Homeলাইফস্টাইলবসন্তের কথা বলছে পোশাক

বসন্তের কথা বলছে পোশাক


এখন মধ্য মাঘ। ত্বক কেটে বসে যাওয়া গাঢ় শীত তা-ই মনে করিয়ে দিচ্ছে। আর মাত্র কটা দিন। ফুলে ফুলে উষ্ণ হয়ে উঠবে প্রকৃতি। কোকিল গাইবে ধীর লয়ে। পত্রপল্লব ছড়িয়ে গা ঝাড়া দিয়ে উঠবে বৃক্ষ। রং লাগবে চারদিকে। নেশা লাগবে চোখে।

কিন্তু তার আগেই আমাদের ফ্যাশন হাউসগুলো বসন্তের রঙিন পোশাক নিয়ে হাজির হয়েছে। ধীরে ধীরে পোশাকে আসছে উজ্জ্বল রং। আর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের সূত্র ধরে সেই রং ছড়িয়ে পড়ছে আমাদের মনে। শুধু পোশাকই নয়, সঙ্গে রয়েছে ফ্যাশন অনুষঙ্গ। আছে উপহারসামগ্রী। পণ্যের বৈচিত্র্য থাকলেও দেখা যাবে, এগুলোর রঙে একটি সাধারণ মিল রয়েছে। বসন্তের রং হিসেবে বেছে নেওয়া হয় হালকা হলুদ রং। অবশ্য অন্যান্য উজ্জ্বল রংও এখন বসন্তের পোশাকে জায়গা পেয়েছে।

সুদীর্ঘ দিনের ঐতিহ্যের কারণে বসন্তের রং হিসেবে আমরা বেছে নিয়েছি বাসন্তী রং, অর্থাৎ হালকা হলুদ রং। কিন্তু কেন? সে প্রশ্নের অনেক ব্যাখ্যা পাওয়া যায়। শীতের শেষ দিক থেকে প্রকৃতি রঙিন হতে থাকে ধীরে ধীরে। সেই রঙে থাকে হলুদের প্রভাব। ফুলগুলো বেশির ভাগই হলুদ। পরিপক্ব ফল এবং ফসলের মাঠের রং থাকে হলুদ কিংবা হলুদাভ। ফলে উষ্ণ বসন্তে মানুষের মনে এ রঙের প্রভাব থাকে সবচেয়ে বেশি। মানুষের মনে প্রকৃতির এই প্রভাব থেকেই বসন্তের রং হলুদ বা বাসন্তী হয়েছে বলে ধারণা করা হয়।

এ ছাড়া পরিপক্ব ফসলের ধারণা থেকে প্রাচীন ভারতবর্ষে হলুদ রং হয়ে গিয়েছিল জ্ঞান, প্রজ্ঞা ও জ্ঞানদানের প্রতীক। উষ্ণ সময়ের রং বলেই সম্ভবত এটি আশা আর সুখের প্রতীক। শুধু ভারতবর্ষে নয়, পুরো পৃথিবীতেই সুখ, শান্তি, সাহস, উষ্ণ, সতেজ, ইতিবাচকতার প্রতীক হিসেবে হলুদ পরিচিত। যেমন প্রাচীন চীনে হলুদ রংকে ধরা হতো সুখ, গৌরব ও প্রজ্ঞার প্রতীক হিসেবে। আধুনিক চীন দেশেও সেই ধারা এখনো অব্যাহত রয়েছে। তবে জাপানে এই রং সাহসের প্রতীক।

সে যাক। আমরা বরং আসি ফ্যাশনের কথায়। আগেই উল্লেখ করেছি, আমাদের বসন্তের প্রথাগত রং হলুদ। বসন্তের পোশাকে হলুদ এবং এর বিভিন্ন শেডের রং বেশ প্রভাব ফেলেছে বরাবরের মতো। এর সঙ্গে আছে কমলা, লাল, খয়েরি। আছে পান্না সবুজ।

বসন্তের আগমনের সঙ্গে এখন ব্যাপক উদ্দীপনায় পালিত হয় ভালোবাসা দিবস। সম্ভবত এ কারণে প্রথাগত হলুদের বাইরেও বিভিন্ন উজ্জ্বল রঙের পোশাক তৈরি হয়; বিশেষ করে লাল ও নীল রঙের। আর সঙ্গে আছে এ বছরের জন্য নির্দিষ্ট হওয়া রং মোকা মউজ। এটি কোকো, চকলেট আর কফির

রং থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে তৈরি করা একটি রং। নরম, উষ্ণ ও আবেদনময় আভা আছে এই রঙের। ফলে ফ্যাশনে এটি যে এক দারুণ লুক তৈরি করবে, সে জানা কথা।

বসন্তের ফ্যাশনের আরেকটি দিক আছে। সেটি ভালোবাসা দিবস। রং মনের কথা বলে। ফলে দিবসকে কেন্দ্র বিশেষ বিশেষ রঙের পোশাক তৈরি হয়। এগুলোর মধ্যে আছে ম্যাজেন্টা, অফ হোয়াইট, মেরিগোল্ড, পার্পল, ভায়োলেট, ল্যাভেন্ডার, পিচ, ব্রিক রেড, নীল, ফরেস্ট গ্রিন ইত্যাদি।

ফাল্গুন ও ভালোবাসা দিবস বলে কথা। এই দুটি উষ্ণ ইভেন্ট উপলক্ষে পোশাকে শুধু রং থাকলেই চলবে কেন? থাকতে হবে জমকালো নকশা।

এথনিক, ট্র্যাডিশনাল, ফিউশনধর্মী নকশার পোশাক পাওয়া যাবে ফ্যাশন হাউসগুলোতে। এসব নকশার মধ্যে আছে ফুল-লতাপাতা, আলাম, জামদানি, ইক্কত, পেইসলেসহ বিভিন্ন জ্যামিতিক নকশা। রয়েছে নকশিকাঁথার মোটিফ। এ ছাড়া উপমহাদেশীয় বিভিন্ন মোটিফ তো আমাদের আছেই। এসব নকশা ফুটে উঠেছে শাড়ি, সালোয়ার-কামিজ, লং-কুর্তি, রেগুলার কুর্তি, টপস, গাউন, কাফতান, টিউনিক, টপস-স্কার্ট; ছেলেদের রেগুলার ও ফিটেড পাঞ্জাবি, শার্ট, কটি এবং শিশুদের বিভিন্ন পোশাকে। বরাবরের মতো পাওয়া যাবে পরিবারের সবার জন্য একই রঙের ও নকশার পোশাক। এ ছাড়া যুগলদের জন্য বিশেষ পোশাক।

সেজে উঠুক বসন্ত। বেড়ে উঠুক ভালোবাসা।





Source link

এই বিষয়ের আরো সংবাদ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -spot_img

এই বিষয়ে সর্বাধিক পঠিত