Homeলাইফস্টাইলপর্যটকদের জন্য বালির নতুন নির্দেশিকা

পর্যটকদের জন্য বালির নতুন নির্দেশিকা


এ বছরের বার্ষিক রিডার্স চয়েস অ্যাওয়ার্ডসে ‘ডেস্টিনএশিয়ান ম্যাগাজিন’–এ এশিয়ার সবচেয়ে সুন্দর দ্বীপ হিসেবে মনোনীত হয়েছে বালি। এই দ্বীপটি ইন্দোনেশিয়ার অন্যতম পর্যটন গন্তব্য। বালি বরাবরই এশিয়ার সবচেয়ে সুন্দর দ্বীপ হিসেবে ভোট পায়। তবে পর্যটকদের কিছু আচরণ ও অভ্যাসের কারণে ইন্দোনেশিয়া কর্তৃপক্ষ কিছু নতুন নির্দেশনা জারি করেছে। বিদেশি পর্যটকদের অশোভন আচরণ কমাতে এবং ভ্রমণের মাধ্যমে পর্যটন নিজেদের চিত্র উন্নত করতে এমন নির্দেশনা দিতে বাধ্য হয়েছে দেশটি।

বালি কর্তৃপক্ষ বিদেশি পর্যটকদের মধ্যে ‘অশোভন আচরণ’ মোকাবিলার জন্য এই নতুন নির্দেশিকা জারি করেছে। গত ২৪ মার্চ দ্বীপটির গভর্নর আই ওয়ায়ান কোস্টারের জারি করা এই নিয়মগুলোর মধ্যে রয়েছে, পবিত্র জায়গাগুলোর প্রতি সম্মান প্রদর্শন।

ভদ্রস্থ পোশাক পরা।

বিনয়ী আচরণ।

অনলাইনে পর্যটক শুল্ক পরিশোধ।

লাইসেন্সপ্রাপ্ত গাইড ও আবাসন ব্যবহারের নিয়ম।

ট্রাফিক আইন অনুসরণ।

অনুমোদিত আউটলেট থেকে মুদ্রা বিনিময় করা।

বালির পবিত্র নীরবতার দিন ‘নেপি ডে’ পালন করছেন একজন নারী। ছবি: সংগৃহীত

বালির পবিত্র নীরবতার দিন ‘নেপি ডে’ পালন করছেন একজন নারী। ছবি: সংগৃহীত

গভর্নর আই ওয়ায়ান কোস্টার বলেন, ‘আমরা আগে এমন একটি নিয়ম জারি করেছিলাম, তবে পরিস্থিতি পরিবর্তিত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আমাদেরও অভিযোজন করতে হবে। এটি নিশ্চিত করে যে বালির পর্যটন সম্মানজনক, টেকসই এবং আমাদের স্থানীয় মূল্যবোধের সঙ্গে সংগতিপূর্ণ থাকবে।’ বালিতে হ্রদ বা নদীসহ যেখানে সেখানে বর্জ্য ফেলা বা দূষণ তৈরি করা কঠোরভাবে নিষিদ্ধ। যারা এই বিধিমালা ভাঙবেন ইন্দোনেশীয় আইনের আওতায় তাঁদের বিচারের মুখোমুখি হতে হবে।

পবিত্র মন্দিরগুলোতে প্রার্থনা করতে হলে তাঁদের ঐতিহ্যবাহী বালিনিজ পোশাক পরতে হবে। ছবি: পেক্সেলস
পবিত্র মন্দিরগুলোতে প্রার্থনা করতে হলে তাঁদের ঐতিহ্যবাহী বালিনিজ পোশাক পরতে হবে। ছবি: পেক্সেলস

‘নেপি ডে’ বালির পবিত্র নীরবতার দিন। দিনটি এ বছর ২৯ মার্চ পালিত হবে। শনিবার সকাল ৬টা থেকে রোববার সকাল ৬টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টা পর্যটকসহ সবাইকে সেদিন ঘরের ভেতর থাকতে হবে। বন্ধ থাকবে বিমানবন্দর এবং ভ্রমণ কার্যক্রম।

নতুন নির্দেশিকা অনুযায়ী, অনুমতি ছাড়া পবিত্র মন্দির এলাকায় প্রবেশ, আবর্জনা ফেলা, ওয়ান টাইম প্লাস্টিক পণ্য ব্যবহার, অনুপযুক্ত আচরণ, অনুমতি ছাড়া কাজ করা এবং অবৈধ কার্যকলাপের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। নির্দেশিকা জারি করার কারণ হিসেবে গভর্নর উল্লেখ করেন, ‘আমি এই সার্কুলারটি বাস্তবায়ন করছি একটি তাৎক্ষণিক পদক্ষেপ হিসেবে যাতে বিদেশি পর্যটকেরা বালি ভ্রমণের সময় নিয়মিতভাবে নিয়ন্ত্রণাধীন থাকেন।’

