Homeসাহিত্যকবিতায় ভাষা ও শৈলী প্রাণেরই অধীন : তানজিন তামান্না

কবিতায় ভাষা ও শৈলী প্রাণেরই অধীন : তানজিন তামান্না


সাহিত্য বিভাগের আয়োজনে নির্ধারিত প্রশ্নে সাক্ষাৎকার দিয়েছেন কবি তানজিন তামান্না। তিনি ৯ নভেম্বর পাবনা জেলায় জন্মগ্রহণ করেন। প্রকাশিত গ্রন্থ: কুরিয়ার সিরিজের কবিতা। বর্তমানে অনলাইন লিটলম্যাগ ‘ওয়াকিং ডিসট্যান্স’ সম্পাদনা করছেন।

বাংলা ট্রিবিউন: কোন বিষয় বা অনুভূতি আপনাকে কবিতা লিখতে অনুপ্রাণিত করে?

তানজিন তামান্না: অনেকের লেখা পড়লে আমার ভেতর ঘোর কাজ করে, শুধু কোনো লেখা বা বই-ই নয়, কোনো সিনেমা দেখলে, গান শুনলে, কোনো দৃশ্য দেখে ঘোরে হারিয়ে যাই, কোনো ঘটনাও মনোজগতে আলোড়ন সৃষ্টি করে, এমনকি আমার পুরানো কোনো স্মৃতি বা ঘটনাও অনেকদিন পর আমার লেখায় উঠে আসতে চায়—এসবই আমার অনুপ্রেরণা। যেমন অরুন্ধতী রায়ের “দি গড অব স্মল থিংস” পড়ে আমার মনে হয়েছিল—আমি যদি কখনো উপন্যাস লিখি, তবে অরুন্ধতী রায়ের মতো ঔপন্যাসিক হব। যদিও উপন্যাস লেখা হয়ে ওঠেনি এখনও।

বাংলা ট্রিবিউন: আপনি কী ধরনের থিম বা বিষয় নিয়ে কবিতা লিখতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন?

তানজিন তামান্না: এটা কোনো পূর্ব নির্ধারিত ব্যাপার নয়। সম্ভবত আমার কবিতা লিখতে লিখতেই তার একটি পথ পেয়ে যায়। হ্যাঁ, তার ভেতরে কিছু বিষয় এবং বিষয় অনুগামী কিছু দৃশ্যের মুহূর্ত ছড়িয়ে থাকে বলে মনে হয়। তবে আমি খেয়াল করে দেখেছি, প্রকৃতির গুপ্ত জার্নির ভেতর ঢুকে যাওয়ার একটা প্রবণতা আমার ভেতরে কাজ করে।

বাংলা ট্রিবিউন: আপনি তাৎক্ষণিক অনুপ্রেরণায় লেখেন, নাকি ধীরে ধীরে শব্দ সাজান?

তানজিন তামান্না: গোটা ব্যাপারটাই আসলে দেখার উপর। তাৎক্ষণিক ব্যাপারটার পেছনেও আছে দীর্ঘ সময়ের ছাপ। আমি একটি লাইন নিয়ে যেমন নাড়াচাড়া করি, আবার ঠিক তেমনি কখনো কখনো এমনও লিখে ফেলি—যা পুনর্বার দেখার খুব একটা দরকার হয়ে পড়ে না। তবে হ্যাঁ, আমি কাটাকুটির পক্ষে।

বাংলা ট্রিবিউন: আপনার কবিতার ভাষা ও শৈলী কীভাবে বেছে নেন?

তানজিন তামান্না: নিঃসন্দেহে ভাষা ও শৈলী একটি উৎকৃষ্ট কবিতারই প্রাণ। এটা যে কীভাবে সংস্থাপন হয়, লেখার আগ মুহূর্তে আমি তা ভেবে উঠিনি। কিন্তু অদ্ভুত ব্যাপার, লেখার পরে সেই প্রাণটা আমি অনুভব করি। আমার কবিতায় ভাষা ও শৈলী ঐ প্রাণেরই অধীন।

বাংলা ট্রিবিউন: কোন কোন কবির প্রভাব আপনার লেখায় আছে?

