২০২৪ সালের ১ জুলাই থেকে ১৫ অগাস্ট পর্যন্ত বাংলাদেশে মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনাবলির তথ্যানুসন্ধান করে তৈরি করা এই প্রতিবেদন বুধবার প্রকাশ করা হয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গুলিতে নিহতদের মধ্যে ৬০ শতাংশের ক্ষেত্রে এমন অস্ত্রের ব্যবহার হয়েছে, যা যুদ্ধে ব্যবহার হওয়ার কথা।
ঢাকা মেডিকেল কলেজের ফরেনসিক বিভাগের তথ্য এবং অন্যান্য সূত্রের বরাতে জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাই কমিশন বলছে, ৭৮ শতাংশ মানুষ নিহত হয়েছেন গুলিতে। তাদের মধ্যে ৬০ শতাংশের ক্ষেত্রে এমন অস্ত্রের ব্যবহার হয়েছে, যা যুদ্ধে ব্যবহার হওয়ার কথা।
ঢাকা মেডিকেল কলেজের ফরেনসিক বিভাগ থেকে প্রাপ্ত তথ্যের বরাতে প্রতিবেদনে বলা হয়, ১৩০টি মৃত্যুর ফরেনসিক প্রতিবেদন নির্দেশ করছে, মোট মৃত্যুর তিন-চতুর্থাংশ (৭৮ শতাংশ) ঘটেছে এমন আগ্নেয়াস্ত্রের আঘাতে, যা সাধারণত পুলিশ ব্যবহার করে না।
“এই তথ্য অনুযায়ী আরও ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে, দুই-তৃতীয়াংশ মৃত্যু ঘটেছে উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন স্বয়ংক্রিয় ও আধা-স্বয়ংক্রিয় সামরিক রাইফেলের গুলিতে।
১২ শতাংশ মৃত্যু শটগানের প্রাণঘাতী ছররা গুলিতে ঘটার কথা বলা হয়েছে জাতিসংঘের প্রতিবদনে। ‘বিশ্বাসযোগ্য ও গোপনীয় সূত্রের’ সঙ্গে ঢাকা মেডিকেলের মৃত্যুর এই পর্যালোচনার মিলে যাওয়ার কথা বলেছে জাতিসংঘ।
তবে এসব মৃত্যুর কারণ নির্ণয় না করার কথাও তুলে ধরা হয়েছে সংস্থার প্রতিবেদনে। সেখানে বলা হয়, সব হত্যা রাষ্ট্রীয় বাহিনী ঘটিয়েছে বা বিচারবহির্ভূত হত্যা হিসেবে ধরে নেওয়া ঠিক হবে না।
“তবে, অধিকাংশ মৃত্যু ঘটেছে আগ্নেয়াস্ত্রে গুলিতে, যার মধ্যে সামরিক রাইফেল ও শটগানের প্রাণঘাতী মেটাল পেলেটবাহী গুলি রয়েছে। যা সাধারণ বাংলাদেশ পুলিশ, আধাসামরিক বা সামরিক বাহিনী ব্যবহার করে থাকে।”
জাতিসংঘ মানবাধিকার বিষয়ক হাই কমিশনের তদন্ত দলের ফরেনসিক চিকিৎসক ও অস্ত্র বিশেষজ্ঞের বর্ণনার কথা তুলে ধরে বলা হয়েছে, আহতরা যে ‘প্রজেক্টাইলে’ (গুলিতে) আঘাত পেয়েছেন, তার সঙ্গে বাংলাদেশ অর্ডন্যান্স ফ্যাক্টরিতে তৈরি ৭.৬২*৩৯এমএম রাইফেলের গুলির মিল আছে।
“কিছু কিছু ক্ষেত্রে বর্ম ভেদ করা ৭.৬২ ক্যালিবারের বিশেষ গুলিও নিরস্ত্র বেসামরিকদের উপর ব্যবহারের তথ্য মিলেছে। এ ধরনের গুলি যুদ্ধক্ষেত্রে ব্যবহার করা হয়, যাতে শরীরে পরা বর্ম ভেদ করতে পারে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষার কাজের জন্য এ গুলি নয়।