Homeলাইফস্টাইল৬ বছর ভাত, ফল, সবজি না খেয়ে অদ্ভুত অভিজ্ঞতা ইসাবেলার

৬ বছর ভাত, ফল, সবজি না খেয়ে অদ্ভুত অভিজ্ঞতা ইসাবেলার


শুধুমাত্র মাংস ও দুগ্ধজাত পণ্য খেয়ে বিভিন্ন জটিল স্বাস্থ্য সমস্যা থেকে মুক্তি পেয়েছেন এক ইনফ্লুয়েন্সার। এই পদ্ধতিতে শরীরের ওজন ২১ পাউন্ড কমিয়েছেন বলেও তিনি দাবি করেছেন।

২৮ বছর বয়সী সোশ্যাল মিডিয়া ইনফ্লুয়েন্সার ইসাবেলা একজন পেশাদার মিউজিশিয়ানও। ৪ লাখ ২০ হাজার ফলোয়ার নিয়ে ইনস্টাগ্রামে ‘স্টেকঅ্যান্ডবাটারগাল’ নামে ভিডিও শেয়ার করেন। সম্প্রতি জানান, গত ছয় বছর ধরে কোনো শর্করা, ফলমূল, এমনকি সবজিও খাননি তিনি।

ইসাবেলা দাবি করেছেন, এমন বিতর্কিত খাদ্যাভ্যাসের মধ্যে থেকেও তাঁর ঋতু চক্রের মতো মেয়েলি অনেক সমস্যার সমাধান হয়ে গেছে। দূর হয়েছে বিষণ্নতাও। আর একজিমা ও সোরিয়াসিসের মতো কিছু ত্বকের সমস্যাও নেই আর!

ভাবনার বিষয় হলো—খাদ্যাভ্যাস নিয়ে বিশেষজ্ঞরা যা সুপারিশ করছেন, ইসাবেলার অভিজ্ঞতা সম্পূর্ণ তার বিপরীত। যুক্তরাজ্যের স্বাস্থ্য সংস্থাগুলো পরামর্শ দেয়—স্বাস্থ্যকর ও ভারসাম্যপূর্ণ ডায়েটে কিছু মাংস, কিছু কার্বোহাইড্রেট এবং প্রচুর পরিমাণে তাজা ফলমূল ও সবজি থাকা উচিত। শুধুমাত্র লাল মাংসের ওপর নির্ভরশীল খাদ্য হৃদ্‌রোগ এবং ক্যানসারের মতো বিভিন্ন স্বাস্থ্য সমস্যার সঙ্গে যুক্ত।

বিশেষজ্ঞদের মতকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে বেলার আরেকটি বিতর্কিত দাবি হলো, শুধুমাত্র মাংস খাওয়ার অভ্যাসের কারণেই নাকি তিনি ৫ ফুট ১০ ইঞ্চি লম্বা হয়েছেন। ভাইবোনদের মধ্যে তিনিই সবচেয়ে দীর্ঘ।

আরও দাবি করেছেন, তাঁকে এখন আর সাবান বা বডি ওয়াশ ব্যবহার করতে হয় না। কারণ তাঁর শরীর এখন এমনিতেই ‘দারুণ’ গন্ধযুক্ত এবং তিনি এখন আর পেট ফাঁপাও অনুভব করেন না।

একটি ভিডিও ক্লিপে ইসাবেলা বলেছেন, প্রতিদিন একটি বাটার স্টিক খাওয়ার ফলে তাঁর লিবিডো বেড়েছে এবং এতে তাঁর বুকের সৌন্দর্যও বেড়েছে।

এক প্রতিবেদনে ডেইলি মেইল জানিয়েছে, মাংসভিত্তিক এই ধরনের ডায়েট সম্প্রতি বেশ জনপ্রিয়তা পেয়েছে। এই পদ্ধতিতে শুধু মাংস, মাছ, ডিম এবং দুগ্ধজাত পণ্য খাওয়া হয়। টিকটকে এই বিষয়ে ভিডিও ১ বিলিয়নেরও বেশি ভিউ পেয়েছে।

এই ডায়েট প্রাচীন বিশ্বাসের ওপর ভিত্তি করে তৈরি। হাজার বছর আগে মানুষ শুধুমাত্র মাংস খেয়েই বেঁচে থাকত এবং আধুনিক যুগে এটি অনুসরণ করলে শারীরিক ও মানসিক বিভিন্ন সুবিধা পাওয়া যায়। জো রোগান এবং জর্ডান পিটারসনের মতো ব্যক্তিত্বদের সমর্থনও এই ডায়েটের প্রতি আগ্রহ বাড়িয়েছে।

তবে, এই ডায়েট জনপ্রিয় হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে এর ঝুঁকি নিয়েও গবেষণা বেড়েছে। ২০২৩ সালের একটি গবেষণায় দেখা গেছে, যারা প্রতি সপ্তাহে মাত্র দুইবার মাংস খান, তাঁদের টাইপ-২ ডায়াবেটিস হওয়ার ঝুঁকি বেড়ে যায়।

হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণায় ৪০ বছরের ডেটার ওপর ভিত্তি করে বলা হয়েছে, যারা সবচেয়ে বেশি লাল মাংস খান তাঁদের টাইপ-২ ডায়াবেটিসের ঝুঁকি ৬২ শতাংশ বেশি।

অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৪ লাখ মানুষের ওপর চালানো একটি গবেষণায় দেখা গেছে, প্রতিদিন অতিরিক্ত ৫০ গ্রাম লাল মাংস খাওয়ার ফলে হৃদ্‌রোগের ঝুঁকি ১৮ শতাংশ বাড়ে।

স্বাস্থ্য ও ডায়েট বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করেছেন, যারা শুধু মাংসভিত্তিক ডায়েটে থাকেন তাদের হৃদ্‌রোগ, স্কার্ভি এবং এমনকি ক্যানসারেরও ঝুঁকি বাড়তে পারে।

মাংসভিত্তিক ডায়েটে ফলমূল এড়িয়ে যাওয়ার বিষয়টি অনেক বিতর্কিত। কারণ এতে উচ্চ মাত্রায় ভিটামিন সি থাকে, যা টিস্যুগুলোকে রক্ষা করে এবং শরীর সুস্থ রাখে।

এ ছাড়া সবজির মতো উদ্ভিজ্জ শর্করায় যে আঁশ পাওয়া যায়, খাদ্যে তার অভাব হলে অন্ত্রের ক্যানসারেরও ঝুঁকি বাড়ে। ব্রিটেনে প্রতি বছর অন্ত্রের ক্যানসারের প্রায় ২৫ শতাংশই ফাইবারের অভাবজনিত কারণে ঘটে।

লাল মাংস এবং দুগ্ধজাত পণ্যে উচ্চ মাত্রার স্যাচুরেটেড ফ্যাট থাকে, যা ধমনিতে প্ল্যাক তৈরি করে। দীর্ঘ মেয়াদে এটি হৃদ্‌যন্ত্রের ওপর চাপ বাড়ায় এবং হার্ট অ্যাটাক ও স্ট্রোকের ঝুঁকিও বাড়ায়।





Source link

এই বিষয়ের আরো সংবাদ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -spot_img

এই বিষয়ে সর্বাধিক পঠিত