Homeবিনোদন‘ছিঃ ছিঃ ছিঃ রে ননী’ ২০ বছর আগের গান যেভাবে ভাইরাল, অর্থ...

‘ছিঃ ছিঃ ছিঃ রে ননী’ ২০ বছর আগের গান যেভাবে ভাইরাল, অর্থ জানেন কি


সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে হুলুস্থুল ফেলে দিয়েছে একটি গান—ছিঃ ছিঃ ছিঃ রে ননী ছিঃ। এই গানের মিউজিক ভিডিও এখন মিম, শর্টস, রিল ও টিকটকে ছড়াছড়ি। অর্থ না বুঝলেও মিউজিক ভিডিওর পটভূমি এবং সুরে সবাই মাতোয়ারা। হাসি, কান্না, দুঃখ, বেদনা সব ধরনের ভিডিওতে জুড়ে দেওয়া হচ্ছে এই গান! এমনকি পিকনিকে বা পার্টিতেও লাউডস্পিকারে বাজানো হচ্ছে।

এই গানের ইতিহাস কী, কোন ভাষার গান, আর এর কথার অর্থই বা কী?
ভারতীয় বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবরের সূত্রে জানা যায়, এটি আসলে উড়িয়া ভাষায় গাওয়া একটি গান। বিখ্যাত উড়িয়া সংগীত শিল্পী ও গীতিকার প্রয়াত সত্যনারায়ণ অধিকারীর গাওয়া। উড়িষ্যার (বর্তমান ওডিশা) কোরাপুটের স্থানীয় ভাষায় লেখা এই গান। এই গানের মিউজিক ভিডিওতে অভিনয় করেছেন সম্বলপুরের গোবিন্দতলার বাসিন্দা বিভূতি বিশ্বল। তিনি একজন থিয়েটার অভিনেতা। বেশ কিছু ছবিতেও নামভূমিকায় অভিনয় করেছেন। এমনকি, অল ইন্ডিয়া রেডিও–র একজন প্রতিষ্ঠিত শিল্পী এবং শিক্ষক তিনি। এই গান প্রথম রেকর্ড করা হয় ১৯৯৫ সালে। পরে তৈরি হয় মিউজিক ভিডিও।

২০০৫ সালে প্রযোজক সীতারাম আগরওয়াল গানটির প্রথম মিউজিক ভিডিও তৈরি করেন। মিউজিক ভিডিওটি পরিচালনা করেছেন মানভঞ্জন নায়ক।

মিউজিক ভিডিওতে এক দরিদ্র তরুণ কৃষক ও তাঁর প্রেমিকার গল্প বর্ণনা করা হয়েছে। প্রেমিকার অন্য জায়গায় বিয়ে ঠিক হয়ে যাওয়ায় বিচ্ছেদ বেদনায় কাতর প্রেমিক তাঁর উদ্দেশে গানটি গেয়েছেন। সেই তরুণ কৃষকের ভূমিকায় অভিনয় করেছেন বিভূতি বিশ্বল।

২০ বছর পর ভাইরাল এই উড়িয়া গান বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মে কোটি ভিউয়ের রেকর্ড ছাড়িয়েছে। উড়িষ্যার সম্বলপুর থেকে গানটি ছড়িয়ে পড়েছে গোটা দুনিয়ায়। মূলত নতুন বছরের শুরুতেই ভাইরাল হয়ে গেছে এই ‘ছিঃ ছিঃ রে ননী…’।

উড়িয়া ভাষার গানটির বাংলা অর্থ:

