রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের অপসরণসহ তিন বিষয়ে বিএনপির সঙ্গে আলাপ হয়েছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্রতিনিধি দলের।
শনিবার (২৬ অক্টোবর) রাজধানী গুলশানে বিএনপরি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের একথা জানিয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আবদুল্লাহ।
তিনি বলেন, আমরা ২৩ তারিখ জাতীয় ঐক্যের ডাক দিয়েছিলাম, সেসব গণতন্ত্রকামী রাজনৈতিক দল, যারা গণঅভ্যুত্থানে আমাদের নেতৃত্বে ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার পতন ঘটিয়েছি। এখন এই ফ্যাসিবাদ পূর্ণাঙ্গ বিলুপ্তির ক্ষেত্রে আরও একটি বাধা আমাদের সামনে এসে দাঁড়িয়েছে চুপ্পুর অপসারণ। আপনারা জানেন, নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্তের বিষয় নিয়ে গত দুদিন ধরে দেশের প্রতিষ্ঠিত রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আমরা আলাপ চালিয়ে গিয়েছি। আজকে আমরা বিএনপির সঙ্গে আলোচনা করেছি। সেখানে আমরা তিনটি বিষয় নিয়ে মূলত আলোচনা করেছি। প্রথমত, আমাদের সেকেন্ড রিপাবলিক… প্রকেলেমেশন অব রিপাবলিক সেটিকে আমরা কীভাবে ঘোষণা দেবো, কীভাবে করা যায়— সেটি নিয়ে আমরা কথা বলেছি। দ্বিতীয়ত, চুপ্পুর অপসরণ খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে আমরা কীভাবে করতে পারি এবং সেটাতে পলিটিক্যাল কনসেনসাস (রাজনৈতিক ঐকমত্য) কীভাবে বিহিত করা যায়, সেটাতে যেকোনও ধরনের সংকট কীভাবে এড়ানো যায়, সেই বিষয়টি নিয়ে আমরা কথা বলেছি। তৃতীয়ত, জাতীয় ঐক্য ধরে রেখে এই সরকারকে কীভাবে পরিচালনা ও এর ধারাবাহিকতা অব্যাহত রাখা যায়, সেই বিষয়টি নিয়ে আমরা কথা বলেছি।
বিএনপি আজকের আলাপের বিষয়গুলো পরে জানাবে জানিয়ে তিনি বলেন, তারা আমাদের সব কথা শুনেছেন। তারা আমাদের বার্তা পেয়েছেন, তারা তাদের ফোরামে কথা বলবেন।
সব রাজনোইতিক দলের সঙ্গে ধারাবাহিক আলাপ চলছে এবং দলগুলো একই মত দিয়েছে জানিয়ে হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেন, গত দুদিনে বিএনপির পাশাপাশি আমরা জামায়াতের সঙ্গে বসেছিলাম। তাদের সঙ্গে আমাদের কথা হয়েছে। ইসলামী আন্দোলনের সঙ্গে আমাদের কথা হয়েছে। তাদের সঙ্গেও আমরা এই বিষয়গুলো নিয়ে কথা বলেছি। জামায়াতের জায়গা থেকে তারা এই বিষয়ে একমত প্রকাশ করেছেন। তারা ইতোমধ্যে তাদের বক্তব্য স্পষ্ট করেছেন যে, নৈতিকতার জায়গা থেকে চুপ্পুর আর তার পদে থাকার গ্রহণ যোগ্যতা নাই। ইসলামী আন্দোলন তারাও একই কথা বলেছেন। তারা দ্রুত সময়ের মধ্যে জাতীয় ঐক্যের ভিত্তিতে চুপ্পুর অপরসণ চায়। আগামীকাল রবিবার গণতন্ত্র মঞ্চ ও ১২ দলীয় জোট, গণঅধিকার পরিষদের সঙ্গে আমাদের বৈঠক রয়েছে। আমাদের এই আলাপ অব্যাহত থাকবে। জাতীয় ঐক্য প্রতিষ্ঠা করার জন্য যেটি ৫ আগস্টের পর ইতোমধ্যে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে, সেটি কীভাবে ধারাবাহিকভাবে ধরে রেখে নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণ করা যায়। যেখানে ফ্যাসিবাদ ব্যবস্থা সম্পূর্ণ বিলুপ্ত হবে এবং সেদিকে কীভাবে এগিয়ে যাওয়া যায়।
বৈঠকে বিএনপরি পক্ষে উপস্থিত ছিলেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাউদ্দিন আহমেদ ও দলের যুগ্ম মহাসচিব শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানি। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পক্ষে আরও উপস্থিত ছিলেন মুখপাত্র উমামা ফাতেমা, সদস্য সচিব আরিফ সোহেল ও প্রধান সংগঠক আবদুল হান্নান মাসুদ।