ছিলেন কৃষক লীগের জেলা কমিটির সদস্য। সরকার পরিবর্তনের পর এখন জাতীয়তাবাদী তাঁতী দলের একটি ইউনিয়ন কমিটির সভাপতি। সম্প্রতি এমন ঘটনা ঘটেছে পাবনার চাটমোহর উপজেলায়। এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে চলছে সমালোচনার ঝড়। আলোচিত ওই ব্যক্তির নাম আব্দুস সালাম। তাঁর বাড়ি চাটমোহর উপজেলার বিলচলন ইউনিয়নের উত্তরসেন গ্রামে। তিনি বিলচলন ইউনিয়ন পরিষদের ২ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য।
কৃষক লীগ ও তাঁতী দলের অনুমোদিত কমিটির কাগজপত্র পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, ২০২৩ সালের ২১ সেপ্টেম্বর পাবনা জেলা কৃষক লীগের কমিটি অনুমোদন করা হয়। সেই কমিটির ৬৯ নম্বর সদস্য ছিলেন আব্দুস সালাম। অপর দিকে চলতি বছরের ১১ ফেব্রুয়ারি জাতীয়তাবাদী তাঁতী দল বিলচলন ইউনিয়ন শাখার কমিটি অনুমোদন দেওয়া হয়। তাঁতী দলের চাটমোহর উপজেলা শাখার সভাপতি নুরুল ইসলাম (সামাদ) ও সাধারণ সম্পাদক গোলাম আযমের স্বাক্ষরে অনুমোদনকৃত কমিটিতে সভাপতি হন আব্দুস সালাম।
এ ছাড়া বেশ কিছু ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। এতে সালাম ঈদের শুভেচ্ছা জানিয়ে ফেসবুকে পোস্টার (শেখ মুজিবুর রহমান, শেখ হাসিনা ও জয়ের ছবিসংবলিত) শেয়ার করেছিলেন বলে দাবি করা হচ্ছে।
এসব বিষয়ে জানতে চাইলে আব্দুস সালাম বলেন, ‘কৃষক লীগের কমিটির কোনো পদে ছিলাম না। ওই কমিটির সদস্য কবে ও কীভাবে হয়েছি, নিজেও জানি না। কেউ আমার আইডি কার্ড ব্যবহার করে এই কাজ করতে পারে।’ তিনি বলেন, ‘আমার এক নাতি আমার ফোন নিয়ে আওয়ামী লীগ নেতাদের ছবি দিয়ে পোস্টার বানিয়ে ফেসবুকে পোস্ট করেছিল। সেটা দেখার সঙ্গে সঙ্গে ডিলিট করে দিয়েছিলাম। আমি ও আমার গোষ্ঠী সারা জীবন বিএনপি করে আসছি।’
চাটমোহর উপজেলা কৃষক লীগের সভাপতি মিজানুর রহমান মজনু খাঁ বলেন, ‘আব্দুস সালাম ওই সময় সম্ভবত জেলা কৃষক লীগের কমিটিতে ছিলেন। আমাদের সঙ্গেও দল করেছেন। এখন তিনি যদি অন্য দল করেন, সেটা তাঁর ব্যক্তিগত বিষয়।’
চাটমোহর উপজেলা তাঁতী দলের সাধারণ সম্পাদক গোলাম আযম বলেন, ‘সালাম যে কৃষক দল করতেন, তার প্রমাণ চাইব। তারপর সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। স্বৈরাচারের দোসর কাউকে অনুপ্রবেশ করিয়ে দলের সুনাম ক্ষুণ্ন হতে দেব না।’
চাটমোহর উপজেলা তাঁতী দলের সভাপতি নুরুল ইসলাম (সামাদ) বলেন, ‘শুনছি সামাদ নাকি অন্য দল করত। আমি নিজে গিয়ে বিষয়টি তদন্ত করে দেখব। যদি অভিযোগ সত্য হয়, তাহলে তাঁকে কমিটি থেকে বাদ দেওয়া হবে।’
এ দিকে বাগেরহাটের রামপাল উপজেলার মল্লিকেরবেড় ইউনিয়নের বিভিন্ন ওয়ার্ড বিএনপির কমিটিতে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের নাম রয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। গতকাল সোমবার দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ তোলা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে মল্লিকেরবেড় ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সভাপতি আলিম হাওলাদার, সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির খানসহ শতাধিক নেতা-কর্মী উপস্থিত ছিলেন। হুমায়ুন কবির বলেন, ‘বিএনপির কিছু কর্মীবিহীন নেতা তাঁদের পদ টিকিয়ে রাখতে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের ভোটার করেন। বিষয়টি জানাজানি হলে পুনরায় ভোটার তালিকা হালনাগাদ করা হয়। সেখানেও কৌশলে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের ভোটার করা হয়। ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের সভাপতি প্রার্থী শহিদ শেখ, যিনি আওয়ামী লীগের ওয়ার্ড কমিটির সদস্য ছিলেন। যার কারণে এই ওয়ার্ডের ভোট স্থগিত করা হয়। এ ছাড়াও ইউনিয়নের প্রায় প্রতিটি ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের ভোটার করা হয়েছে। ১৪ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত ওয়ার্ড কমিটির নির্বাচনে তাঁরা ভোটও দিয়েছেন। এই অনৈতিক কাজের নিন্দা জানাই।’ ওয়ার্ড কমিটির নির্বাচনের ফলাফল বাতিল করে পুনরায় ভোটার তালিকা হালনাগাদ করে নতুন নির্বাচন দেওয়ার দাবি জানান তিনি।