Homeবিনোদনআক্ষেপ নিয়েই শুরু হচ্ছে ঈদের প্রস্তুতি

আক্ষেপ নিয়েই শুরু হচ্ছে ঈদের প্রস্তুতি


দেশের সিনেমা ইন্ডাস্ট্রি অনেক বছর ধরেই নিভুনিভু আলো নিয়ে বেঁচে আছে। যার অনেক কারণ রয়েছে। এর মধ্যে প্রধান একটি কারণ হচ্ছে সিনেমা সংকট। যেই সংকট বছরজুড়ে ব্যর্থ হচ্ছে দর্শক টানতে। যার কারণে লগ্নি ফেরতসহ লাভের দেখা পেতে সিনেমা প্রযোজকদের বড় একটি অংশ শুধু ঈদকেন্দ্রিক সিনেমা নির্মাণে ঝুঁকছে। এর ফলে গোটা বছর দেশের প্রান্তিক সিনেমা হল ব্যবসায়ীরা সম্মুখীন হচ্ছেন বিরাট আর্থিক ক্ষতির। এরপরও আক্ষেপ রেখেই শুরু হচ্ছে তাদের ঈদের প্রস্তুতি।

গোটা বছর ঢাকাই সিনেমা ইন্ডাস্ট্রি থেকে দেশের হল মালিকরা হাতে গোনা কয়েকটি নতুন সিনেমা পেয়ে থাকেন। যার মধ্যে অধিকাংশই তারকাহীন ও দুর্বল গল্পে নির্মিত হওয়ায় হল মালিকরা এই সিনেমাগুলো চালাতেই অনীহা প্রকাশ করেন। তাই মাসের পর মাস শুধু মাছি মেরে পুরোনো ছবি চালিয়ে তেল খরচ, কারেন্ট বিল পরিশোধ করে আসছে দেশের অনেক সিনেমা হল কর্তৃপক্ষ। এরপরও বছর ঘুরে ঈদ এলে দর্শকদের একটু ভালো পরিবেশে ছবি দেখানোর পরিবেশ তৈরিতে একটুও কার্পণ্য করেন না দেশের প্রান্তিক সিনেমা হল ব্যবসায়ীরা।

এদিকে উত্তরের জেলা রাজশাহীর ‘রাজ তিলক’ সিনেমা হলটি সাজ্জাদ হোসেন সাগর ভাড়া নিয়ে দীর্ঘসময় ব্যবসা করছেন। তবে আক্ষেপ নিয়ে তিনি জানালেন, ২০২৪ সালে মাত্র দুই থেকে তিনটি নতুন সিনেমা চালিয়েছেন তিনি। যাতে তার কোনো ব্যবসা তো হয়নি—উল্টো বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়েন তিনি। তবে ইচ্ছা আছে ঈদে ভালো ব্যবসা করার। যার জন্য নিজের সিনেমা হলটি এরই মধ্যে দর্শকদের জন্য প্রস্তুতের কাজ শুরু করেছেন তিনি। আক্ষেপ নিয়ে কালবেলাকে সাজ্জাদ বলেন, ‘আমি ১০ বছরের বেশি সময় ধরে সিনেমা ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত আছি। বিগত বছরে লাভের চেয়ে ক্ষতির পরিমাণই বেশি। এর কারণ হচ্ছে আমাদের সিনেমা দিতে পারছেন না প্রযোজক ও পরিচালকরা। যদি তারা আমাদের নতুন সিনেমা দিতে পারতেন, তাহলে আমরা বাঁচতে পারতাম। দুই ঈদ দিয়ে হল ব্যবসায়ীরা বাঁচতে পারবেন না। এরপরও আমরা ঈদ এলে কিছুটা আশায় থাকি। যে আশা নিয়ে হলের টুকটাক সংস্কারের কাজ করানো শুরু করেছি। তবে আমার ব্যক্তিগত অনুরোধের জায়গা থেকে সরকারকে বলতে চাই, যে দেশি হোক বিদেশি হোক আমাদের সিনেমা দেন। নাহলে আমরা বাঁচব না।’

