জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নারীদের জন্য ১০০টি আসনের সুপারিশ করেছে সংবিধান সংস্কার কমিশন। সেই সুপারিশের যৌক্তিকতার পুনর্বিবেচনার দাবি জানিয়ে বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্ট। তাদের মতে, সংসদে নারীদের জন্য সর্বোচ্চ ১০ থেকে ২০টি আসনই সংগত।
আজ বুধবার জাতীয় প্রেসক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে ‘সংবিধান সংস্কার কমিশনের প্রদত্ত সুপারিশমালা ও আমাদের বক্তব্য শীর্ষক’ গোলটেবিল বৈঠকে এ কথা বলেন বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্টের নেতারা।
বৈঠকে ২০২৪ সালের গণ-অভ্যুত্থানের চেতনাকে সংবিধানে স্বীকৃতি দেওয়ার প্রশংসা করলেও একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধের ভূমিকার সঙ্গে এর তুলনা করার বিষয়ে সতর্কতা অবলম্বনের আহ্বান জানান। সংবিধানে ‘প্রজাতন্ত্র’ শব্দের পরিবর্তে ‘নাগরিকতন্ত্র’ এবং ‘গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ’ এর পরিবর্তে ‘জনগণতন্ত্রী বাংলাদেশ’ করার সুপারিশ নিয়ে আলোচনা করা হয়।
এ ছাড়া দ্বিকক্ষ বিশিষ্ট আইনসভা, সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্ব পদ্ধতি, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা নিশ্চিতকরণ, রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতার ভারসাম্য রক্ষা, সাংবিধানিক কাউন্সিল গঠন এবং দুর্নীতি দমনসহ পাঁচটি কমিশন গঠনের সুপারিশকে সময়োপযোগী হিসেবে তুলে ধরা হয়।
বৈঠকে ইসলামী ফ্রন্টের নেতারা বলেন, সংবিধানে অন্তর্ভুক্তিমূলক নীতি গ্রহণের ফলে পাহাড়ি-বাঙালি দ্বন্দ্ব নিরসন এবং উগ্রবাদী গোষ্ঠীগত সংঘাত কমবে। পাশাপাশি, ‘আন্তঃধর্ম সম্প্রীতি কমিশন’ ও ‘জাতীয় শরীয়াহ কাউন্সিল’ গঠনের দাবি জানান তাঁরা।
সংগঠনের পক্ষ থেকে আরও বলা হয়, বর্তমান সংবিধানের তুলনায় প্রস্তাবিত সংবিধান সংস্কার সুপারিশমালা অধিকতর টেকসই ও যুগোপযোগী। তবে চূড়ান্ত অনুমোদনের আগে আরও জনমত গ্রহণ ও বিস্তারিত পর্যালোচনার প্রয়োজন রয়েছে।
বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্টের চেয়ারম্যান এম এ মতিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এ বৈঠকে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন—বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট ফজলুর রহমান। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন ইসলামী ফ্রন্টের নেতা স. উ. ম আবদুস সামাদ।
এ ছাড়া সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট জগলুল হায়দার, গণ অধিকার পরিষদের মুখপাত্র ফারুক হাসান, বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্টের আইনসচিব মুহাম্মাদ ইকবাল হাছানসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিরা বক্তব্য রাখেন।