Homeরাজনীতিভোটারের বয়সের বিষয় ইসির ওপর ছেড়ে দিন: ড. ইউনূসকে মির্জা ফখরুল

ভোটারের বয়সের বিষয় ইসির ওপর ছেড়ে দিন: ড. ইউনূসকে মির্জা ফখরুল


ভোটার হওয়ার ন্যূনতম বয়স কমানো নিয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বক্তব্যে জনমনে বিভ্রান্তি সৃষ্টি হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব। তিনি বলেন, ‘কেন জানি না মানুষের মধ্যে একটা ধারণা হচ্ছে, এই সরকার ইচ্ছাকৃতভাবে নির্বাচন প্রক্রিয়াকে বিলম্ব করছে। মানুষের মধ্যে এই আশঙ্কা সৃষ্টি হচ্ছে।’

আজ শনিবার রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এ কথা বলেন। জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি (জাগপা) এই সভার আয়োজন করে।

প্রধান উপদেষ্টার উদ্দেশে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আপনি প্রধান নির্বাহী, আপনি প্রথমেই বলে দিচ্ছেন যে- ১৭ বছর হলে ভালো। আপনি যখন বলছেন দ্যাট বিকামস বাইন্ডিং অন দ্যা ইলেকশন কমিশন, যেটা ইলেকশন কমিশন ঠিক করবে। এই বিষয়টা ইলেকশন কমিশনকে ছেড়ে দিন। যদি এক বছর কমাতে চান, তাহলে সেটা ইলেকশন কমিশন প্রস্তাব করুক, যারা নতুন হয়েছে। কিন্তু উনি (প্রধান উপদেষ্টা) যখন প্রথমেই বলে দেন, তখন ইট ওয়াজ মাইন্ড ইট, এটা একটা চাপ তৈরি হয় ইলেকশন কমিশনের জন্য।’

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘ড. মুহাম্মদ ইউনূস নতুন একটি প্রস্তাব দিয়েছেন। সেই প্রস্তাব হচ্ছে- ১৭ বছর ভোটার হওয়ার জন্য ন্যূনতম বয়সসীমা। এখন তাহলে কী করতে হবে? নতুন করে আবার ভোটার তালিকা তৈরি করতে হবে। আমি মনে করি যে- এই বিষয়টাকে এভাবে না বলে, এই বিষয়ে স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে কথা বলে তারপরে এই বিষয়টা আনতে পারলে ভালো হতো, কোনো বিতর্কের সৃষ্টি হতো না। এখন তো আরও বেশি করে মানুষ আশাহত হয়ে যাবে যে, এটা করতে গিয়ে আরও সময় যাবে।’

এ ছাড়া নির্বাচন অনুষ্ঠানে সংস্কার বাধা হতে পারে না বলেও মনে করেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, ‘সংস্কার একটা চলমান প্রক্রিয়া। প্রতি মুহূর্তেই সংস্কার হচ্ছে। সেই সংস্কারের ধারা চলতে থাকবে। সে জন্য তো নির্বাচন বন্ধ থাকতে পারে না। দিনের পর দিন আমরা একটা অনির্বাচিত সরকারের হাতে দেশ চালাতে দিতে পারি না।’

নির্বাচিত সরকারে গুরুত্বারোপ করে দ্রুত নির্বাচনের দাবি জানিয়ে ফখরুল বলেন, ‘নির্বাচিত সরকার এলে অস্থিরতা, অস্থিতিশীলতা কমে যাবে। কারণ নির্বাচিত সরকারের শক্তিটা অন্য। কারণ ওই সরকারের পেছনে জনগণ থাকে।’

অন্তর্বর্তী সরকারের সংস্কার কাজে বিএনপির কোনো আপত্তি নেই জানিয়ে তিনি বলেন, ‘যে বিষয়টা নিয়ে বাংলাদেশের সমস্যা তৈরি হয়েছে যে- আজকে বাংলাদেশে অস্থিরতা, অস্থিতিশীলতা এগুলো সমস্যা। এই সমস্যাগুলো অনেক কমে যাবে যদি একটা নির্বাচিত সরকার থাকে। দীর্ঘকাল অনির্বাচিত সরকারের হাতে ক্ষমকায় থাকা উচিত নয়।’

‘মানুষ এখনো স্বস্তিতে নেই’, এমন মন্তব্য করে ফখরুল বলেন, ‘সংস্কার তো সবাই চায়। কিন্তু স্বস্তিও চায়, বাজারে স্বস্তি চায়, রাস্তায় বেরিয়ে খুন হয়ে যাবে না সেটা চায়, গাড়ি অ্যাক্সিডেন্ট করে ৬-৭ জন মারা যাবে না, সেটা চায়। আমি আশা করব, সরকার আরও বেশি গভর্নেন্সের দিকে নজর দেবেন। ব্যাংকের সব টাকা লুট করে নিয়ে চলে গেল তাদের বিরুদ্ধে তো একটা মামলাও শুরু হলো না, অন্য মামলা হচ্ছে। যেটা আগের মতো সেই পুরোনো অজ্ঞাতনামা ১০০০ থেকে ১৫০০ আসামি।’

নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের দাম কমাতে সরকার কাজ করছে না বলে অভিযোগ করে তিনি বলেন, ‘আমরা তো দেখলাম না, তাঁদের কজন উপদেষ্টা আছেন বা যারা দায়িত্বপ্রাপ্ত আছেন, তারা বাজারে গিয়ে একটু জিজ্ঞাসা করছেন, মানুষকে বোঝার চেষ্টা করছেন যে, সমস্যাটা কোথায়?’

রাজনৈতিক দলগুলোকে কটাক্ষ করা হচ্ছে অভিযোগ করে অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্দেশে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘রাজনৈতিক দলগুলো আপনাদের প্রতিপক্ষ নয়। রাজনৈতিক দলগুলো আপনাদের সহযোগিতা করছে। আপনারাই রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে কথাবার্তা বলছেন না, সহযোগিতা ওইভাবে করছেন না।’

নতুন দল গঠন প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আরও যদি দুই-তিনটা দল গঠিত হয়, আমাদের কোনো আপত্তি নাই। একশটা হলে বা দুইশটা হলে তাতেও আপত্তি নাই। প্রশ্ন হচ্ছে, জাতির জন্য কতটুকু কাজে লাগবে, সেটাই সবাই চিন্তা করবে।’

জাগপার সভাপতি খন্দকার লুৎফর রহমানের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসেন রিয়াজের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় জাতীয় পার্টির (কাজী জাফর) চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হায়দার, ন্যাশনাল পিপলস পার্টির (এনপিপি) চেয়ারম্যান ফরিদুজ্জামান ফরহাদ, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আমান উল্লাহ আমান, এনডিপির চেয়ারম্যান আবু তাহের, সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ নজরুল ইসলামসহ আরও অনেকে বক্তব্য রাখেন।





Source link

এই বিষয়ের আরো সংবাদ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -spot_img

এই বিষয়ে সর্বাধিক পঠিত