Homeসাহিত্যটনি মরিসনের ‘সুলা’

টনি মরিসনের ‘সুলা’


টনি মরিসনের ‘দ্য ব্লুয়েস্ট আই’ প্রথমে পড়েছিলাম। তার অন্যসব প্রিয় বইগুলোর মতো মনে আছে এটি ঠিক কবে কোথায় বসে বইটি পড়েছিলাম।

তখন আমি ভক্সহল এলাকায় একটি স্কোয়াটে থাকতাম, এবং ১৯৮১ সালের দাঙ্গায় ব্রিকস্টন পুড়ছিল।

‘দ্য ব্লুয়েস্ট আই’ পেকোলা ব্রিডলাভ নামের এক যুবতী কৃষ্ণাঙ্গ মেয়ের দুঃখের গল্প, যে স্বেতাঙ্গ হতে চেয়েছিল; কিন্তু মরিসনের ন্যারেটিভ স্বরটাই আমাকে আকর্ষণ করেছিল বেশি—শক্ত করে ধরেবেঁধে রেখেছিল, এবং গোটাজীবনের জন্য বন্ধু করে নিয়েছিল। আমি এমন কিছু কখনো দেখিনি—যেখানে গীতিময়তা ও রূঢ় বাস্তবের অদ্ভুত এক মিশ্রণ ছিল। এটা ছিল একইসঙ্গে কবিতা ও গল্প। আমি মুগ্ধ হয়েছিলাম। আমি তাড়াহুড়া করে আপার স্ট্রিটের সিস্টাররাইট বইয়ের দোকানে ফিরে গেলাম এবং ‘সুলা’ এবং ‘সং অব সলোমন’ কিনেছিলাম, দ্রুতই পড়লাম—আরও বেশি কিছু পাওয়ার আশায়।

‘সং অব সলোমন’ খুবই পছন্দ করেছিলাম, বিশেষ করে এক আশ্চর্য-অদ্ভুত চরিত্র মিল্কম্যান ডেডের জন্য, কিন্তু ‘সুলা’ আমার হৃদয়ের একটি অংশ চুরি করে নিয়েছিল।

মরিসন বলেছেন, তিনি সেই কল্পকাহিনিই লিখেছেন যা তিনি পড়তে চান।

তখন তার কাজ আবিষ্কার করা ছিল বিস্ময়কর। আমি ছিলাম ২০ বছর বয়সি এবং তখনো তৈরি হচ্ছি। সেই কৃষ্ণাঙ্গ চরিত্রগুলোকে কল্পনায় খুঁজে পাওয়া ছিল অনেকটা অলৌকিক ব্যাপার, কারণ তারা একইসঙ্গে বাস্তব এবং নিজেরা নিজেদের জন্যই তৈরি হয়েছিল। আমি কখনো এমন কাউকে দেখিনি, তবে আমার ওপর তাদের গভীর প্রভাব পড়েছিল। তারা একটি অদ্ভুত আয়না ধরে রেখেছিল।

নেল রাইট এবং সুলা পিস উভয়েই একমাত্র সন্তান, মেয়েদের সাথে মায়েদের তেমন বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক নেই এবং পিতারা অনেকটা অগম্য। ১৯২২ সালে তারা উভয়েই ১২ বছর বয়সি, ‘মাছির হাড়ের মতো পাতলা এবং সহজ-সরল’। সুলা এবং নেল একে অপরকে দীর্ঘকাল ধরে জানার মতো বন্ধুত্বপূর্ণ নৈকট্যে রয়েছে, ‘কারণ তারা বছরখানেক আগে আবিষ্কার করেছিল যে, তারা না-সাদা না-পুরুষ এবং সমস্ত স্বাধীনতা এবং সাফল্য তাদের জন্য নিষিদ্ধ ছিল, তারা অন্য কিছু হতে শুরু করেছিল।’

১৭০ পৃষ্ঠার সংক্ষিপ্ত এই উপন্যাসে, ৫০ বছরের বেশি সময় ধরে প্রবাহিত। মরিসন তাদের মেয়ে বন্ধুত্বের উত্তেজনা ও উচ্ছ্বলতা, এবং ধ্বংসের ক্ষতি ও দুঃখকে ধারণ করেছেন। নারীরা বিপরীত মেরুর মতো বিভক্ত। নেল, নিয়ম মেনে চলা; সুলা, আউটসাইডার–‘যেন কোনো শিল্পীর কাছে কোনো শিল্পকর্ম না থাকে, সে বিপজ্জনক হয়ে ওঠে।’ কিন্তু এভা, সুলার দাদী, শেষ পর্যন্ত নেলকে বুঝিয়ে দেয় যে, তাদের মধ্যে আসলে কোনো পার্থক্য ছিল না।

মরিসন আপনার মফস্বলি নৈতিকতাকে প্রশ্ন করতে বাধ্য করেন।

সুলা একটি পৌরাণিক কাহিনি, একজন নারী, একটি আয়না, একজন যোদ্ধা। মরিসন তাকে বিচার করেন না। সুলা চূড়ান্ত আউটসাইডার, সম্পূর্ণ অদ্ভুত এবং অত্যন্ত আকর্ষণীয়। যখন নেল বইয়ের শেষে উপলব্ধি করে যে, সে তার স্বামীকে মিস করেনি, বরং সুলাকেই সবসময় মিস করেছে, তখন আমি প্রতিবারই কাঁদি।

যখন নেল একটি মেয়ে হিসেবে মেডেলিয়ন থেকে তার প্রপিতামহীর অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ায় প্রথম এবং শেষবারের মতো বের হয়ে যায়, মরিসন লেখেন: ‘But she had gone on a real trip, and now she was different’.

এটাই আমার টনি মরিসন পড়ার অভিজ্ঞতা।

মূল লেখক : জ্যাকি কে
সূত্র : দ্য ইন্ডিপেন্ডেট

 





Source link

এই বিষয়ের আরো সংবাদ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -spot_img

এই বিষয়ে সর্বাধিক পঠিত