স্বাস্থ্য সচেতনতার বেলায় অনেকেই এখন স্মুদি বা জুস রাখেন নিজেদের ডায়েট চার্টে। অনেকেই মনে করেন, স্মুদি হলো সব পুষ্টিকর উপাদান একত্রিত করে ব্লেন্ড করা। তবে এখানে কিছু কৌশল অবলম্বন করা ভালো।
অনেক ক্ষেত্রে একটিমাত্র উপাদানও স্বাস্থ্যের জন্য ভালো হতে পারে। সেগুলোই আবার একসঙ্গে মিশিয়ে ব্লেন্ড করা হলে অনেক সময় শরীরের জন্য বিপজ্জনক হতে পারে। কোনো কোনো ফল এবং সবজি একসঙ্গে মিশিয়ে খাওয়া যাবে না। আবার কোন কোন ফল একে অন্যের সঙ্গে ভালোভাবে কাজ করে তা জানাও জরুরি। কিছু স্মুদি সংমিশ্রণ আমাদের শরীরের জন্য বিষাক্ত হতে পারে। এ ছাড়া ফলের সংমিশ্রণের পুষ্টিগুণ বিবেচনা করা উচিত। কারণ যখন উপাদানগুলো একসঙ্গে মেশানো হয়, তখন তা আমাদের শরীরের জন্য উপকারী নাও হতে পারে।
ফল থেকে অনেক ভিটামিন, খনিজ, ফাইটোকেমিক্যালস এবং আঁশ পাওয়া যায়। তবে এই উপাদানগুলো অতিরিক্ত পরিমাণে গ্রহণ শরীরের জন্য ভালো নাও হতে পারে। তাই জানতে হবে কোন উপকরণের সঙ্গে কোনটি মেশানো যাবে কিংবা যাবে না।
ফল
যা মেশাবেন না
স্মুদির খারাপ সংমিশ্রণ ফল ও সবজি। পুষ্টিবিদেরা সাধারণত এদের আলাদা আলাদাই রাখতে বলেন। কারণ ফলের মধ্যে সক্রিয় অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল এনজাইম থাকে। এগুলো যেকোনো উপাদানের সঙ্গে মিশলে অনেক সময় শরীরে তার নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া দেখা যায়। সব ধরনের স্বাস্থ্যকর স্মুদি রেসিপিতে ফল, দুধ, দই, সবজি, শস্য, ডাল বা মাংস একসঙ্গে মেশানো উচিত নয়। ফল অন্য খাবারের সঙ্গে মিশলে তা বিষাক্ত হয়ে ওঠে এবং ত্বকের রোগ সৃষ্টি করতে পারে। তাই যেকোনো ফল অন্য উপাদানের সঙ্গে মিশিয়ে খাওয়ার পরিবর্তে এককভাবে খাওয়ার পরামর্শ দেন পুষ্টিবিদেরা। অ্যাসট্রিনজেন্ট ফল, যেমন আপেল, নাশপাতি, বেরি, চেরি, স্ট্রবেরি অথবা টক ফল, যেমন টেঞ্জারিন, কমলা, গ্রেপফ্রুট, লেবু এবং মিষ্টি ফল, যেমন আম, কাস্টার্ড আপেল ইত্যাদি অন্য গ্রুপের সঙ্গে মেশানো উচিত নয়।
যা মেশাবেন
যেকোনো এক পদের ফল অথবা একই ধরনের ফল একসঙ্গে সেদ্ধ বা কাঁচা আকারে ব্যবহার করা যেতে পারে।
সবজি
যা মেশাবেন না
সবজি ফলের সঙ্গে মিশিয়ে ব্লেন্ড করা উচিত নয়। সবজি যদি ফলের সঙ্গে স্মুদি করা হয়, তবে তা বিষাক্ত গ্যাস তৈরি করতে পারে। এটি পুষ্টিগত সমস্যা এবং ত্বকের রোগ, যেমন সোরিয়াসিস, একজিমা, ব্রণ, ইউরটিকারিয়া ইত্যাদি সৃষ্টি করতে পারে।
যেভাবে ব্যবহার করবেন
শাকসবজি সঠিকভাবে পাচন হওয়ার জন্য সেগুলো সেদ্ধ, পেস্ট বা স্যুপ তৈরি করে খাওয়া যায়।
শাকসবজির রস পান তুলনামূলক নতুন প্রবণতা। তবে দীর্ঘমেয়াদি পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া এড়াতে এটি চিকিৎসকের পরামর্শে পান করা উচিত।
গাজর এবং সেলারি রস নিরাপদ এবং উপকারী হিসেবে বিবেচিত।
দই
যা মেশাবেন না
দইতে ব্যাকটেরিয়া থাকে। এটি আয়ুর্বেদিক মতে ভারী খাবার হিসেবে বিবেচিত। স্মুদি রেসিপিতে দই একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। তবে এটি শুধু ফলের সঙ্গে মেশানো যাবে না। কারণ ফলের সঙ্গে দুধজাত পণ্য মেশালে পাচনতন্ত্রের গতি ধীর হয়ে যেতে পারে।
যা মেশাবেন
দইয়ের সঙ্গে ফলের পরিবর্তে কিছু মসলা, লবণ অথবা গুড় বা মধুর মতো মিষ্টি উপাদান যোগ করা যেতে পারে। এটি কাঁচা অবস্থায় বা মূল খাবারের সঙ্গে খাওয়া যেতে পারে।
নিরাপদ কিছু স্মুদি মিশ্রণ
ফল ও বাদামের দুধ
ফল ও শুকনো ফল
শাকসবজি ও দই, মসলা
শাকসবজি ও শস্য, মসলা
দুধ ও শুকনো ফল, মসলা
দই ও শুকনো ফল, মসলা
সতর্ক থাকুন
স্মুদি তৈরি করতে একটি তরল বেজ ব্যবহার করা হয়, যেমন ফলের রস, পানি, নারকেল পানি ইত্যাদি। এই বেসে ফল এবং শাকসবজি মিশিয়ে স্মুদি তৈরি করা হয়। ভুল ফলমূল বা তরল উপাদানে তৈরি স্মুদি দীর্ঘস্থায়ী গ্যাস্ট্রিক সমস্যা এবং ত্বকের মারাত্মক রোগের সৃষ্টি করতে পারে। সোরিয়াসিস, একজিমা, ব্রণসহ বিভিন্ন সমস্যা তৈরি করতে পারে ভুল স্মুদি।
সূত্র: হেলথ শটস