বিধিমালা লঙ্ঘন করা হলে ইন্দোনেশীয় আইন অনুসারে আইনগত পরিণতির মুখোমুখি হতে হবে। ছবি: পেক্সেলস
বিধিমালা লঙ্ঘন করা হলে ইন্দোনেশীয় আইন অনুসারে আইনগত পরিণতির মুখোমুখি হতে হবে। ছবি: পেক্সেলস

নতুন নির্দেশনার মাধ্যমে বালিনিজ রীতিনীতি, ঐতিহ্য এবং সাংস্কৃতিক প্রথাগুলোর প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শন করা হবে। বিশেষ করে পূজা-অর্চনায় অংশগ্রহণের সময় এবং মন্দির, পর্যটন স্থান বা পাবলিক স্পেস পরিদর্শন করার সময় যথাযথ পোশাক পরিধান করার কথাও উল্লেখ করা হয়েছে। পর্যটকদের আহ্বান করা হয়েছে তাঁরা যেন ধর্মীয় স্থান, রেস্তোরাঁ, শপিং এলাকা বা পাবলিক রাস্তায় সম্মানজনক আচরণ করেন। গভর্নর কোস্টার আরও বলেন, ‘যারা পর্যটক শুল্ক পরিশোধ করবেন না, তাঁদের পর্যটন স্থানগুলোতে প্রবেশাধিকার দেওয়া হবে না। যারা এই বিধিমালা লঙ্ঘন করবেন, তাঁরা ইন্দোনেশীয় আইন অনুসারে আইনগত পরিণতির মুখোমুখি হবেন।’

বালি এ বছর ৬৫ লাখ পর্যটক আকৃষ্ট করার লক্ষ্যে কাজ করছে। ছবি: পেক্সেলস

বালি এ বছর ৬৫ লাখ পর্যটক আকৃষ্ট করার লক্ষ্যে কাজ করছে। ছবি: পেক্সেলস

ধর্মীয় জায়গাগুলোতে প্রবেশাধিকার সংরক্ষিত করে নতুন নির্দেশিকাগুলোতে উল্লেখ করা হয়েছে, ধর্মীয় প্রার্থনা করতে না আসলে তারা পবিত্র মন্দির এলাকাগুলোতে প্রবেশ করতে পারবেন না। আর প্রার্থনা করতে হলে তাঁদের ঐতিহ্যবাহী বালিনিজ পোশাক পরিধান করতে হবে। এ ছাড়া, এতে আরও যোগ করা হয়েছে যে ঋতু স্রাবরত নারীরা এই এলাকায় প্রবেশ করতে পারবেন না। পর্যটকদের পবিত্র গাছ বা স্মৃতিসৌধে উঠতে অনুমতি দেওয়া হবে না। এর মধ্যে ধর্মীয় জায়গাগুলোতে অনুপযুক্ত বা নগ্ন ছবি তোলা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ।

গালি দেওয়া নিষিদ্ধ করে পর্যটকদের স্থানীয় বাসিন্দা, কর্মকর্তা বা অন্যান্য পর্যটকদের প্রতি অবজ্ঞা-প্রদর্শন বা ভ্রমণে বিঘ্ন সৃষ্টি না করার আহ্বান জানানো হয়েছে। এমনকি সোশ্যাল মিডিয়ায় ঘৃণামূলক ভাষণ বা মিথ্যা তথ্য শেয়ার করাও নিষিদ্ধ করা হয়েছে বলে উল্লেখ করেছেন সেখানকার মেয়র।

বালির সিভিল সার্ভিস পুলিশ ইউনিট পর্যটকদের আচরণ নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করবে এবং নতুন সাংস্কৃতিক নির্দেশিকাগুলোর প্রতি সম্মান প্রদর্শন নিশ্চিত করবে। এর আগে বালি বেশ কয়েক বছর ধরে অতিরিক্ত পর্যটক এবং অশোভন আচরণকারী পর্যটকদের সমস্যা মোকাবিলা করছে। ২০২৩ সালে তারা পর্যটন ট্যাক্স চালুর সিদ্ধান্ত নেয়। ২০২৪ সালে বালি ৬৩ লাখ আন্তর্জাতিক পর্যটক দ্বীপটি ভ্রমণ করেছিল। তবে এ বছর বালি কর্তৃপক্ষ ৬৫ লাখ পর্যটক আকৃষ্ট করার লক্ষ্যে কাজ করছে।

সূত্র: দ্য বালি সান





Source link

এই বিষয়ের আরো সংবাদ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -spot_img

এই বিষয়ে সর্বাধিক পঠিত