২০২০ সালের ১৪ জুন বান্দ্রার ফ্ল্যাট থেকে উদ্ধার করা হয়েছিল বলিউড অভিনেতা সুশান্ত সিং রাজপুতের নিথর দেহ। তাঁর এই রহস্যজনক মৃত্যু নিয়ে ধোঁয়াশা এখনো কাটেনি। খুন না কি আত্মহত্যা— এ প্রশ্নের সঠিক উত্তর মেলেনি এখনো। এতদিনে তদন্ত প্রতিবেদন সামনে আনল সিবিআই। প্রায় পাঁচ বছর তদন্তের পর অন্তিম রিপোর্ট জমা দিয়েছে ভারতের এই কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা।
প্রাথমিকভাবে, সুশান্তের এই মৃত্যুর ঘটনা আত্মহত্যা বলেই ধারণা করা হয়েছিল। অন্তিম রিপোর্টেও সিবিআই নিশ্চিত করল, আত্মহত্যাই করেছিলেন অভিনেতা। তদন্তে খুন বা আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়ার মতো বিষয় উঠে আসেনি বলে জানানো হয়েছে।
সুশান্তের মৃত্যুর তদন্তভার প্রথমে ছিল মুম্বাই পুলিশের হাতে। ময়নাতদন্তের পর তারা জানিয়েছিল, আত্মহত্যা করেছেন অভিনেতা। কিন্তু আপত্তি আসে সুশান্তের পরিবারের পক্ষ থেকে। সুশান্তের বাবা কেকে সিংয়ের এফআইআরের পর ২০২০ সালের আগস্টে মামলার তদন্তভার পায় সিবিআই।
সুশান্তের পরিবারের অভিযোগ ছিল, সুশান্তের বান্ধবী অভিনেত্রী রিয়া চক্রবর্তী আত্মহত্যায় প্ররোচনা দিয়েছেন। রিয়া ও তাঁর পরিবারের সদস্যরা সুশান্তের টাকা আত্মসাৎ করেছেন বলেও অভিযোগ করেন সুশান্তের বাবা। এমনকি, রিয়া সুশান্তের খাবারে বিষ মিশিয়ে দিয়েছেন বলেও দাবি ছিল তাঁর। তবে এসব অভিযোগের পক্ষে কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি, জানিয়েছে সিবিআই।
উল্টোদিকে রিয়া অভিযোগ এনেছিলেন সুশান্তের দিদি প্রিয়াঙ্কা সিং রাজপুত ও দিল্লির এক চিকিৎসকের বিরুদ্ধে। রিয়া দাবি করেছিলেন, সঠিক চিকিৎসা না করে সুশান্তকে ভুল ওষুধ দিয়েছেন সেই চিকিৎসক, প্রিয়াঙ্কা কোনো পদ্ধতি না মেনে ভাইকে সেই ওষুধ খাওয়াচ্ছিলেন।
সুশান্তের মৃত্যু সংক্রান্ত দুটি মামলারই অন্তিম রিপোর্ট জমা দিয়েছে সিবিআই। সেই রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে, আত্মহত্যাই করেছিলেন অভিনেতা। তাঁকে হত্যা করা কিংবা হত্যাচেষ্টা কিংবা তাঁর বিরুদ্ধে কোনো ধরনের ষড়যন্ত্রের প্রমাণ পাওয়া যায়নি। তদন্তে মাদক সংক্রান্ত কোনো দিকও উঠে আসেনি।
অন্তিম রিপোর্ট প্রকাশ্যে আসার পর সিবিআইয়ের কাছে কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন রিয়া চক্রবর্তীর আইনজীবী সতীশ মানশিণ্ডে। তিনি বলেন, ‘আমরা সিবিআইয়ের কাছে কৃতজ্ঞ মামলার প্রতিটি দিক পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে তদন্ত করে ইতি টানার জন্য। সোশ্যাল মিডিয়া ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় ওই সময় বিষয়টি নিয়ে ব্যাপক মিথ্যা তথ্য প্রচার করা হয়েছিল। নিরীহ লোকদের ধরে ধরে মিডিয়া ও তদন্তকারী কর্তৃপক্ষের সামনে হাজির করানো হয়েছিল।’
এ মামলায় রিয়া চক্রবর্তীকে ২৭ দিনের জন্য জেলে থাকতে হয়েছিল। এমন কঠিন সময়ে ধৈর্য ধরে নীরব থাকার জন্য রিয়ার পরিবারকে ধন্যবাদ জানান অভিনেত্রীর আইনজীবী।