সীমান্ত এলাকায় আর কোনও হত্যাকাণ্ড হতে দেওয়া হবে না জানিয়ে জাতীয় নাগরিক কমিটির সদস্য সচিব আখতার হোসেন বলেছেন, সীমান্ত এলাকায় ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) বাংলাদেশের মানুষকে নির্বিচারে গুলি হত্যা করছে। এর মধ্যে দিয়ে তারা আমাদের স্বীকৃতি না দেওয়ার বিষয়টি বোঝাচ্ছে। ভারত এ দেশে মানুষকে দিল্লির কৃতদাস বানিয়ে রাখতে চায়। যদি আর কখনও এ দেশের মানুষের দিকে বন্দুকের নল উঁচু করা হয়, তাহলে বাংলাদেশের তরুণ প্রজন্ম ভারতকে জবাব দিতে প্রস্তুত আছে।
‘ফেলানী হত্যা দিবসে’ উপলক্ষে মঙ্গলবার (৭ জানুয়ারি) বিকালে শাহবাগ জাদুঘরে সামনে ‘সীমান্ত হত্যা ও ভারতীয় আগ্রাসনের বিরুদ্ধে’ বিক্ষোভ সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন। জাতীয় নাগরিক কমিটি এ আয়োজন করে।
আখতার হোসেন বলেন, ‘১৪ বছর আগে ১৪ বছরের শিশু ফেলানীকে গুলি করে হত্যা করে কাঁটাতারে ঝুলিয়ে রাখা হয়েছিল। তখন পর্যন্ত তিনি জীবিত ছিলেন। তাকে জীবিত অবস্থায় ৩-৪ ঘণ্টা ঝুলিয়ে রেখেছিল ভারত। বাংলাদেশের মানুষকে যদি নূন্যতম সম্মান তারা দেখাতো, তাহলে গুলি করার পরও এই শিশুকে চিকিৎসার ব্যবস্থা করতো। কিন্তু দুর্ভাগ্যের বিষয় তারা বাংলাদেশের মানুষকে স্বাধীন হিসাবে স্বীকৃতি দিতে চায় না। আর একবারও যদি তারা বাংলাদেশের মানুষের দিকে বন্দুক ধরেন, তাহলে ওই বন্দুক ভেঙে চুরমার করে দেওয়া হবে।’
তিনি বলেন, ‘বিএসএফ’র নির্বিচারে সিমান্ত হত্যা বাংলাদেশের মানুষকে স্বীকৃতি না দেওয়ার অন্যতম বড় নিয়ামক। একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধকে হাইজাক করার মধ্যে দিয়ে তারা বাংলাদেশের মানুষকে সীমান্তে দিনের পর দিন বছরের পর বছর নির্বিচারে গুলি করে হত্যা করছে। আমাদের সংকট শুধু সীমান্তে নয়, স্বাধীনতার-সার্বভৌমত্বের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। আমরা ভারতকে বলতে চাই, বাংলাদেশের মানুষ দিল্লির আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে শক্ত অবস্থানে দাঁড়িয়েছে। দিল্লির কৃতদাস সরকার আর এই দেশের ক্ষমতায় আসতে পারবে না। সুতরাং ভারতকে পলিসি পরিবর্তন করে সুসম্পর্ক গড়ে তুলতে হবে। না হলে ভবিষ্যতে চরম মূল্য দিতে হবে।’
জাতীয় নাগরিক কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক আরিফুল ইসলাম আরিফ বলেন, ‘ভারত বাংলাদেশের অর্থনীতি, রাজনীতি এবং সাংস্কৃতিক জগতে আগ্রাসন চালিয়ে যাচ্ছে। গত ১৫ বছরে শুধু সীমান্ত এলাকায় আমাদের ছয়শ’র বেশি মানুষকে হত্যা করেছে। খুনি হাসিনাসহ আওয়ামী লীগের অনেক অপরাধীকে ভারত আশ্রয় দিয়েছে।’
২০১১ সালের ৭ জানুয়ারি কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার অনন্তপুর সীমান্তে বাবার সঙ্গে কাটাতারের বেড়া পার হওয়ার সময় বিএসএফ’র গুলিতে হত্যার শিকার হন ফেলানী খাতুন।