Homeলাইফস্টাইলমেথিশাকের ঔষধি গুণ | কালবেলা

মেথিশাকের ঔষধি গুণ | কালবেলা


ভেষজ চিকিৎসায় মেথির ব্যবহার কিন্তু আজকের নয়। এর ঐতিহ্য অনেক পুরোনো। মেথির প্রাকৃতিক উপাদান, শরীর সুস্থ রাখে। মেথিশাকের গুরুত্ব অপরিসীম। এ শাক তারুণ্য ধরে রাখতে সাহায্য করে। হতাশা কাটাতে ও ডায়াবেটিসের জন্য মেথিশাক খুব উপকারী। মেথিশাক শরীরকে ভেতর থেকে শুধু সুস্থই রাখে না, পাশাপাশি বাইরে থেকে ত্বক ও চুলের সৌন্দর্য ধরে রাখতেও সমানভাবে কাজ করে। ১০০ গ্রাম মেথিশাক থেকে আপনি পেতে পারেন ৫০ ক্যালরি শক্তি। এ ছাড়া প্রতি ১০০ গ্রাম মেথিশাকে ১.৫ গ্রাম (৭%) স্যাচুরেটেড ফ্যাট, ৬৭ মিলিগ্রাম (২%) সোডিয়াম, ৭৭০ মিলিগ্রাম (২২%) পটাশিয়াম, ৫৮ গ্রাম (১৯%) কার্বোহাইড্রেট এবং ২৩ গ্রাম (৪৬%) প্রোটিন মজুত থাকে। এ ভেষজ উপাদানটি ভিটামিন সি, ভিটামিন বি৬, ক্যালশিয়াম, আয়রন, ম্যাগনেশিয়ামে ভরপুর। ঠিক কী কী উপকারিতা পাবেন মেথিশাক খেলে, আসুন জেনে নিই

ওজন কমায়

মেথিশাক মানেই হাইফাইবার। সঙ্গে আরও অনেক পুষ্টি। বেশি ফাইবার থাকায় অনেকক্ষণ পেট ভরিয়ে রাখে। ফলে এমনিতেই খাওয়ার পরিমাণ কমে যায়।

কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণ রাখে

রক্তের লিপিড লেভেলকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে এটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেয়। কেননা এটি কোলেস্টেরলের এলডিএল বা লো ডেনসিটি লাইপোপ্রোটিন ও এইচডিএল বা হাইডেনসিটি লাইপোপ্রোটিনের মধ্যে ভারসাম্যকে বজায় রাখে।

অ্যান্টি-ডায়াবেটিক এলিমেন্ট

মেথি শরীরের গ্লুকোজ মেটাবলিজমকে নিয়ন্ত্রণে রাখে। ফলে আপনি যদি ডায়াবেটিসের রোগী হন, সে ক্ষেত্রে এটি ব্যবহার করতে পারেন। কারণ ভেষজ চিকিৎসায় একে ‘অ্যান্টি-ডায়াবেটিক এলিমেন্ট’ হিসেবে গণ্য করা হয়। রক্তে চিনির মাত্রাও বাড়তে দেয় না মেথিশাক। যারা ডায়াবেটিসে ভোগেন তারা এ শাক খেলে উপকার পাবেন।

হার্টের সমস্যার ক্ষেত্রে উপকারী

মেথিশাক প্লাটিলেট বৃদ্ধির গতিকে কমায়। ফলে হৃৎপিণ্ডে রক্ত জমে যাওয়ার মতো বিপজ্জনক সম্ভাবনাকে কমিয়ে দেয়। এর ফলে হঠাৎ হার্ট অ্যাটাক হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা অনেকাংশে কমে যেতে পারে। এ ছাড়া এটি হার্ট রেট ও ব্লাডপ্রেশার নিয়ন্ত্রণে রাখতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেয়।

পেটের সমস্যায় উপকারী

লিভারের সমস্যার ক্ষেত্রেও মেথিশাকের ব্যবহার খুবই উপকারী। গ্যাসের সমস্যা ও অন্ত্রের অন্যান্য সমস্যায়ও এটি কাজের। ডায়েরিয়া নিরাময়ের ক্ষেত্রেও এটি ব্যবহার করতে পারেন।

