জাতীয় চলচ্চিত্র অনুদান নীতিমালা ২০২৫-এর ৬.৫ ধারা নিয়ে চলচ্চিত্র সংস্কার রোডম্যাপ ২০২৪-এর কমিউনিকেশন উইংয়ের পক্ষ থেকে প্রতিবাদ জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছেন ১১৯ জন চলচ্চিত্র নির্মাতা ও কর্মী। এই ধারায় উল্লেখ আছে, ‘প্রস্তাবিত বাজেটের কমপক্ষে শতকরা ১০ ভাগ অর্থ প্রযোজক/প্রস্তাব দাখিলকারীর ব্যাংক হিসাবে জমা থাকতে হবে। আবেদনের সঙ্গে এ-সংক্রান্ত প্রমাণ দাখিল করতে হবে।’ মূলত এই শর্তটি নিয়েই সবার আপত্তি।
বিবৃতিতে চলচ্চিত্র নির্মাতা ও কর্মীরা জানিয়েছেন, বাংলাদেশ সরকারের তথ্য মন্ত্রণালয় ঘোষিত চলচ্চিত্রে সরকারি অনুদান প্রদান নীতিমালা ২০২৫-এর বহুস্বর নিশ্চিতকরণ এবং মেধা ও সৃজনশীলতাকে উৎসাহিত করার যে অঙ্গীকার, তা জাতীয় চলচ্চিত্র অনুদান নীতিমালায় একটি নবদিগন্ত উন্মোচন করেছে। তবে ৬.৫ ধারার শতকরা ১০ ভাগ অর্থ জমা দেখানোর শর্তটি নৈতিকভাবে বৈষম্যমূলক এবং এটি স্বাধীন ও প্রান্তিক চলচ্চিত্র নির্মাতাদের অনুদানের প্রক্রিয়া থেকে কার্যত বাদ দিয়ে দেয়। একজন ক্ষুদ্র জনগোষ্ঠীর নির্মাতা, তরুণ, নবীন কিংবা প্রান্তিক নির্মাতার পক্ষে এই আর্থিক প্রমাণপত্র জমা দেওয়া প্রায় অসম্ভব। যেখানে একটি চমৎকার চিত্রনাট্য থাকা সত্ত্বেও কেবল অর্থের অভাবে একজন প্রতিভাবান নির্মাতা অনুদানের আবেদন করতে পারছেন না, সেখানে এটিকে মেধা ও সৃজনশীলতাকে উৎসাহিত করার প্রক্রিয়া বলা যায় না।
এই ধারা বহাল থাকলে ভবিষ্যতে অনুদানপ্রাপ্ত চলচ্চিত্রগুলোর মধ্যে সামাজিক বৈচিত্র্য ও বহুস্বর প্রতিফলিত হবে না। বরং একটি আর্থিকভাবে সুবিধাপ্রাপ্ত শ্রেণির একচেটিয়া অংশগ্রহণেই চলচ্চিত্র নির্মাণ সীমাবদ্ধ হয়ে যাবে, যা জাতীয় অনুদানের মৌলিক উদ্দেশ্যের পরিপন্থী বলে মনে করছেন এই নির্মাতারা। তাঁরা দাবি জানিয়েছেন, অনুদান প্রদান নীতিমালার ধারা ৬.৫ সম্পূর্ণভাবে বাতিল করে একটি সমতাভিত্তিক, অন্তর্ভুক্তিমূলক ও চলচ্চিত্রবান্ধব নীতিমালা পুনরায় প্রণয়ন করতে হবে। সেই সঙ্গে প্রজ্ঞাপন জারির সময়সীমা বাড়িয়ে এই নীতিমালা পুনর্বিবেচনার সুযোগ দিতে হবে।
চলচ্চিত্রকর্মী ও নির্মাতাদের এই তালিকায় আছেন শাহ নেওয়াজ খান সিজু, মামুন সোবহানী, আকরাম খান, মো. আল আমিন রাকিব তনয়, নুরুল আলম আতিক, বিধান রিবেরু, সামির আহমেদ, সোহেল মণ্ডল, মনোজ প্রামাণিক, মুহাম্মদ কাইউম, গোলাম রাব্বানী, তাসনুভা রহমান, উত্তম কুমার সিংহ প্রমুখ।