Homeবিনোদনএ বছর বক্স অফিস কাঁপাবে হলিউডের যেসব সিনেমা

এ বছর বক্স অফিস কাঁপাবে হলিউডের যেসব সিনেমা


কোভিড মহামারির পর এ বছর আবার প্রেক্ষাগৃহ চাঙা হবে বলে আশা করছেন যুক্তরাষ্ট্রের হল ব্যবসায়ীরা। কারণ, এ বছর আবারও রুপালী পর্দায় আসতে যাচ্ছে ইতিহাস গড়া সাই–ফাই সিনেমা অ্যাভাটার, অন্যতম জনপ্রিয় ডিসি কমিক সুপারম্যান এবং সবচেয়ে বড় চমক টম ক্রুজের ‘শেষ’ মিশন ইম্পসিবল।

করোনা মহামারিতে অন্য সব খাতের মতোই ভয়াবহ মন্দায় পড়েছিল চলচ্চিত্র খাতও। মহামারির পাঁচ বছর পেরিয়ে গেলেও সেই মন্দা পুরোপুরি কাটিয়ে ওঠা সম্ভব হয়নি। এখনো পুরোপুরি হলমুখী করা যায়নি দর্শকদের। করোনাকালীন মানুষের জীবনযাত্রায় যে পরিবর্তন এসেছে তারই ফল এসব।

বার্তা সংস্থা রয়টার্সের তথ্যমতে, গত বছর যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডার বক্স অফিসে আয় হয়েছে মাত্র ৮ দশমিক ৬ বিলিয়ন ডলার, যা করোনা পূর্ব সময়ের প্রায় ২৫ শতাংশ কম। ২০১৯ সালে করোনার আগে দুই দেশের বক্স অফিসে আয় ছিল ১১ দশমিক ৪ বিলিয়ন ডলার।

মহামারির পর ২০২৩ সালে হলিউড চিত্রনাট্যকার ও অভিনেতাদের ধর্মঘটের কারণেও নতুন করে সংকটে পড়ে হলিউড ইন্ডাস্ট্রি। তবে, সব প্রতিকূলতা পেরিয়ে চলতি বছর আবার জমে উঠবে হলিউড ইন্ডাস্ট্রি—এমনটাই প্রত্যাশা শিল্পী-কলাকুশলী সবার।

ইউরোপের ভ্যু সিনেমাস–এর প্রতিষ্ঠাতা ও সিইও টিম রিচার্ডস বলেন, ‘একটি বড় বাজেটের সিনেমা নির্মাণের জন্য সেরা প্রতিভা, সেরা অভিনেতা ও সেরা সেট দরকার হয়। এই পুরো প্রক্রিয়া আবার সচল হতে সময় লাগে। সম্ভবত সেই সময়টা শেষ হতে চলেছে। ২০২৫ সালে আমরা সেই প্রভাবের শেষ অংশটা দেখতে পাব।’

রয়টার্সের তথ্যমতে, আগামী মাসে লাস ভেগাসে বার্ষিক সিনেমাকন সম্মেলনে হলিউডের শীর্ষস্থানীয় স্টুডিও ও সিনেমা মালিকেরা মিলিত হবেন। সেখানে ইন্ডাস্ট্রির ভবিষ্যৎ নিয়ে আলোচনা হবে। এই ইভেন্টে এএমসি এন্টারটেইনমেন্ট, সিনেমার্ক এবং সিনেওয়ার্ল্ডের মতো বড় মাল্টিপ্লেক্স চেইনের কর্মকর্তারা অংশ নেবেন, সঙ্গে থাকবে ছোট শহরের একক মালিকানাধীন হলগুলোর প্রতিনিধিরাও।

বর্তমানে ওভার দ্য টপ বা ওটিটি প্ল্যাটফর্মগুলোর জনপ্রিয়তা ব্যাপকভাবে বেড়েছে। করোনা পূর্ববর্তী সময়ে শুধু নেটফ্লিক্স ও ডিজনি প্লাসের মতো বড় প্ল্যাটফর্মগুলো জনপ্রিয় থাকলেও বর্তমানে ছোট–বড় বহু ওটিটি থাকছে দর্শকদের পছন্দের তালিকায়। তা ছাড়া, বড় প্ল্যাটফর্মগুলোতে দর্শক বেড়েছে আগের তুলনায় কয়েক গুণ।

বিশ্লেষকেরা বলছেন, এখন ওটিটির দিকেই ঝুঁকছেন দর্শকেরা। যেকোনো চলচ্চিত্র মুক্তির সঙ্গে সঙ্গে হলে গিয়ে দেখার যে প্রবণতা আগে ছিল, তা এখন নেই বললেই চলে। হলে মুক্তির পর সেটি কবে ওটিটিতে মুক্তি দেওয়া হবে তার জন্য অপেক্ষা করেন দর্শকদের বড় একটি অংশ।

