বছরের শুরুতে গত ৭ জানুয়ারি রাজধানীর বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির পরীক্ষণ থিয়েটার হলে অনুষ্ঠিত হয়েছিল বিবর্তন সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের নাটক ‘ক্রীতদাস কথা’। প্রথম প্রদর্শনীতে সুধীজনের নজর কেড়েছিল নাটকটি। এবার একই মঞ্চে নাটকটির দ্বিতীয় প্রদর্শনীর আয়োজন করেছে বিবর্তন সাংস্কৃতিক কেন্দ্র। আজ সন্ধ্যা ৭টায় শিল্পকলার পরীক্ষণ থিয়েটার হলে মঞ্চস্থ হবে নাটকটি। এটি বিবর্তনের ১৭তম প্রযোজনা।
চীনা নাট্যকার লু স্যুনের বিখ্যাত গল্প ‘দ্য ওয়াইজ ম্যান, দ্য ফুল অ্যান্ড দ্য স্লেভ’ অবলম্বনে তৈরি হয়েছে ক্রীতদাস কথা। অমল রায়ের অনুবাদ থেকে নাট্যরূপ দিয়েছেন শাহীন রহমান। নাটকটির নির্দেশনা, সেট ডিজাইন ও আলোক নির্দেশনাও তাঁর।
বিংশ শতাব্দীতে কথাসাহিত্যিক লু স্যুনের হাত ধরেই গোড়াপত্তন ঘটেছিল চীনের আধুনিক সাহিত্যের। তৎকালীন সামন্তীয় সমাজে শ্রেণিবৈষম্য, দমন, নিপীড়ন, সামাজিক প্রথা ও প্রাচীন সাংস্কৃতিক মূল্যবোধের বিরুদ্ধে তাঁর সাহিত্যকর্ম হয়ে উঠেছিল শক্তিশালী হাতিয়ার। সমাজের আমূল পরিবর্তনে রাজনৈতিক সংগ্রামের পাশাপাশি বিপ্লবী ধারার সাহিত্য রচনাকে তিনি সাংস্কৃতিক লড়াইয়ের অংশ মনে করতেন। ক্রীতদাস কথা নাটকেও ফুটে উঠেছে সেই চিত্র।
বিবর্তনের সাধারণ সম্পাদক এবং এই নাটকের অভিনেতা মফিজুর রহমান লাল্টু বলেন, ‘প্রাচীন দাসপ্রথা কীভাবে এখনো টিকে আছে আমাদের মাঝে, সেই চিত্রই বিস্তৃত হয়েছে নাটকে। এখনো দেশের পোশাকশ্রমিক কিংবা চা-শ্রমিকেরা বাঁধা পড়ে আছেন দাসত্বের কঠিন শৃঙ্খলে। এই করপোরেট বাণিজ্যের জগতে আমাদের গলায় টাই বাঁধা আছে ঠিকই, কিন্তু সেটাও তো এক দাসত্বের শিকল যেন। বিবর্তন সাংস্কৃতিক কেন্দ্র ৪৬ বছর ধরে বাংলাদেশে গণসাংস্কৃতিক আন্দোলনের সংগ্রামী এক সংগঠন। রাষ্ট্রীয় ও সামাজিক অন্যায়ের বিরুদ্ধে বরাবরই সাহসী কণ্ঠ ছিল বিবর্তনের। সাংস্কৃতিক আন্দোলনের সেই পথ ধরেই লু স্যুনের এই ছোটগল্পকে মঞ্চনাটক হিসেবে তুলে ধরা হয়েছে দর্শকের সামনে।’
ক্রীতদাস কথা নাটকের বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেছেন মফিজুর রহমান লাল্টু, মাহফুজ হাসান, সোহাগ প্রমাণিক, বর্ণিল সপ্তর্ষি, গাজী আলাউদ্দীন, মারজিয়া প্রভা, আমিরুন নুজহাত মনীষা, তানিয়াহ্ মাহমুদা তিন্নি প্রমুখ। রূপসজ্জা ও কস্টিউম ডিজাইন করেছেন সাদিয়া তাবাসসুম বৃষ্টি। সংগীত করেছেন আমিরুন নুজহাত মনীষা।