জলে জ্বলে তারা সিনেমা দিয়ে ১৫ বছর পর বড় পর্দায় ফিরছেন। কেমন লাগছে?
মনে হচ্ছে, আমার প্রথম সিনেমা মুক্তি পাচ্ছে। বিষয়টি শব্দে প্রকাশ করা কঠিন। নতুন বইয়ের ঘ্রাণটা যেমন অদ্ভুত সুন্দর! মনে হয়, এখনই বইটা পড়ে ফেলি কিংবা কিছুটা হলেও পড়ে রাখি। আমারও সে রকম মনে হচ্ছে।
আবারও দীর্ঘ বিরতিতে যাবেন, নাকি নিয়মিত সিনেমা করতে চান?
আমি চাইছি সিনেমায় নিয়মিত অভিনয় করতে। এ বছর জলে জ্বলে তারা সিনেমা দিয়ে দীর্ঘ বিরতির পর পর্দায় ফিরছি ঠিকই; কিন্তু গত বছর ‘শেকড়’ নামের আরেকটি সিনেমায় অভিনয় করেছি। গল্পনির্ভর সিনেমা, যার গান সুন্দর হবে, দেখতে আরাম লাগবে—সে রকম সিনেমায় কাজ করতে চাই।
দীর্ঘ বিরতির কারণ কী ছিল?
নির্দিষ্ট কোনো কারণ নেই। আমি তো বিভিন্ন মাধ্যমে কাজ করেই যাচ্ছি। সিনেমায় সুযোগ পাওয়াটা ভাগ্যের ব্যাপার। আমি নিজেও এমন কাজের সঙ্গে যুক্ত হতে চাই, যা দেখে দর্শক আমাকে নতুন করে আবিষ্কার করবেন। জলে জ্বলে তারা সিনেমার চরিত্রটি আমাকে দর্শকের সামনে আলাদাভাবে উপস্থাপন করবে। নিজেকে নতুন করে উপস্থাপন করা যায়, অভিনয়ের সুযোগ থাকে, এমন কাজের প্রস্তাব পেলে একটা সিনেমা করাও ভালো।
জলে জ্বলে তারা সিনেমার গল্প কী নিয়ে?
মুক্তির আগে বিস্তারিত বলতে চাই না। তবে এটা বলতে পারি, পুরোপুরি গল্পনির্ভর এবং বাণিজ্যিক একটি সিনেমা। সিনেমা হলে গিয়ে দেখার মতো সিনেমা। আমি অভিনয় করেছি হোসেন মাঝি চরিত্রে। আমার সঙ্গে আছেন মিথিলা। এ ছাড়া বেশ কয়েকজন অভিনয়শিল্পী এখানে কাজ করেছেন। তাঁদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য আজাদ আবুল কালাম, ফজলুর রহমান বাবু, মোস্তাফিজ নূর ইমরান, শাহেদ আলী সুজন। সবাই নিজেদের সেরাটা দিয়েছেন।
সিনেমার গান ও ট্রেলার রিলিজ পেয়েছে। কেমন সাড়া পাচ্ছেন?
গানের রেসপন্স খুব ভালো। অনেকে ফোন করে ভালো লাগার কথা জানিয়েছেন। গানটি দেখে তাঁদের আরাম লেগেছে। গানের কথা, সুর ও গায়কির প্রশংসা করছেন। ট্রেলার মাত্র রিলিজ হলো। এর মধ্যে অনেকে বলছেন, সিনেমাটি জমে যাবে। আমিও প্রত্যাশা করছি, সবার ভালো লাগবে। কারও কারও ভালো না-ও লাগতে পারে, সে ক্ষেত্রে গঠনমূলক সমালোচনাটা শুনতে চাই।
হোসেন মাঝি চরিত্রে আপনার প্রস্তুতি কেমন ছিল?
আমি চেষ্টা করি চরিত্র অনুযায়ী নিজেকে তৈরি করতে। চেষ্টার কোনো কমতি থাকে না। ‘মিশন হান্ট ডাউন’, ‘কারাগার’, ‘ওভারট্রাম্প’ এবং ‘কালপুরুষ’-এর সঙ্গে জলে জ্বলে তারার চরিত্রটা শতভাগ বিপরীত। আমার চরিত্রটি যেহেতু মাঝির, তাই চেষ্টা করেছি মাটির সঙ্গে, পানির সঙ্গে সেই সম্পর্কটা তৈরি করতে। আঞ্চলিক ভাষাটা আত্মস্থ করে একেবারে সাধারণ মানুষের মতো করে কথা বলার চেষ্টা করেছি, যেন মনে হয় হোসেন মাঝি কথা বলছে। শুটিং হয়েছে কালীগঙ্গা নদীর পাড়ে। আমার শুটিং হয়েছে ১৭ দিন, কিন্তু সপ্তাহখানেক আগে লোকেশনে চলে গিয়েছিলাম। চরিত্রের গেটআপ, মেকআপ নিয়ে ঘোরাফেরা করতাম। সেই জায়গার মানুষদের সঙ্গে মেশার চেষ্টা করেছি। মোটকথা, হোসেন মাঝি হয়ে ওঠার সব ধরনের চেষ্টা করেছি।
ওটিটিতে কারাগার, মিশন হান্ট ডাউন, কালপুরুষে আপনার কাজ প্রশংসিত হয়েছে। নতুন কী আসছে ওটিটিতে?
একটি কাজ শেষ করেছি। এ নিয়ে এখন কিছু বলা যাবে না। প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান থেকে ঘোষণা এলে কথা বলা যাবে। তবে শিগগির এই মাধ্যমে আবার আমাকে দেখা যাবে।
ওটিটির কাজগুলো নাকি সিন্ডিকেট মেইনটেইন করে চলে?
সিন্ডিকেট সব ক্ষেত্রে থাকবে। এটা বলে লাভ নেই। একেকজনের সঙ্গে একেকজনের কাজ করার একটা কমফোর্ট জোন তৈরি হয়ে যায়। সেই বিতর্কে আটকে থেকে নিজের ডেভেলপমেন্ট থামিয়ে রাখতে চাই না। আমি বিশ্বাস করি, যদি নিজেকে ডেভেলপ করতে পারি, তাহলে ওই সিন্ডিকেট আমাকে টেনে নিয়ে শীর্ষ স্থানে বসাবে। আমাকে শুধু নিজের কাজটা সম্পর্কে ভালো করে জানতে হবে। নিজের ভুলগুলো সংশোধন করে এগিয়ে যেতে হবে।
অভিনয়ের পাশাপাশি গানেও তো সময় দিচ্ছেন?
গানের সঙ্গে সম্পর্ক আমার নতুন নয়। চেষ্টা করছি সেখানেও যুক্ত থাকার। গত বছর স্পটিফাইতে ‘মায়া’ গানটি প্রকাশিত হয়েছিল। এর আগের বছর এসেছিল ‘আমার তুমি’। এবার ঈদে ‘ভালোবাসার ঘর’ শিরোনামের একটি গান প্রকাশের পরিকল্পনা করেছি। কথা, সুর ও সংগীতায়োজন আমার। রাশা চাকলাদার গিটার বাজিয়েছেন। আগের গানগুলো শুধু অডিও আকারে প্রকাশ পেলেও এবার ভিডিও নিয়ে পরিকল্পনা করছি। গান শুনে অনেকে ভিডিওর জন্য অনুরোধ করেছেন। তবে আহামরি কিছু নয়, সাধারণভাবে করতে চাই। কারণ, আমার কাছে গানটাই আসল, ভিজ্যুয়াল না।