বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু বলেছেন, এই সরকার কী পেরেছে কী পারেনি, সেই আলোচনার আগে যদি বলি তারা শ্রমিক হত্যা করেছে– কথাটা সত্য। শেখ হাসিনাও শ্রমিক হত্যা করতো। শেখ হাসিনা যেমন বিএনপির নেতাকর্মীকে খুন করেছে, এই সরকারও কুমিল্লা থেকে খুনের ইতিহাস শুরু করেছে।
মঙ্গলবার (৪ ফেব্রুয়ারি) জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী সাংস্কৃতিক দলের উদ্যোগে আয়োজিত এক নাগরিক সমাবেশে তিনি এ কথা বলেন। ‘দ্রুত নির্বাচনী রোডম্যাপ ঘোষণার’ দাবিতে ওই আয়োজন করা হয়।
শামসুজ্জামান দুদু বলেন, ‘অন্তর্বর্তী সরকারের সময়ে শ্রমিক হত্যা হয়েছে, রাজনৈতিক দলের নেতা হত্যা হয়েছে। অনতিবিলম্বে দোষী ব্যক্তিকে আইনের আওতায় আনতে হবে। তা না হলে মানুষ এবং রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের মধ্যে অসন্তোষ সৃষ্টি হবে।’
অন্তর্বর্তী সরকারের সংস্কার বিষয়ে প্রশ্ন তুলে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বলেন, ‘সরকার সংস্কারের প্রশ্নে খুবই করিতকর্মা। কিন্তু ছয় মাসের যে সংস্কার, সেই সম্বন্ধে দেশবাসী কিছুটা উদ্বিগ্ন, আমরাও উদ্বিগ্ন। তারা কী করেছে আমরা জানি না। তবে এতটুকু জানি বাজার এখনও ঠিক হয়নি। বাজারে যে আগুন জ্বলছিল, সে আগুন এখনও নেভেনি। সিন্ডিকেট এখনও ধরা সম্ভব হয়নি।’
তিনি বলেন, ‘পেটে ভাত থাকতে হবে এবং বেকারদের কাজ থাকতে হবে। যদি মনে করেন, আপনাদের পক্ষে এই কাজ করা সম্ভব নয়, তাহলে এই মুহূর্তে আনুষ্ঠানিকভাবে মিটিংয়ে বসে দিন-তারিখ ঠিক করে, যারা পারবে তাদের পথ সুগম করেন এবং নির্বাচনের ব্যবস্থা করেন। যদি সম্ভব না হয় তাহলে সংকট আরও বাড়তে থাকবে।’
প্রধান উপদেষ্টার উদ্দেশে সাবেক এই সংসদ সদস্য বলেন, ‘যারা আপনাকে ক্ষমতায় বসিয়েছে, সেই ছাত্ররা এখন চিকিৎসা পাচ্ছে না। চিকিৎসার জন্য তাদের বিক্ষোভ করতে হচ্ছে। এর থেকে দুঃখজনক ঘটনা জাতির জন্য আর দ্বিতীয়টা হতে পারে না। আপনার বেতনের টাকা, আপনার উপদেষ্টাদের বেতনের টাকা যথাসময়ে যদি রাষ্ট্র পরিশোধ করতে পারে, সচিবদের বেতনের টাকা, পুলিশের বেতনের টাকা যদি রাষ্ট্র পরিশোধ করতে পারে, তাহলে আহতদের চিকিৎসার টাকা কেন পরিশোধ হয় না? চিকিৎসার জন্য তাদের বিক্ষোভ করতে হয় কেন? ’
নাগরিক সমাবেশে আরও ছিলেন– বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, দেশ বাঁচাও মানুষ বাঁচাও আন্দোলনের সভাপতি এম রকিবুল ইসলাম রিপন, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী সাংস্কৃতিক দলের সভাপতি মো জসিম উদ্দিন কবির প্রমুখ।
বৃহস্পতিবার (৩০ জানুয়ারি) গভীর রাতে বাড়ি থেকে যৌথ বাহিনীর হাতে আটক হন কুমিল্লার যুবদল নেতা তৌহিদুল ইসলাম (৪০)। শুক্রবার বেলা ১১টার দিকে অচেতন অবস্থায় হাসপাতালে নেওয়ার পর চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। পরিবারের দাবি, যৌথ বাহিনী তুলে নিয়ে গিয়ে নির্যাতন করায় তিনি মারা যান। তার শরীরে নির্যাতনের চিহ্ন থাকার কথা জানিয়েছেন চিকিৎসক।
তৌহিদুল ইসলাম কুমিল্লা আদর্শ সদর উপজেলার পাঁচথুবী ইউনিয়ন যুবদলের আহ্বায়ক ছিলেন। একই ইউনিয়নের ইটাল্লা গ্রামের বাসিন্দা। চট্টগ্রামের বন্দরে একটি শিপিং এজেন্টে চাকরি করতেন।