২০১২ সালে মুক্তি পাওয়া সিনেমা ‘স্টুডেন্ট অব দ্য ইয়ার’। অভিনেত্রী আলিয়া ভাটকে দেখে তখন অনেকেই ভেবেছিলেন, ‘এই পুঁচকে মেয়ে তো দারুণ ইঁচড়ে পাকা!’ কিন্তু সেই আলিয়া আর এখনকার আলিয়ার ভাবভঙ্গি, চলনবলন সবই মুদ্রার এপিঠ–ওপিঠ। হ্যাঁ, বয়সে তো বড় হয়েছেনই, ক্যারিয়ারে আসনও হয়েছে পোক্ত। কিন্তু এখানেই শেষ নয়, সেলিব্রেটি মম হিসেবে বলিউডে তাঁর নামটাও জ্বলজ্বল করছে। সন্তান লালন-পালন ও ক্যারিয়ার দুটোর নিক্তিই রেখেছেন সমান। আর তাই অনেকেই গুগলে সার্চ করেন, কী করে আলিয়া সুন্দরভাবে নিজের কাজ ও সন্তানের দেখাশোনা করছেন, আবার নিজেকে সুন্দরও রেখেছেন তা জানতে। কর্মজীবী নতুন মায়েদের জীবন সহজ করার জন্য আলিয়া ভাট দিয়েছেন কয়েকটি পরামর্শ।
কর্মজীবী মায়েদের জীবনে আনন্দ ও চ্যালেঞ্জ দুটোই পাশাপাশি চলে এবং চলতেই থাকে। নতুন মা হওয়ার পর অধিকাংশই যে দুর্যোগের মধ্য় দিয়ে যান, তা হলো ঘুমহীন রাত পার করা। রাতে ঠিকঠাক ঘুম না হওয়া মানেই দিনে বাড়তি স্ট্রেস যোগ হবে। তাই নতুন মায়েদের খানিকটা জোর দিয়ে আলিয়া বলতে চান, সুযোগ পেলেই ঘুমিয়ে নিতে হবে। সন্তান যখন ঘুমোবে, তখন পুরো পৃথিবী একপাশে রেখে নিজেকেও বিশ্রাম দিতে হবে। এর বাইরে সারা দিনে যতবার ফুরসত পাওয়া যায়, ততবারই চোখ বুজতে পারলে ভালো।

মাতৃত্বকালীন ছুটি কাটিয়ে কর্মজীবী মায়েরা যখন কাজে ফেরেন, তখন শুরু হয় আরেক যুদ্ধ। সন্তান ও ঘর সামলে কর্মক্ষেত্রে যাওয়া, কর্মক্ষেত্রের কাজ সেরে ঘরে ফিরে আবার ব্যস্ত হয়ে পড়া। এই চক্রে পড়ে জীবন থেকে অনেক সময়ই হাসি নামক ব্যাপারটা উবে যায়। আলিয়ার ভাষ্য, দিনের কোন সময়টায় কোন জিনিসটাকে অগ্রাধিকার দিতে হবে, তা নির্ধারণ করতে জানতে হবে। সময় ব্যবস্থাপনায় দক্ষ হতে পারলে সামলে নেওয়াটাও সহজ। তা ছাড়া সন্তান লালন-পালনের কাজে পরিবার ও অভিজ্ঞদের কাছেও সাহায্য চাইতে লজ্জা পাওয়া চলবে না।
গর্ভকাল ও প্রসব-পরবর্তীকালে নারীর শরীরে ব্যাপক পরিবর্তন ঘটে। হরমোনের ভারসাম্যহীনতার কারণে অনেক সময় পোস্টপার্টাম ডিপ্রেশন খুব খারাপ অবস্থায় চলে যায়। এ সময়টাকে সামাল দিতে আলিয়ার পরামর্শ, শারীরিক পরিবর্তনকে স্বাভাবিকভাবে নেওয়া। শরীর সুস্থ থাকছে কি না, সেটাতেই জোর দিতে হবে। এ ছাড়া সময় বের করতে হবে নিজের পছন্দের কাজ করার এবং নিজের যত্ন নেওয়ার।
সোশ্যাল মিডিয়ায় অনেকেই এখন গর্ভকাল ও প্রসব-পরবর্তী নানা রকম কর্মকাণ্ডের ছবি, রিলস ইত্যাদি পোস্ট করেন। এসবের সঙ্গে নিজের জীবনের অমিল পেলে হতাশ হওয়া উচিত নয় বলে জানান তিনি। তিনি বলেন, ‘প্রত্যেক মায়ের জীবনযাত্রা ও চ্যালেঞ্জ ভিন্ন। ফলে অন্য কারও সঙ্গে নিজের জীবনের তুলনা করা বোকামি। উপরন্তু, সোশ্যাল মিডিয়ায় যদি অল্পসংখ্যক ভালো বন্ধু খুঁজে পাওয়া যায় এবং তাদের সঙ্গে মন খুলে কথা বলা যায়, সেটাই বরং আশীর্বাদ।
প্যারেন্টিং জার্নিকে অনেকটাই সহজ করে তোলে জীবনসঙ্গীর সঙ্গে সহজ সম্পর্ক। শিশুর যত্নআত্তির ব্যাপারটাও তার সঙ্গে ভাগাভাগি করে নেওয়া চাই। এ ছাড়া দিনে কিছুক্ষণের জন্য হলেও নিজেরা কথা বলতে হবে; তা হতে পারে খাওয়ার সময় বা ঘুমাতে যাওয়ার সময়। জানান আলিয়া।
সবশেষে তিনি পুরোনো একটি কথাই বারবার বলেন, ‘নিজের যত্ন নিতে হবে।’ ‘নিজের যত্ন নেওয়া মানে কিন্তু স্বার্থপরতা নয়।’ কেননা, একজন হাসিখুশি মায়ের ঘরেই বেড়ে ওঠে একটি হাসিখুশি প্রাণোচ্ছল শিশু!
সূত্র: ইয়োর স্টোরি