ধন কে দেখলু তুই ননী সিনা মনকে চিনলু নাই।

বাংলা: ধন (সম্পদ) দেখলি মেয়ে কিন্তু মনকে চিনলি না।

সোনাকে চিনলু বানাকে চিনলু মনিষো চিনলু নাই।

বাংলা: সোনাদানা চিনলি কিন্তু মানুষ চিনলি না।

ধন নাই বলি মোর পাখে ননী তার কাঁজে উঠি গলু।

বাংলা: আমার কাছে ধন (সম্পদ) নেই বলে,, মেয়ে তার সঙ্গে চলে গেলি।

ধন আছে সিনা মন নাই তাকে তুই জানি না পারিলু।

বাংলা: ধন সম্পদ আছে কিন্তু মন নেই তার, তুই জানতে পারলি না।

গোটে দিনো মিশা যগি দেলু নাহি কেড়ে কথা করি দেলু।

বাংলা: একটা দিন ও অপেক্ষা করলি নাহি, কতো বড়ো কান্ড করে দিলি

মুই গাঁ যাই করি আসলা বেলে কেন্তা পাছরি দেলু।

বাংলা: আমি বেড়াতে গিয়ে এসে দখি আমায় কেমনে ভুলে গেলি।

ছিঃ ছিঃ ছিঃ ননী ছিঃ ছিঃ ছিঃ।

বাংলা: ছিঃ ছিঃ ছিঃ মেয়ে ছিঃ ছিঃ ছিঃ

জানা যায়, এই মিউজিক ভিডিওর মুখ্য চরিত্রে অভিনয় করা বিভূতি বিশ্বাল উড়িষ্যার সম্বলপুরের গোবিন্দটোলার বাসিন্দা। বিভূতি একজন নিবেদিতপ্রাণ মঞ্চশিল্পী। থিয়েটারে তাঁর দক্ষতা, প্রধান এবং পার্শ্ব চরিত্রে অভিনয়ের মাধ্যমে তিনি ইতিমধ্যেই নিজের জায়গা করে নিয়েছেন। আকাশবাণী সম্বলপুরের সঙ্গে যুক্ত এই শিল্পী পার্টটাইম আর্ট টিচার হিসেবেও কাজ করেন।

গানের সঙ্গে যুক্ত হওয়ার স্মৃতি রোমন্থন করে বিভূতি ভারতীয় সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, পরিচালক মনভঞ্জন নায়কের সঙ্গে তাঁর পরিচয় হয় এক থিয়েটারের মাধ্যমে। বিভূতির গ্রাম্য চেহারা এবং সহজাত অভিনয় দক্ষতা দেখে পরিচালক তাঁকে এই মিউজিক ভিডিওতে অভিনয়ের প্রস্তাব দেন। যদিও এর আগে কখনও মিউজিক ভিডিওতে অভিনয় বা নাচ করেননি তিনি। তবুও নির্মাতারা তাঁর ওপর ভরসা করেছিলেন।

পরিচালক মনভঞ্জন নায়ক জানিয়েছেন, গানটি প্রথমবার রেকর্ড করা হয় ১৯৯৫ সালে। ২০০৫ সালে প্রযোজক সীতারাম আগরওয়াল এই গানের ওপর একটি ভিডিও তৈরি করার প্রস্তাব দেন। তখনই এই গল্পটি তৈরি করেন নায়ক। গল্পটি এক দরিদ্র যুবককে ঘিরে, যাকে প্রেমিকার পরিবার আর্থিক অবস্থার কারণে প্রত্যাখ্যান করে। কাজের সন্ধানে বাড়ি ছেড়ে যাওয়া যুবক যখন ফেরেন, তখন জানতে পারেন প্রেমিকার বিয়ে ঠিক হয়ে গেছে। সেই হৃদয়বিদারক মুহূর্তে গানটি গেয়ে ওঠে যুবক।

পরিচালক মনভঞ্জন স্বীকার করেছেন, গানটির মান নিয়ে তাঁরা আত্মবিশ্বাসী থাকলেও এর এমন সাড়া জাগানো সাফল্য হবে তা কল্পনাও করতে পারেননি। ২০ বছর পর এই গানের পুনর্জন্ম যেন এ গানের সৃষ্টিকর্তাদের জন্য এক অভাবনীয় উপহার।

এই মিউজিক ভিডিওর শুটিং হয়েছিল পিটাপালি এবং জামদারপালি গ্রামে। প্রথমে গানটি সামান্য সাড়া পেলেও দ্রুতই হারিয়ে যায়। এখন সেই গানই ইতিহাস গড়ছে!





Source link

এই বিষয়ের আরো সংবাদ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -spot_img

এই বিষয়ে সর্বাধিক পঠিত