বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা সৈয়দ মোজাম্মেল হোসেন আলাল বলেছেন, ছাত্র-জনতার আন্দোলনে যারা নেতৃত্বে ছিলেন তাদের কারোর বর্তমান সরকারের অংশ হওয়া উচিত হয়নি। বাইরে থেকে যে চাপ সৃষ্টি করতে পারতেন তা অনেকাংশেই এখন কমে গেছে।
বুধবার (২২ জানুয়ারি) বিকেল ৪টা থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মোজাফফর আহমেদ চৌধুরী মিলনায়তনে ‘ইউনিটি ফর বাংলাদেশ’ আয়োজিত ‘জাতীয় ঐক্য : কেন, কীসের ভিত্তিতে ও কোন পথে?’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
মোজাম্মেল হোসেন আলাল বলেন, ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থানকে যদি যুদ্ধ বলি, সেই যুদ্ধে কে জয়ী হয়েছে তার মধ্যে আরও একটি বিবেচ্য বিষয় হলো কে থাকবে কে থাকবে না। তারপর বিবেচ্য হলো যদি কেউ থাকে কোনও পূর্বশর্তের ভিত্তিতে থাকতে হবে। আওয়ামী লীগ ও তাদের সঙ্গে যারা জোটবদ্ধ ছিল, তাদের কাছ থেকে সাধারণ মানুষ একটি বিবৃতির আশা করেছিল। যে আমরা অনুতপ্ত, আমরা অন্যায় করেছি, আমরা ক্ষমা চাচ্ছি। যারা আওয়ামী লীগের নিরব সমর্থক তারাও সেটা আশা করেছিলেন, যে আগস্ট থেকে জানুয়ারি এই ছয় মাসে অন্তত ছয় জন নেতা প্রকাশ্যে, অডিও বা ভিডিওতে ক্ষমা চাইবে। কিন্তু তাদের মধ্যে সেই চেতনা আসেনি। যাদের মধ্যে সেই চেতনা আছে তাদেরকে নিয়ে ঐক্যের চিন্তা করতে হবে। তারপর কে যুক্ত হবে কে হবে না সেটা সময় বলে দিবে।’
ঐক্যের ভিত্তি হবে বাংলাদেশ উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘একসময় আমাদের কিছু জাতীয় পর্যায়ের নেতা বা অভিভাবক ছিলেন যারা বিভিন্ন সংকটে মধ্যস্থতা করেছেন। এখন সেরকম নেতা বা অভিভাবক আমাদের মধ্যে আছে বলে টের পাই না। যারা ছিলেন তারা হতে পারতেন। কিন্তু তাদেরকে অপদস্থ ও কারা অন্তরালে নিয়ে এমন অবস্থা করা হয়েছে, তাদের মধ্যে বিতৃষ্ণা হয়েছে এখন তারা সেই দায়িত্বে আসতে চান না।’
‘ইনস্টিটিউটগুলো ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে। আমাদের দেশের চেয়ে অনেক নোংরা রাজনৈতিক সংস্কৃতি ভারতে এবং ইউরোপের অনেক দেশে রয়েছে। কিন্তু তাদের ইনস্টিটিউটগুলো অত্যন্ত শক্তিশালী। আমরা সেই জায়গাটিতে ব্যর্থ হয়েছি স্বাধীনতার পর থেকেই। প্রতিষ্ঠান গুলো ঠিকমতো গড়ে তুলতে পারলে আকাম-কুকাম করার আগে অন্তত চিন্তা করতাম। সেই ঐক্যের দিকেও আমাদের জোর দেওয়া উচিত।’
আলোচনায় উপস্থিত ছিলেন, বাংলাদেশ কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সম্পাদক ও রাকসুর সাবেক ভিপি রাগীব আহসান মুন্না; গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি; শিক্ষাবিদ, ভূরাজনৈতিক ও আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশেষজ্ঞ লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব) আমিনুল করিম; জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে নৃবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক ড. স্নিগ্ধা রিজওয়ানা। আলেচনার মূল প্রবন্ধ পাঠ করেন লেখক ও অ্যাক্টিভিস্ট তুহিন খান।