Homeরাজনীতিএকাত্তর-চব্বিশে প্রাণ উৎসর্গকারীদের ইতিহাস গৌরবের: শফিকুর রহমান

একাত্তর-চব্বিশে প্রাণ উৎসর্গকারীদের ইতিহাস গৌরবের: শফিকুর রহমান


১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন, ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ এবং ২০২৪ সালের গণ-অভ্যুত্থানে জাতিকে মুক্ত করতে যাঁরা জীবন দিয়েছেন তাঁদের ইতিহাস গৌরবের ইতিহাস বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান।

আজ বুধবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের মিলনায়তনে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী আয়োজিত ‘জুলাই ২০২৪ বিপ্লবের শহীদ স্মারক’ মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

শফিকুর রহমান বলেন, ‘কিছু ইতিহাস মানুষের জন্য হয় আনন্দের, কিছু হয় বিষাদের আর কিছু হয় গৌরবের। বিশেষ করে যাঁরা জাতিকে মুক্ত করার আন্দোলনের মাধ্যমে জীবন দেন, অতীতেও এরকম যাঁরা দিয়েছেন ’৪৭, ’৫২, ’৭১ এবং সর্বশেষ এই চব্বিশে যাঁরা জীবন দিয়েছেন, তাঁদের ইতিহাস গৌরবের ইতিহাস।’

তিনি বলেন, ‘আমরাও এই আন্দোলনে শরিক ছিলাম। এই আন্দোলনের মাধ্যমে গোটা জাতি যেভাবে মুক্তি পেয়েছে, সবচেয়ে নির্যাতিত দলটিও একইভাবে মুক্তি পেয়েছে। সুতরাং এই প্রজন্মের প্রতি কৃতজ্ঞতা আদায় করা প্রয়োজন। আমরা শহীদ পরিবারগুলোর কাছে গিয়েছি, তাঁদের প্রতি সম্মান দিতে এবং তাঁদের থেকে দোয়া নিতে। কারণ তাঁরা সৌভাগ্যবান, তাঁদের পরিবার দেশের জন্য জীবন দিয়েছে।’

জামায়াতের আমির বলেন, ‘আজ যে গণমাধ্যমগুলো এখানে এসেছে, তারাও কিন্তু ফ্যাসিবাদের থাবা থেকে মুক্ত ছিল না। সে সময় তাদেরও জীবন দিতে হয়েছে, রিমান্ডের নামে নির্যাতন ভোগ করতে হয়েছে। বিদেশে বসে যাঁরা বাক এবং কলমযুদ্ধ চালিয়েছিলেন, দেশের মাটিতে তাঁদের পরিবারকে হেনস্তা করা হয়েছে, জেলে পুরে দেওয়া হয়েছে। এমনকি নারীদেরও ছাড় দেওয়া হয়নি। তাঁদের রুচি যে কত নিম্নস্তরের ছিল, এসব কর্মকাণ্ড থেকেই তা বোঝা যায়।’

দেশ আমাদের সবার উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘দেশের পাহারাদারি করার দায়িত্ব সব নাগরিকের। কিন্তু কিছু লোক নাগরিকের শান্তি কেড়ে নিতে অপকর্মে লিপ্ত হয়। অপকর্ম যারা করে তারা এটাকে পেশা হিসেবে করে। একসময় তারা এটা তাদের অধিকারের মতো মনে করে। জনগণকে তারা প্রজা ভাবে। নিজেরা রাজা হয়ে বসে। কিন্তু গাছের গোড়ায় যখন ঝাঁকি দেওয়া হয়, তখন ডালে ডালে রাজারা তখন অন্য জায়গায় গিয়ে পড়ে।’

তিনি বলেন, ‘আমরা এখনো পরিপূর্ণভাবে ইতিহাস রচনা করতে পারিনি। জুলাই আন্দোলনে আহতরা এখন হতাশায় পড়ে যাচ্ছেন। এ সময় জাতির পক্ষ থেকে একটি দায়িত্বশীল ভূমিকা নিয়ে এগিয়ে যাওয়া দরকার। অতীতে যারা ফ্যাসিস্ট শাসক ছিল, তাদের নাম ধর্মগ্রন্থেও উঠে এসেছে। একই পরিণতি সবাইকে ভোগ করতে হয়। দুঃখের বিষয় হচ্ছে, ফ্যাসিস্টরা ইতিহাস পড়ে, কিন্তু তার থেকে শিক্ষা নেয় না। আমাদের দেশের ইতিহাস বিস্তৃতির ইতিহাস, বিকৃতির ইতিহাস। দেশের ইতিহাস অনেকে যার যার মতো রচনা করেছেন।’

শফিকুর রহমান বলেন, ‘আবু সাঈদের শাহাদাত ছিল জুলাই আন্দোলনের একটি টার্নিং পয়েন্ট। একটা নিভৃত পরিবারের ছেলেটি নতুন ইতিহাস সৃষ্টি করেছে। সে জেনেশুনেই শহীদ হওয়ার জন্য বুক পেতে দিয়েছিল। তার পথ ধরে বাকি শহীদরা বলেছে আবু সাইদ আমার ভাই, আমরাও শাহাদাতের সিঁড়িতে পা রাখতে চাই।’

শফিকুর রহমান বলেন, ‘আমরা একটি বৈষম্যহীন, মানবিক ও সুন্দর বাংলাদেশ পেয়েছি। তাই রাজনৈতিক দল এবং এর অংশীজনদের বলতে চাই, বিপ্লবের সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণ কোনো কাজ আপনারা করবেন না। যদি করেন, তাহলে শহীদদের আত্মা কষ্ট পাবে, তাঁদের রক্তকে অপমান করা হবে। আর যাঁরা জীবিত শহীদ রয়েছেন, তাঁরা ভীষণ কষ্ট পাবেন ও অভিশাপ দেবেন।’





Source link

এই বিষয়ের আরো সংবাদ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -spot_img

এই বিষয়ে সর্বাধিক পঠিত