Homeরাজনীতিচট্টগ্রামে জুমার নামাজের পর সেনা-পুলিশের উপস্থিতিতে হিন্দু মহল্লায় হামলা

চট্টগ্রামে জুমার নামাজের পর সেনা-পুলিশের উপস্থিতিতে হিন্দু মহল্লায় হামলা

চট্টগ্রামে জুমার নমাজের পর হিন্দু মহল্লায় হামলা, ঘর-বাড়ি ভাঙচুর, সেনা-পুলিশের দমনপীড়ন – চট্টগ্রামের হিন্দু মহল্লাগুলি এমনীতে পুরুষ শূন্য। গত মঙ্গলবার সরকারি আইনজীবী হত্যার ঘটনায় স্থানীয় পুলিশ দেড় হাজারের বেশি মানুষকে আসামি করে মামলা দায়ের করেছে। বাংলাদেশের চট্টগ্রামে কোতোয়ালী থানার পাথরঘাটা এলাকায় শুক্রবার দুপুরে সেনা-পুলিশের উপস্থিতিতে হিন্দুদের ঘরবাড়ি, মন্দির ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলার চালানো হয়েছে। হামলাকারীরা তৌহিদি জনতা, জামাত-ই-ইসলামি এবং হেফাজতে ইসলাম নামে তিনটি উগ্র ইসলামিক সংগঠনের সমর্থক বলে অভিযোগ। শুক্রবার বেলা আড়াইটার শহরের আরও কিছু এলাকায় হামলা চালানো হয় বলে খবর। হিন্দুদের ঘরবাড়িতে হামলা, লুঠপাট চালায় হামলাবাজেরা। কোতোয়ালীর বান্ডেল রোড, মেথরপট্টি, সতীশবাবু লেন, হরিশচন্দ্র মুন্সেফ লেন, বংশাল রোডে হিন্দুদের ঘরবাড়ি, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা করা হয়। পাথরঘাটা মেথরপট্টিতে মন্দির ও ঘরবাড়িতে, হরিশচন্দ্র মুন্সেফ লেনে শান্তনেশ্বরী কালীমন্দির, শতীশবাবু লেইনে জগবন্ধু আশ্রমসহ কয়েকটি মন্দির ও হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের ঘরবাড়িতে হামলা চালানো হয়। আক্রান্ত হিন্দুরা পুলিশ প্রশাসনের সাহায্য চেয়ে ফোনে যোগাযোগ করলে হামলার সময় নিরাপত্তা বাহিনীর দেখা মেলেনি বলে স্থানীয়দের অভিযোগ। স্থানীয় মানুষের বক্তব্য, হামলাকারীরা নিরাপদে এলাকা ছেড়ে চলে যাওয়ার পর সেনা- পুলিশ এলেও তারা ঘটনার তদন্ত না করেই চলে যায়। হামলাকারীরা রাতে ফের হামলার হুমকি দিয়েছে। চট্টগ্রামের হিন্দু মহল্লাগুলি এমনীতে পুরুষ শূন্য। গত মঙ্গলবার চট্টগ্রাম আদালতে সরকারি আইনজীবী হত্যার ঘটনায় স্থানীয় পুলিশ দেড় হাজারের বেশি মানুষকে আসামি করে মামলা দায়ের করেছে। তারপর থেকে হিন্দু বহুল এলাকায় দফায় দফায় অভিযান চালাচ্ছে সেনা ও পুলিশের যৌথ বাহিনী। ভয়ে তরুণ, যুবকেরা অনেকেই এলাকা ছাড়া। পথেঘাটে হিন্দুদের আটকে জিজ্ঞাসাবাদের নামে আটকে রেখে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে। শুক্রবার পূর্বঘোষিত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বাংলাদেশে উগ্র সাম্প্রদায়িক ইসলামী সংগঠন ‘হেফাজতে ইসলাম’ চট্টগ্রামের বিভিন্ন এলাকার মসজিদে জুমার নমাজ শেষে মিছিল বের করে। মূলত: তৌহিদী জনতার ব্যানারে ইসলামী সাম্প্রদায়িক উগ্রপন্থী দলগুলি এই মিছিল করে। এসব মিছিল থেকে ভারতের দালালেরা হুশিয়ার সাবধান, ইত্যাদি শ্লোগান দেওয়া হয়। এদিকে শুক্রবার বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোট এর পক্ষ থেকে সন্যাসীরা সাম্প্রতিককালের হামলা, মামলাসহ সংশ্লিষ্ট ঘটনা নিয়ে গভীর উদ্বেগ উৎকন্ঠা প্রকাশ করে একটি বিবৃতি দিয়েছেন। এতে চট্টগ্রামসহ সারাদেশে হিন্দু সম্প্রদায়ের উপর হামলা, মন্দির ভাঙচুর, পথে পথে মোবাইল চেক করে গ্রেফতার এবং মিথ্যা মামলা দিয়ে সাধারণ হিন্দুদের হামলার ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে। সাধুদের আরও প্রশ্ন, মামলা হয়েছে অক্টোবর মাসে। কিন্তু গ্রেফতার কেন ২৫ নভেম্বর? ২৪ নভেম্বর ইসকন বাংলাদেশের নেতৃবৃন্দ ও চট্টগ্রাম মহানগর জামায়াতের আমীর শাহজাহান চৌধুরী একসঙ্গে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার সঙ্গে জরুরি বৈঠক করে। সেই বৈঠকের পরদিন কেন চিন্ময় কৃষ্ণকে গ্রেফতার করা হল? হিন্দু জোটের নেতাদের অভিযোগ, বিনা উসকানিতে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার হাসিব আজিজের নির্দেশে হিন্দুদের উপর নির্বিচারে লাঠিপিঠা করা হয়েছে। সাউন্ড গ্রেনেন্ড নিক্ষেপ এবং গুলি করা হয়েছে। এই ঘটনায় প্রায় ৫ শতাধিক নিরীহ হিন্দু আহত হয়েছেন। আক্রমণ করা হয়েছে সন্ন্যাসীদের। আদালত ভবনের বিপরীতে সেবক কলোনিতে ৭টি ঘর জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে। ৭০টি ঘরবাড়ি পুরোপুরি লুটপাট করা হয়েছে। নারীদের শ্লীলতাহানি করা হয়েছে। শীতলা মন্দির ও রাঁধাকৃষ্ণ মন্দির ভাঙচুর করা হয়েছে। সেখানে থাকা বিভিন্ন মূল্যবান জিনিস লুটপাট করা হয়েছে। ভয়ে আতঙ্কে সেবক কলোনির ৪৫০ পরিবার এলাকা ছাড়া। পাথরঘাটা লোকনাথ মন্দিরে হামলা চালানো হয়েছে। হাজারিগলি জয়মাতা কালী মন্দিরের বাইরে ভাংচুর করা হয়েছে। ঘটনার দিন থেকে এখনও পর্যন্ত রাস্তায় সনাতনীদেরকে দেখলে হয়রানি করা হচ্ছে। সনাতনী নারীদের অশ্লীল ব্যবহার করা হচ্ছে। লালসুতা দেখলে তাদেরকে মারধর করা হচ্ছে। লাল কাপড়ের সাধুসন্তদের বিনা কারণে গ্রেফতার করা হচ্ছে। পটিয়ার ছনহরা বাসুদেব মুকুন্দ ধামে ভাঙচুর করা হয়েছে।

এই বিষয়ের আরো সংবাদ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -spot_img

এই বিষয়ে সর্বাধিক পঠিত