২০২২ সালের জুলাইয়ে শুরু হওয়া আওয়ামী লীগবিরোধী যুগপৎ আন্দোলনে ডান, বাম, প্রগতিশীল দলগুলোর সঙ্গে যুক্ত হয় বিএনপি।
বৃহস্পতিবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) অনুষ্ঠিত দলের বর্ধিত সভায় ওই আন্দোলনকে সাংগঠনিকভাবে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
দেশের রাজনীতিতে একটি নতুন ধারা সৃষ্টি করতে সক্ষম হয়েছেন মন্তব্য করে সভায় এই ধারা সৃষ্টিতে ভূমিকা রাখার জন্য তারেক রহমানের প্রশংসা করা হয়।
শুক্রবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) বিকালে সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আহমেদ স্বাক্ষরিত প্রস্তাব ও সিদ্ধান্তে বলা হয়েছে, ‘আন্দোলনকে সংহত, শক্তিশালী ও বিস্তৃত করে বিজয় নিশ্চিত করার লক্ষ্যে তার (তারেক রহমান) নেতৃত্ব ও দিকনির্দেশনায় বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো ডান-বাম-মধ্যডান-মধ্যবাম অসংখ্য রাজনৈতিক দলের ঐক্য প্রতিষ্ঠা এবং ১ দফা দাবি আদায় করে ৩১ দফা রাষ্ট্র কাঠামো মেরামতের রূপরেখা বাস্তবায়নের যুগপৎ আন্দোলন দেশের রাজনীতিতে এক নতুন ও সফল ধারার সূচনা করে।’
‘এই যুগপৎ আন্দোলনের পথ ধরেই ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টে হাজারো ছাত্র-শ্রমিক-জনতার আত্মত্যাগের বিনিময়ে গণঅভ্যুত্থান সফল হয়; অবৈধ সরকারপ্রধান দেশ ছেড়ে পালিয়ে যায় এবং ফ্যাসিবাদের পতন ঘটে। ফ্যাসিবাদবিরোধী এই গণঅভ্যুত্থানের ভিত্তি স্থাপন ও শক্তিশালীকরণের মাধ্যমে বিজয়ী করার লড়াইয়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের কৌশলী, সক্রিয় ও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা গণতন্ত্রকামী জনগণের প্রশংসা অর্জন করেছে।’
বিএনপির পক্ষ থেকে বর্ধিত সভায় দশটি প্রস্তাব ও সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
চার নম্বর প্রস্তাবে বলা হয়েছে, ‘রাজনৈতিক প্রতিহিংসা চরিতার্থ করার জন্য অবৈধ সরকার দেশনেত্রী খালেদা জিয়াকে মিথ্যা ও বানোয়াট অভিযোগে কারারুদ্ধ করার পর দেশের গণতন্ত্রকামী জনগণ, বিএনপি ও অঙ্গ দল-সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা যখন দেশ, দল ও জনগণের আন্দোলন এবং ভবিষ্যৎ নিয়ে দুশ্চিন্তাগ্রস্ত তখন স্বৈরাচারী সরকারের নিপীড়নের শিকার হয়ে অসুস্থ অবস্থায় প্রবাসে থাকতে বাধ্য হওয়া দলের সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে অসীম সাহসিকতার সাথে দেশের বৃহত্তম রাজনৈতিক দল বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হিসাবে দায়িত্ব গ্রহণ করতে হয়।’
সেখানে আরও বলা হয়েছে, যখন দলের চেয়ারপারসন কারাগারে, দলের অসংখ্য নেতাকর্মী যখন গুম, বন্দি, আহত ও সীমাহীন নিপীড়নের শিকার এবং একটি গণবিরোধী সরকার যখন রাষ্ট্রক্ষমতা দখল করে স্বাভাবিক রাজনীতির পথ অবরুদ্ধ করে রেখেছে—তেমন এক কঠিন সময়ে দায়িত্ব গ্রহণ করে তারেক রহমান দিন-রাত পরিশ্রম করে, যৌথ সিদ্ধান্তে দল পরিচালনা করে এবং দল ও অঙ্গ দল-সহযোগী সংগঠনের সকল পর্যায়ের নেতাকর্মীর সাথে নিয়মিত যোগাযোগ রেখে যেভাবে দলকে সুসংহত ও আন্দোলনকে বেগবান করেছেন তা অসম্ভবকে সম্ভব করার দৃষ্টান্ত।
‘আন্দোলনকে সংহত, শক্তিশালী ও বিস্তৃত করে বিজয় নিশ্চিত করার লক্ষ্যে তার নেতৃত্ব ও দিকনির্দেশনায় বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো ডান-বাম-মধ্যডান-মধ্যবাম অসংখ্য রাজনৈতিক দলের ঐক্য প্রতিষ্ঠা এবং ১ দফা দাবি আদায় করে ৩১ দফা রাষ্ট্র কাঠামো মেরামতের রূপরেখা বাস্তবায়নের যুগপৎ আন্দোলন দেশের রাজনীতিতে এক নতুন ও সফল ধারার সূচনা করে।’
আরও উল্লেখ করা হয়, ‘এই যুগপৎ আন্দোলনের পথ ধরেই ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টে হাজারো ছাত্র-শ্রমিক-জনতার আত্মত্যাগের বিনিময়ে গণঅভ্যুত্থান সফল হয়; অবৈধ সরকারপ্রধান দেশ ছেড়ে পালিয়ে যায় এবং ফ্যাসিবাদের পতন ঘটে। ফ্যাসিবাদ বিরোধী এই গণঅভ্যুত্থানের ভিত্তি স্থাপন ও শক্তিশালীকরণের মাধ্যমে বিজয়ী করার লড়াইয়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের কৌশলী, সক্রিয় ও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা গণতন্ত্রকামী জনগণের প্রশংসা অর্জন করেছে।’
প্রসঙ্গত, ২০২২ সালের ১৮ জুলাই বিএনপির নেতৃত্বে যুগপৎ কর্মসূচি শুরু হয়। ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগসহ নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকার পুনঃপ্রতিষ্ঠা’র একদফা দাবিতে সকাল থেকে রাজধানীর অন্তত ৮টি পয়েন্ট থেকে পদযাত্রা শুরু করেছিল যুগপতে যুক্ত দলগুলো। এর মধ্যে গণতন্ত্র মঞ্চ, ১২ দলীয় জোট, জাতীয়তাবাদী সমমনা জোট, গণঅধিকার পরিষদ উল্লেখযোগ্য।