ফ্যানডাঙ্গোর মুভি অ্যানালিটিকস পরিচালক শন রবিন্সের মতে, সিনেমা ইন্ডাস্ট্রি এখন ‘নিউ নরমাল’ বা ‘নয়া স্বাভাবিক’ পরিস্থিতির সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিচ্ছে। তিনি বলেন, ‘কেবল বড় বাজেটের ব্লকবাস্টার ছবিগুলো দেখতেই হলে যাচ্ছে মানুষ। অন্যান্য সিনেমার ক্ষেত্রে তারা ওটিটি প্ল্যাটফর্মে দেখার জন্য অপেক্ষা করতেই বেশি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘আগে সিনেমা হলে মুক্তির তিন মাস পর কোনো ছবি স্ট্রিমিংয়ে আসত। এখন অনেক ছবিই তিন থেকে আট সপ্তাহের মধ্যে অনলাইন প্ল্যাটফর্মে চলে আসে। কারণ, দর্শকেরা হলে যাচ্ছে না।’

এমন পরিস্থিতিতে হলগুলোর টিকে থাকা নিয়ে শঙ্কায় সংশ্লিষ্টরা। একাডেমি অ্যাওয়ার্ডসে ‘আনোরা’ চলচ্চিত্রের জন্য সেরা পরিচালকের পুরস্কার জিতে হল বাঁচানোর আহ্বান জানান শন বেকার। বলেন, ‘হল বাঁচিয়ে রাখতে আমাদের লড়াই চালিয়ে যেতে হবে। হলে এসে সিনেমা দেখার প্রবণতা দিন দিন কমছে। আমরা যদি এই ধারার পরিবর্তন না করি, তাহলে আমাদের সংস্কৃতির একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ চিরতরে হারিয়ে যাবে।’

শন রবিন্সের পূর্বাভাস অনুযায়ী, ২০২৫ সালে মার্কিন বক্স অফিসে আয় সামান্য বাড়বে এবং ৯ বিলিয়ন ডলারের কাছাকাছি যেতে পারে। তবে কবে বক্স অফিস আগের অবস্থায় ফিরবে, সে সম্পর্কে এখনই নিশ্চিত করে কিছু বলা যাচ্ছে না। টিম রিচার্ডস মনে করেন, অ্যাভাটারের নতুন সিক্যুয়েলটি হলগুলোর জন্য বড় পরিবর্তনের সূচনা করবে। তিনি বলেন, ‘আমরা অ্যাভাটারকে সেই পরিবর্তনের সূচনা হিসেবে দেখছি। ২০২৬ সালে আরও অসাধারণ সব সিনেমা আসছে, যা ইন্ডাস্ট্রির জন্য সুসংবাদ বয়ে আনবে।’

২০২৫ সালে মুক্তি পেতে যাওয়া বড় ছবিগুলোর মধ্যে রয়েছে: মিশন ইম্পসিবল: দ্য ফাইনাল রেকনিং, যা সম্ভবত টম ক্রুজের মিশন ইম্পসিবল সিরিজের শেষ ছবি হতে চলেছে। ট্রেলারে ক্রুজের বলা ‘শেষবারের মতো’ শব্দ দুটি সেই ইঙ্গিত দিয়েছে বলেই মনে করা হচ্ছে। মিশন ইম্পসিবলের একই সময় মুক্তি পাবে ডিজনির লাইভ–অ্যাকশন লিলো অ্যান্ড স্টিচ।

জুনে মুক্তি পাবে ব্র্যাড পিট অভিনীত এফ ওয়ান, যেখানে তিনি একজন ফর্মুলা–১ রেসারের চরিত্রে অভিনয় করেছেন। জুলাইয়ে ওয়ার্নার ব্রাদার্সের নতুন সুপারম্যান আসছে, যা পরিচালনা করেছেন গার্ডিয়ান্স অব দ্য গ্যালাক্সির পরিচালক জেমস গান। সুপারম্যান চরিত্রে অভিনয় করেছেন ডেভিড করেনসওয়েট।

মার্ভেল স্টুডিওর থান্ডারবোল্টস দিয়ে মে মাসের শুরুতে গ্রীষ্মকালীন ব্লকবাস্টার মৌসুম শুরু হবে, আর জুলাইয়ের শেষে মুক্তি পাবে দ্য ফ্যান্টাস্টিক ফোর। নভেম্বর–ডিসেম্বরে ছুটির মৌসুমে মুক্তি পাবে মিউজিক্যাল হিট উইকেড–এর দ্বিতীয় পর্ব, অ্যানিমেটেড ফিল্ম জুটোপিয়া–২ এবং জেমস ক্যামেরনের অ্যাভাটার সিরিজের তৃতীয় ছবি অ্যাভাটার: ফায়ার অ্যান্ড অ্যাশ।

অ্যাভাটারের প্রথম পর্ব এখনো সর্বকালের সবচেয়ে বেশি আয় করা সিনেমার রেকর্ড ধরে রেখেছে।





Source link

এই বিষয়ের আরো সংবাদ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -spot_img

এই বিষয়ে সর্বাধিক পঠিত