জনপ্রিয় অভিনেত্রী ও মডেল সামিরা খান মাহি। তার আসল নাম ফারজানা ইয়াসমিন কলি। তবে বিনোদন জগতে পা রাখার পর ভক্তরা তাকে মাহি নামেই চেনেন। এ নামেই পেয়েছেন আকাশচুম্বী জনপ্রিয়তা। এই অভিনেত্রীর বর্তমান ব্যস্ততা ও নতুন বছরের নানা পরিকল্পনা নিয়ে কথা হয়েছে কালবেলার সঙ্গে। লিখেছেন মহিউদ্দীন মাহি
ছোট পর্দার ইন্ডাস্ট্রিতে বর্তমানে আপনি একজন ব্যস্ত অভিনেত্রী। বিষয়টি কেমন উপভোগ করছেন?
আলহামদুলিল্লাহ, ভালো উপভোগ করছি। ব্যস্ততা না থাকলে আসলে জীবন ভালো লাগে না। এ ছাড়া একজন আর্টিস্টের কাজের ব্যস্ততা না থাকলে তার জীবন বিষাদময় হয়ে যায়। আমি এ ব্যস্ততা এনজয় করছি।
নতুন বছরে কী কী পরিকল্পনা আছে?
কাজ নিয়েই অনেক পরিকল্পনা আছে। আর ভালো ভালো নাটকে অভিনয় করতে চাই। কারণ গল্পনির্ভর কাজগুলো করতে আমি পছন্দ করি। সে অনুযায়ী স্ক্রিপ্ট নির্বাচন করছি। এর বাইরে ওটিটিতেও নিয়মিত কাজের ইচ্ছা আছে। এর মধ্যে বেশ কয়েকটি ওটিটির কাজ নিয়ে কথা হয়েছে। আশা করছি শিগগির এগুলোর বিষয়ে দর্শকদের বিস্তারিত জানাতে পারব। ইনশাআল্লাহ ২০২৫ সালে ভালো কিছু হবে।
সামনে ভালোবাসা দিবস ও ঈদ। সব মিলিয়ে ব্যস্ততা কেমন?
এ সময়ে অনেক ব্যস্ততা থাকে। কারণ দিবসকেন্দ্রিক দর্শক আমাদের কাছে স্পেশাল কিছু দেখতে চায়। যার জন্য আমাদের পরিকল্পনা করে কাজ করতে হয়। এ ছাড়া টেলিভিশন ও ইউটিউব নাটকের দর্শক আলাদা হওয়াতে আমাদের কাজের মধ্যেও ভিন্নতা থাকে। সব মিলিয়ে এ সময়টিতে কাজের অনেক চাপ থাকে, যা সারা বছরের থেকে বেশি। অনেক সময় এমনও হয়, বাসায় যাওয়ারও সময় হয় না। এক শুটিং সেট থেকে আরেক শুটিংয়ে চলে যেতে হয়। এভাবেই চলছে বিগত কয়েক বছর ধরে। তবে উৎসবগুলোতে কাজের এমন ব্যস্ততা আমি উপভোগ করি।
আপনি একটি সুন্দরী প্রতিযোগিতা থেকে এসেছেন। তবে অনেকেই মনে করেন টিকটক থেকে আপনার অভিনয়ের পথ চলা শুরু। এ বিষয়টি নিয়ে একটু জানতে চাই…
আমি মনে করি এটি সবার ভুল ধারণা। কারণ আমি টিকটক শুরু করি কভিডের সময়। তখন সবার মতো আমিও ঘরে বসা ছিলাম। অবসর সময় কী করব ভেবে ভেবে একসময় টিকটক করতে শুরু করলাম। সে সময় প্ল্যাটফর্মটি থেকে আলহামদুলিল্লাহ ভালো সাড়া পাই; কিন্তু এর আগে আমি ২০১৪ সাল থেকেই মডেলিংয়ের সঙ্গে যুক্ত ছিলাম। তারপর কভিড শেষে আমার নাটকে কাজ করা শুরু হয়। তাই সবাই মনে করে আমি টিকটক থেকে এসেছি। তবে কাজের ব্যস্ততায় এখন আর টিকটক করার সময় হয় না।
আপনি এখন নাটকের বড় নাম। আজকের এই অবস্থানে আসার গল্পটা জানতে চাই…
নাটকে আমার শুরু হয় ২০২২ সালের শেষের দিকে। কভিড শেষ হওয়ার পর। তবে এর আগেও আমি কিছু নাটকে অভিনয় করেছি। সেগুলো প্রচারে সেভাবে আসেনি। কিন্তু আমি মাইদুল রাকিবের ‘গার্লস স্কোয়াড’ নামে একটি ওটিটিতে কাজ করার পর ব্যাপকভাবে পরিচিতি পাই। এ কাজটির পর নির্মাতাদের কাছ থেকেও একের পর এক কাজের অফার আসতে থাকে। এভাবেই আমার আজকের এ অবস্থান তৈরি হয়েছে।
মিডিয়াতে কাজের ক্ষেত্রে পারিবারিক কোনো প্রতিবন্ধকতা ছিল?
শুরুতে একটু ছিল। আমি সিলেটে বড় হয়েছি। এ ছাড়া আমার পরিবারে মিডিয়াতে কেউ নেই। শুরুতে মিডিয়াতে কাজ নিয়ে আমার পরিবারের একটু প্রতিবন্ধকতা ছিল। তবে এখন তারা আমার সফলতা নিয়ে গর্ব করে। ভালো কাজ করলে সবাই সমর্থন করবে—এটা আমি বিশ্বাস করি।
ক্যারিয়ারের শুরুর দিকে কেমন স্ট্রাগল করতে হয়েছে?
মডেলিংয়ের শুরুর সময় থেকে যদি বলি, তাহলে বলব স্ট্রাগল করতে হয়েছে। তবে নাটকে নাম লেখানোর পর আমার সেভাবে আর স্ট্রাগল করতে হয়নি। কারণ শুরুর কিছু কাজ আমাকে ইন্ডাস্ট্রিতে প্রতিষ্ঠিত হতে অনেক সহযোগিতা করেছে। যার মধ্যে ‘গার্লস স্কোয়াড’ অন্যতম।
ছোট পর্দায় আপনি একজন ব্যস্ত তারকা, সিনেমায় অভিনয়ের ইচ্ছা আছে?
যারা আর্টিস্ট, সবারই একটি পর্যায় বড় পর্দায় কাজের স্বপ্ন থাকে। আমিও ব্যতিক্রম নই, আমরও আছে। তবে অবশ্যই কাজটি মনের মতো করে আমি করতে চাই। যার জন্য যে বিষয়গুলো আমি গুরুত্ব দেব তা হচ্ছে, ভালো প্রোডাকশন এবং ভালো গল্প। এসব কিছু ঠিকঠাক ব্যাটে বলে হলে বড় পর্দায় অভিনয়ের ইচ্ছা আছে।
অভিনেত্রী না হলে কী হতেন?
ডাক্তার হতাম। কারণ মানুষের জন্য কিছু করতে পারলে আমি হৃদয় থেকে আনন্দ পাই।