Homeলাইফস্টাইলতারুণ্য ধরে রাখবে কোলাজেন, বাজারে পাওয়া পণ্য কতটা কার্যকর?

তারুণ্য ধরে রাখবে কোলাজেন, বাজারে পাওয়া পণ্য কতটা কার্যকর?


হালের সৌন্দর্যচর্চায় এখন বিশেষভাবে পরিচিতি পেয়েছে কোলাজেন শব্দটি। খাদ্যাভ্যাস হোক বা রূপচর্চা—সৌন্দর্য সচেতনেরা খোঁজেন কোলাজেন। আর কেনই বা খুঁজবেন না? এই কোলাজেনই যে ধরে রাখে তারুণ্য। ধরুন বয়স ঘড়ির কাঁটা, আর আপনি তা থমকে দিলেন, এটি কি সম্ভব? উত্তর হবে না। তবে কীভাবে ধরে রাখবেন তারুণ্য বা আগেভাগেই ত্বকে বয়সের ছাপ পড়া রোধ করবেন? এমনকি বাজারে বিক্রি হওয়া কোলাজেন-সমৃদ্ধ সৌন্দর্য পণ্য ও সাপ্লিমেন্টই বা কতটুকু কার্যকারী? এ নিয়ে আমাদের জানাচ্ছেন মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চর্ম ও যৌন রোগ বিশেষজ্ঞ জুনিয়র কনসালট্যান্ট ডা. লিনিয়া সানজীন।

প্রথমেই আমরা জেনে নেব কোলাজেন সম্পর্কে। কোলাজেন আসলে কী?

কোলাজেন শব্দটি এসেছে ল্যাটিন কোলা থেকে, এর অর্থ ‘আঠা’ বা ‘গ্লু’। কোলাজেন ত্বকের নিচে থাকা একধরনের প্রাকৃতিক আঠালো প্রোটিন। এটি শরীরের বিভিন্ন টিস্যুকে সংযুক্ত করে রাখে এবং দৃঢ়তা (টানটানভাব) দেয়। এটি ত্বক, হাড়, লিগামেন্ট, টেন্ডন ও কার্টিলেজের প্রধান কাঠামোগত প্রোটিন। আসলে শরীরের মোট প্রোটিনের প্রায় ৩০ শতাংশ কোলাজেন দিয়ে তৈরি।

বয়সের সঙ্গে কোলাজেন কমা স্বাভাবিক, তবে এর প্রকোপ কমানো সম্ভব।

বয়সের সঙ্গে শরীরে কোলাজেন উৎপাদন কমে যাওয়া স্বাভাবিক। তবে কিছু পদক্ষেপ নিলে এই প্রক্রিয়া ধীর করা সম্ভব। সঠিক খাদ্যাভ্যাস, স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন এবং কিছু বিশেষ স্কিনকেয়ার রুটিন অনুসরণ করলে কোলাজেনের ক্ষয় রোধ করা যায়।

কোলাজেন কীভাবে কাজ করে

কোলাজেন ত্বককে টানটান ও মসৃণ রাখে, জয়েন্টের কর্মক্ষমতা বাড়ায় এবং হাড় মজবুত রাখে। তবে বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে শরীরের কোলাজেন উৎপাদন ধীরে ধীরে কমে যায়। ফলে ত্বকে বলিরেখা, চুল পাতলা হওয়া এবং জয়েন্টে ব্যথা অনুভূত হতে পারে।

কোলাজেন বাড়াতে লাইফস্টাইল ও খাদ্যাভ্যাস

সঠিক খাদ্যাভ্যাস ও জীবনধারা কোলাজেন উৎপাদন বাড়াতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। যেমন—পর্যাপ্ত প্রোটিন ও অ্যান্টি-অক্সিডেন্টযুক্ত খাবার গ্রহণ, পর্যাপ্ত পানি পান, ধূমপান ও অতিরিক্ত অ্যালকোহল পান এড়িয়ে চলা, নিয়মিত ব্যায়াম, অতিরিক্ত সূর্যরশ্মি এড়িয়ে চলা, সানস্ক্রিন ব্যবহার করা। অস্বাস্থ্যকর খাবার (প্রক্রিয়াজাত খাবার, অতিরিক্ত চিনি) কোলাজেন উৎপাদন বাধাগ্রস্ত করে। পর্যাপ্ত পানি পান না করলে ত্বকের আর্দ্রতা কমে যায়, ফলে কোলাজেন ভাঙন দ্রুত ঘটে।

যেসব খাবার কোলাজেন বাড়াতে সাহায্য করে

প্রোটিন-সমৃদ্ধ খাবারের মধ্যে রয়েছে গরুর মাংস, মুরগি, ডিম, মাছ। ভিটামিন সি-সমৃদ্ধ খাবারের মধ্য রয়েছে কমলা, লেবু, আমলকী, স্ট্রবেরি। জেলাটিন সমৃদ্ধ খাবার যেমন হাড়ের স্যুপ (Bone broth)। অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট-সমৃদ্ধ গাজর, পালংশাক, টমেটো ও ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড খাবার সামুদ্রিক মাছ, বাদাম, চিয়া সিড কোলাজেন বাড়াতে সাহায্য করে।

ছবি: পেকজেলস

ছবি: পেকজেলস

মানসিক দুশ্চিন্তা ও পর্যাপ্ত ঘুম কতটা প্রয়োজন

মানসিক দুশ্চিন্তা ও ঘুমের অভাব কোলাজেন উৎপাদনে নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। চাপ বা দুশ্চিন্তা কর্টিসল হরমোন বাড়িয়ে দেয়, যা কোলাজেন ভাঙনের গতি বাড়িয়ে দেয়। পর্যাপ্ত ঘুমের অভাবেও কোলাজেন ক্ষয় হয়। ঘুমের সময় শরীরের কোষ মেরামত হয়, যা কোলাজেন উৎপাদনের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।

বাজারে বিক্রি হওয়া কোলাজেন সাপ্লিমেন্ট ও পণ্য কতটা কার্যকর

অনেক ব্র্যান্ড কোলাজেন সাপ্লিমেন্ট, সেরাম ও পানীয় বাজারজাত করে দাবি করে—এগুলো ত্বক টানটান ও প্রাণবন্ত রাখতে সাহায্য করে। গবেষণা বলছে, হাইড্রোলাইজড কোলাজেন পেপটাইড গ্রহণ করলে ত্বকের আর্দ্রতা ও স্থিতিস্থাপকতা কিছুটা উন্নত হতে পারে। তবে এসব পণ্য শরীর কতটুকু শোষণ করতে পারে, তা নির্ভর করে ব্যক্তির হজমক্ষমতা ও জীবনযাত্রার ওপর।

সতর্কতা

• সব ধরনের কোলাজেন সাপ্লিমেন্ট সমান কার্যকর নয়।

• কৃত্রিম কোলাজেন ইনজেকশন বা প্রসাধনী সব সময় নিরাপদ না-ও হতে পারে।

• কোলাজেন উৎপাদন বাড়ানোর জন্য শুধু সাপ্লিমেন্টের ওপর নির্ভর না করে প্রাকৃতিক উৎস থেকে পুষ্টি গ্রহণ করা উচিত।





Source link

এই বিষয়ের আরো সংবাদ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -spot_img

এই বিষয়ে সর্বাধিক পঠিত