এদিকে বরিশালের বিলাসবহুল ‘অভিরুচি’ সিনেমা হলের ব্যবস্থাপক সৈয়দ রেজাউল করিম কালবেলাকে বলেন, ‘ঈদের সিনেমা দিয়ে আমরা আর সারভাইভ করতে পারছি না। যার কারণে বরিশালে আমরাই টিকে আছি। বাকি হল ব্যবসায়ীরা অন্য ব্যবসায় চলে গেছেন। সিনেমা ভালোবেসে আর কতদিন টিকে থাকতে পারব জানি না। হল বাঁচাতে বছরজুড়ে সিনেমা লাগবে। দুই ঈদ আমাদের বাঁচাতে পারবে না। এরপরও ঈদ এলে আমরা আশা দেখি।’

দেশে বর্তমানে সক্রিয় হলের সংখ্যা ৭০-এর কাছাকাছি। ঈদ এলে বন্ধ থাকা হল ফের চালু করে ১০০ পার হয়। এরপর মালিকদের চাহিদায় থাকে ঢালিউড সুপারস্টার শাকিব খানের সিনেমা। তবে এবারের ঈদে হল মালিকদের জন্য নির্মাতারা প্রস্তুত করে রেখেছেন তারকা বহুল বেশ কয়েকটি সিনেমা। যার মধ্যে চাহিদায় সবচেয়ে এগিয়ে আছে নির্মাতা মেহেদি হাসান হৃদয় পরিচালিত ও মেগাস্টার শাকিব খান অভিনীত ‘বরবাদ’ সিনেমা। যার প্রচারণা এরই মাঝে শুরু হয়েছে। সম্প্রতি প্রকাশ পেয়েছে এর টিজার। বরবাদে শাকিবের বিপরীতে দ্বিতীয়বারের মতো দেখা যাবে কলকাতার অভিনেত্রী ইধিকা পালকে। এ ছাড়া বিভিন্ন চরিত্রে আরও অভিনয় করেছেন যিশু সেনগুপ্ত, মানব সচদেব, মিশা সওদাগরসহ অনেকে। একটি আইটেম গানে পারফর্ম করেছেন কলকাতার জনপ্রিয় অভিনেত্রী নুসরাত জাহান।

অন্যদিকে সিয়াম আহমেদ, শবনম বুবলী ও প্রার্থনা ফারদিন দীঘি অভিনীত ‘জংলি’ সিনেমাটিও রোজার ঈদে মুক্তির পরিকল্পনার কথা জানিয়েছেন নির্মাতা এম রাহিম। এর মধ্যে শুরু হয়েছে ছবিটির প্রচার-প্রচারণা। ভালোবাসা দিবসকে সামনে রেখে ১২ ফেব্রুয়ারি ইউটিউবে আসে ছবির প্রথম গান ‘জনম জনম’। রমজানের প্রথম সপ্তাহ থেকেই তিনি হল বুকিংয়ের কাজ শুরু করবেন বলেও জানা গেছে। এ ছাড়া মুক্তির তালিকায় ‘জ্বীন ৩’ ও আসবে রোজার ঈদে। এই ছবির আগের দুই কিস্তি ভালো ব্যবসা করেছিল। এবারও আশাবাদী প্রতিষ্ঠানটির কর্ণধার আব্দুল আজিজ। কামরুজ্জামান রোমানের ‘জ্বীন ৩’, সঞ্জয় সমদ্দারের ‘ইনসাফ’ ও নির্মাতা মিজানুর রহমান লাবুর ‘আতরবিবিলেন’ সিনেমাটি। তাই বোঝাই যাচ্ছে এবারের ঈদেও সিনেমাটিক যুদ্ধে ভালোই লড়াই হবে নির্মাতাদের মাঝে। সেইসঙ্গে হল মালিকদের হাতেও থাকবে পছন্দ অনুযায়ী সিনেমা চালানোর সুযোগ।





Source link

এই বিষয়ের আরো সংবাদ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -spot_img

এই বিষয়ে সর্বাধিক পঠিত