তানজিন তামান্না: আমার লেখায় কোনো কবির প্রভাব আছে কিনা, তা আমার জানা নেই।

বাংলা ট্রিবিউন: কথাসাহিত্যের চর্চা করেন? এ চর্চা আপনার কবিতায় কতটুকু প্রভাব রাখে?

তানজিন তামান্না: কথাসাহিত্যের চর্চা নিয়মিত করা হয়ে ওঠেনি। তবে খুব ইচ্ছে আছে, কথাসাহিত্য নিয়ে কাজ করার। অলরেডি আমি কয়েকটি গদ্য লিখেছি। আমার কবিতায় কথাসাহিত্যের কোনো প্রভাব আছে বলে তো মনে হচ্ছে না। কখনো কখনো অবশ্য এটাও মনে হয়, কথাসাহিত্যের প্রভাব আছে।

বাংলা ট্রিবিউন: আপনার প্রথম কবিতার বই সম্পর্কে কিছু বলুন। প্রথম বই প্রকাশের অনুভূতি কেমন ছিল?

তানজিন তামান্না: ‘কুরিয়ার সিরিজের কবিতা’ আমার প্রথম কবিতার বই। একদিন বই বের হবে, এরকম ইচ্ছে তো ছিল-ই। ‘উড়কি’ ২০২২ সালে আমার বই করার জন্য এগিয়ে এলো। আমার পাণ্ডুলিপিও প্রস্তুত ছিল, আর বইটিও হয়ে গেল। তা না হলে বইটি প্রকাশ পেতে আরও দেরি হতো বলে মনে হয়। প্রথম প্রকাশের আনন্দ অন্যরকম!

বাংলা ট্রিবিউন: সমকালীন সামাজিক, রাজনৈতিক বা সাংস্কৃতিক ঘটনা কি আপনার কবিতায় প্রভাব ফেলে? যদি ফেলে, তবে কীভাবে তা প্রকাশিত হয়?

তানজিন তামান্না: হ্যাঁ, ফেলে। সরাসরি ঘটনা তো আসে না, রিফ্লেকশন আসে। তাৎক্ষণিকভাবেই যে সবসময় তা কবিতা হয়ে ওঠে এমন নয়। মনোজগতে সেসব ঘটনার আলোড়ন তো থাকেই। পরেও সেগুলো কবিতায় প্রকাশিত হয় বা হতে পারে।

বাংলা ট্রিবিউন: পাঠকদের মন্তব্য আপনার লেখায় কোনো পরিবর্তন আনে?

তানজিন তামান্না: পাঠকের মন্তব্য পেলে ভালো লাগে অথবা পাঠক যদি কোনো পাঠ-প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে, সেটা আমি খুব উপভোগ করি। তবে পাঠকের মন্তব্য আমার লেখায় কোনো পরিবর্তন আনে না। আমার কবিতা নিয়ে যখন কেউ আলোচনা করেন, তখন সে আলোচনা থেকে আমি কিছু শেখার চেষ্টা করি।

বাংলা ট্রিবিউন: ভবিষ্যতে কী ধরনের কবিতা লিখতে চান? নতুন কোনো ধারা বা শৈলীতে কাজ করার ইচ্ছা আছে কি?

তানজিন তামান্না: নতুন ধারায় কবিতা লেখার ইচ্ছে অবশ্যই আছে। আমার প্রথম কাব্যগ্রন্থ ‘কুরিয়ার সিরিজের কবিতাগুলো’ যখন লিখেছিলাম, তখন ঐভাবে লেখার ধারণাটা হঠাৎ করেই মাথায় এসেছিল। ভাবলাম, এভাবে লিখে দেখা যেতে পারে। এমন না যে কীরকম কবিতা লিখব বা লেখাগুলোতে কেমন শৈলী নিয়ে কাজ করব, তা আমি দীর্ঘদিন ধরে পরিকল্পনা করে রেখেছিলাম।





Source link

এই বিষয়ের আরো সংবাদ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -spot_img

এই বিষয়ে সর্বাধিক পঠিত