতে বাঁ পাশে ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও ডান পাশে বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুকে দাঁড়িয়ে করমর্দন করতে দেখা যায়। তাঁদের পেছনে আরেকজন ব্যক্তিকে কারও সঙ্গে কথা বলতে দেখা যায়। ছবিটি বিভিন্ন ফেসবুক অ্যাকাউন্ট, পেজ ও গ্রুপ থেকে প্রায় একই ক্যাপশনে ছড়ানো হয়েছে।

Sheikh Parves Noyon নামে একটি ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে গতকাল রোববার ৯টা ৪৬ মিনিটে ছবিটি পোস্ট করা হয়। এর ক্যাপশনে লেখা, ‘আমেরিকার প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সময় শেখ হাসিনা ফিলিস্তিনের পক্ষে এবং ইজরায়েলের বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছিলেন। কঠোর ভাষায় ইজরায়েলের বিরুদ্ধে বিবৃতি দিয়েছিলেন।

অপর দিকে ডক্টর ইউনুস ফিলিস্তিনের শিশু ও নারী-পুরুষদের হত্যার জন্য ইজরায়েলকে একশো কোটি টাকা অনুদান দিয়েছিলেন।

সেই মুসলিম বিরোধী ইউনুসকে মাথায় নিয়ে নাচতেছে এ দেশের জামাত-শিবির, এনসিপি, হেফাজতে ইসলাম ও চরমোনাইয়ের ইসলামী শাসনতন্ত্র আন্দোলনসহ বাংলাদেশের মোল্লারা।

তারা ডক্টর ইউনুসকে পীর বানিয়ে তার পায়ে চুম্বন দিচ্ছে।

ধিক্কার জানাই মৌলবাদী রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মীদের ও মোনাফেক মোল্লাদের।’ (বানান অপরিবর্তিত)

পাশাপাশি Hasan TalukdarMd Jilani নামে ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে প্রায় একই ক্যাপশনে ছবিটি পোস্ট করা হয়েছে।

ছবিটি রিভার্স ইমেজ সার্চ করা হলে ইংরেজি দৈনিক ডেইলি স্টারের ওয়েবসাইটে একটি প্রতিবেদনে একটি ছবি পাওয়া যায়। প্রতিবেদনটি ২০২৩ সালের ১৮ মে তারিখে প্রকাশিত। এই ছবির সঙ্গে ছড়িয়ে পড়া ছবিতে থাকা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের দাঁড়ানোর ভঙ্গি, পেছনে থাকা ব্যক্তির অবস্থান, দেয়ালের রং, মুহাম্মদ ইউনূসের ডান দিকে থাকা ব্যক্তির অবস্থান ও অঙ্গভঙ্গির মিল পাওয়া যায়। তবে এই ছবিতে ডান পাশে বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু নেই।

বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে ড. মুহাম্মদ ইউনূস করমর্দন করছেন দাবিতে ছড়ানো ছবির সঙ্গে ডেইলি স্টারের প্রতিবেদনের ছবির সাদৃশ্য। ছবি: স্ক্রিনশট

বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে ড. মুহাম্মদ ইউনূস করমর্দন করছেন দাবিতে ছড়ানো ছবির সঙ্গে ডেইলি স্টারের প্রতিবেদনের ছবির সাদৃশ্য। ছবি: স্ক্রিনশট

প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ২০২৩ সালের ১২ মে পর্তুগালের পোর্তো নগরীতে অনুষ্ঠিত ‘সাসটেইনেবিলিটি অ্যান্ড সোসাইটি ফোরাম’–এ দেশটির প্রেসিডেন্ট মারসোলো রেবেলো ডি সুজার সঙ্গে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের একান্ত বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এই বৈঠকে তাঁরা অর্থনৈতিক ব্যবস্থা ও দারিদ্র্য দূরীকরণ নিয়ে আলোচনা করেন। সেই মুহূর্তেরই ছবি এটি।

একই তথ্যে ছবিটি ইউনূস সেন্টারের ওয়েবসাইটে ২০২৩ সালের ১৮ মে তারিখে প্রকাশিত একটি সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতেও পাওয়া যায়।

ইউনূস সেন্টারের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তি। ছবি: স্ক্রিনশট

ইউনূস সেন্টারের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তি। ছবি: স্ক্রিনশট

ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর করমর্দনের দাবিতে সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়া ছবির মধ্যে কিছু অসঙ্গতিও লক্ষ্য করা যায়।

সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়া ছবিটি দেখলে মনে হয়, বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ও ড. মুহাম্মদ ইউনূস কথা বলার সময় চোখে চোখ রাখছেন না। এমন আলাপচারিতায় যা সাধারণত দেখা যায় না।

সুতরাং, সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়া ছবিটি মূলত এডিটেড। প্রকৃতপক্ষে, ২০২৩ সালের ১২ মে পর্তুগালে দেশটির প্রেসিডেন্ট মারসোলো রেবেলো ডি সুজার সঙ্গে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বৈঠক ও করমর্দনের ছবি এডিট করা হয়েছে। পর্তুগালের প্রেসিডেন্টের মাথার স্থলে নেতানিয়াহুর মুখমণ্ডল বসিয়ে দেওয়া হয়েছে।

এর আগে চলতি বছরের জানুয়ারিতেও ইসরায়েলকে ড. ইউনূসের ১০০ কোটি সহায়তা দেওয়ার তথ্য সোশ্যাল মিডিয়াতে ছড়ানো হয়। তবে ওই সময়ই ফ্যাক্টচেক প্রতিষ্ঠান রিউমর স্ক্যানার ইসরায়েলের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র লায়র হাইয়াতের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ করে নিশ্চিত হয়, বিষয়টি সঠিক নয়। এ ছাড়া ইউনূস সেন্টারও দাবিটি মিথ্যা বলে নিশ্চিত করে।





Source link

এই বিষয়ের আরো সংবাদ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -spot_img

এই বিষয়ে সর্বাধিক পঠিত