চুলের যত্নে মেথিশাকের ব্যবহার

মেথিশাকে থাকা আয়রন ও ভিটামিন চুলের যাবতীয় সমস্যার সমাধান করে। খুশকি তো দূর করেই, অকালে চুল পেকে যাওয়ার মতো সমস্যাও কমায়। চুল ঘনও করতে পারে মেথিশাক। এর জন্য প্রয়োজন মেথি তেল।

মেথি তেল তৈরি করে ফেলা যায় বাড়িতেই। একটি পাত্রে কিছুটা নারিকেল তেল নিন। তার মধ্যে কয়েকটি মেথি পাতা ফেলে দিন। এবার সেই তেল ফুটিয়ে নিন আগুনে। মিনিট দশেক তেল ফোটাতে থাকুন।

একটি কাচের বোতলে সেই তেল ঢেলে রাখুন। সপ্তাহে দুবার করে মাথার তালু ম্যাসাজ করুন

এ তেল দিয়েই। কমবে খুশকির সমস্যা।

ত্বকের যত্নে যেভাবে ব্যবহার করবেন মেথিশাক

অল্প বয়সে মুখে বলিরেখা পড়ে যাচ্ছে? মুখে ব্রণ, কালো কালো দাগ হচ্ছে? এসব সমস্যার সমাধান করতে পারে মেথি।

একটি ব্লেন্ডারে কয়েকটি মেথি পাতা, এক চামচ হলুদ, দুধ আর পানি দিয়ে মিশিয়ে নিন। এই ফেসপ্যাক ভালোভাবে মুখে মাখুন। মিনিট বিশ রেখে ভেজা তুলো দিয়ে মুখ মুছে নিন। নিয়মিত এই ফেসপ্যাক ব্যবহার করলে ত্বকের যাবতীয় সমস্যা কমবে।

কীভাবে খাবেন মেথিশাক

​মেথিশাক ভাজা

শাক কুচি করে কেটে নিন এবং আলু ও কুমড়া কুচি করে কেটে নিন। তেলে কালো জিরা ও কাঁচামরিচ কুচি দিয়ে নেড়ে শাক দিয়ে দিন এবং ভালো করে ভাজুন লবণ হলুদ দিয়ে। এরপর ঢেকে দিন, সিদ্ধ হয়ে গেলে নামিয়ে পরিবেশন করুন। আবার শুধু পেঁয়াজ, রসুন, কাঁচামরিচ দিয়েও এই শাক ভাজি খেতে পারেন।

সবজি দিয়ে মেথিশাক

শীতকালের বাজারে নানারকম সবজি পাওয়া যায়। আর এসব সবজি দিয়েই বানিয়ে ফেলুন মেথিশাকের ঘণ্ট। গাজর, শিম, বেগুন, মটরশুঁটি, ফুলকপি, কুমড়া, আলু ভালো করে ধুয়ে কালিজিরা ফোড়ন আর লবণ হলুদ দিয়ে ভেজে নিতে হবে। কড়াইতে সবজি নেড়েচেড়ে কিছুক্ষণ ঢেকে রাখুন। এতে তাড়াতাড়ি সবজি সিদ্ধ হবে। এবার সবজি খানিক কষা হলে কাঁচামরিচ, আদা-জিরা বাটা দিয়ে কষিয়ে মেথির শাক মেশান। স্বাদমতো লবণ দিয়ে নামিয়ে নিন।

মেথির পরোটা

আটা, মেথিশাক, জোয়ান, ধনে গুঁড়া, মরিচের গুঁড়া, স্বাদমতো লবণ দিয়ে ভালো করে মেখে নিন। মাখার সময় সামান্য সাদা তেল দেবেন। এবার মিশ্রণটি ৩০ মিনিট রেখে পরোটার আকারে বেলে ভেজে ফেলুন।



Source link

এই বিষয়ের আরো সংবাদ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -spot_img

এই বিষয়ে সর্বাধিক পঠিত