জামায়াত ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, ‘দুর্নীতি-দুঃশাসন করে কেউ টিকে থাকতে পারে না। অতীতে সোনার বাংলা কায়েম করতে গিয়ে শোষণ করা হয়েছে। এমন রাজনীতি করা যাবে না, যাতে ফ্যাসিবাদের মতো দেশ ছেড়ে পালাতে হয়। দুঃশাসন থেকে জাতি মুক্তি চায়। আজ শনিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে শহরের আদর্শ সামাদ সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে লক্ষ্মীপুর জেলা জামায়াতের আয়োজনে জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
জামায়াতের আমির বলেন, ‘জুলাই বিপ্লবের চেতনা ধারণ করে আমাদের এগিয়ে যেতে হবে। ইসলামী কোনো দলের লোক কোথাও চাঁদাবাজি, দখলবাজি ও জুলুমবাজির সঙ্গে কখনো যুক্ত হয় না। কারণ তারা আল্লাহকে ভয় করে। ২৫ তারিখের মধ্যে জামায়াত নেতা এ টি এম আজহারুল ইসলামকে মুক্তি না দিলে জামায়াতের ৩ কোটি নেতা-কর্মীকে কারাগারে নিতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে প্রস্তুতি নিতে হবে।’
জেলা জামায়াতের আমির মাস্টার রুহুল আমিন ভূঁইয়ার সভাপতিত্বে সমাবেশ সঞ্চালনা করেন সেক্রেটারি ফারুক হোসাইন নুরনবী ও সহকারী সেক্রেটারি অ্যাডভোকেট মহসিন কবির মুরাদ। ডা. শফিকুর রহমান বলেন, ‘৫৪ বছরে এ বাংলাদেশের অনেক কিছু বদলে গিয়েছে। দফায় দফায় রক্তের বন্যা বয়ে গিয়েছে। এই ৫৪ বছরে অনেক জনের শাসন আমরা দেখেছি। অনেক আদর্শের কথা আপনারা শুনেছেন। কিন্তু সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের ইসলামের আদর্শের শাসন এখনো দেখার সুযোগ হয়নি। অতিতে সোনার বাংলা কায়েম করতে গিয়ে শ্মশান বাংলা কায়েম করেছে। কোরআনই একমাত্র সোনার বাংলা কায়েমের গ্যারান্টি দিতে পারে। আর কেউই দিতে পারবে না। বাংলার জমিনে তার পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষ। এখন হবে ইনশাআল্লাহ কোরআনের বাংলাদেশ।’
ডা. শফিকুর রহমান আরও বলেন, নতুন প্রজন্মের তরুণেরা দেখিয়ে দিয়েছে কীভাবে রক্ত দিতে হয়। ছাত্র-জনতার রক্তের বিনিময়ে দেশ দ্বিতীয়বার স্বাধীন হয়েছে। যাদের রক্তের বিনিময়ে আজ একটি স্বাধীন দেশে কথা বলতে পারছি, তাদের স্যালুট জানাই। এটি ধরে রাখতে হবে। যে রাজনীতি করতে গিয়ে দেশ ছেড়ে পালাতে হয়, এমন রাজনীতিকে ঘৃণা করি। ‘বুকের ভেতর তুমুল ঝড়, বুক পেতেছি গুলি কর। যে যুবকেরা বুক পেতে দিয়ে দেশ স্বাধীন করছে, তাদের হাতে আগামীর বাংলাদেশ তুলে দিতে হবে। বাংলাদেশকে একটি মানবিক রাষ্ট্র হিসেবে দেখতে চাই। স্বাধীনতার ৫৩ বছরে দেশের মানুষ মুক্তি পায়নি। আল্লাহর আইন বাস্তবায়নের মাধ্যমে এই দেশের মানুষ মুক্তি পেতে চায়। আর জামায়াত ইসলামী মানুষের মুক্তির জন্যই সেই কাজটি করছে।
সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এ টি এম মাসুম, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের সদস্য মোবারক হোসাইন, জামায়াত নেতা কাজী দ্বীন মোহাম্মদ, শাহজাহান চৌধুরী, ঢাকা উত্তরের জামায়াতের সেক্রেটারি ড. রেজাউল করিম, কেন্দ্রীয় শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের সেক্রেটারি জেনারেল অ্যাডভোকেট আতিকুর রহমান প্রমুখ।
সমাবেশে নেতারা আরও বলেন, আগামী জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচন দিতে হবে। তা না হলে কোনোভাবে জাতীয় নির্বাচন হতে পারে না। তাই দ্রুত সময়ের মধ্যে সংস্কার শেষে জাতীয় নির্বাচন দিতে হবে। আগামীতে প্রতিটি আসনে জামায়াতের প্রার্থীদের বিজয়ী করতে এখন থেকে মাঠে কাজ করার জন্য নেতা-কর্মীদের নির্দেশন দেন নেতারা।