গত জুলাই মাস থেকেই ছাত্র আন্দোলনের জেরে বাংলাদেশে অশান্ত অবস্থার প্রেক্ষিতে বন্ধ ভারত এবং পড়শি এই দেশের মধ্যে ট্রেন চলাচল। তখনই অনির্দিষ্ট কালের জন্য বন্ধ করে দেওয়া হয় কলকাতা-ঢাকা মৈত্রী এক্সপ্রেস। একই সঙ্গে বন্ধ হয়ে যায় খুলনা এবং কলকাতার মধ্যে চলাচলকারী বন্ধন এক্সপ্রেস এবং নিউ জলপাইগুড়ি ও ঢাকার মধ্যে চলাচলকারী মিতালি এক্সপ্রেসও। কবে থেকে এই ট্রেনগুলি আবার চালু হবে, তা নিয়ে এখনও পর্যন্ত বাংলাদেশ সরকারের তরফে কিছু জানানো হয়নি।বাংলাদেশ এবং ভারতের মধ্যে বহু বছর ট্রেন চলাচল বন্ধ ছিল। ২০০৮ সালে তা আবার শুরু হয়। দুই দেশের মধ্যে চলাচল করে মৈত্রী এক্সপ্রেস। কলকাতায় চিকিৎসা করাতে আসা এবং তারপরে ফিরে যাওয়ার জন্য বাংলাদেশের বাসিন্দাদের জন্য এই ট্রেনই ছিল বড় ভরসা। কিন্তু আপাতত তা স্থগিত হয়ে রয়েছে। জানা গিয়েছে, যে দিন এই আন্দোলন শুরু হয়, সে দিনই ঢাকা যাওয়ার পরে আটকে গিয়েছিল মৈত্রী এক্সপ্রেস।
এ দিকে, শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পরে বাংলাদেশে বাড়ছে ভারত বিরোধিতার সুর। বাংলাদেশ এবং ভারতের সম্পর্ক নিয়ে টানাপড়েন চলছে। এই পরিস্থিতিতে ভারত ‘ওয়েট অ্যান্ড সি’ নীতি গ্রহণ করেছে বলে সূত্রের খবর। অন্য দিকে, বাংলাদেশকে ডিম, পেঁয়াজ এবং অন্যান্য জিনিস রপ্তানি করছে ভারত। কিন্তু দুই দেশের মধ্যে ট্রেন চলাচল আবার কবে শুরু হবে, তা নিয়ে এখনও স্পষ্ট কিছু জানানো হয়নি।
এখন বাংলাদেশিদের ভিসা দেওয়ার ক্ষেত্রে নীতির বদল করেছে ভারত। শুধুমাত্র জরুরি ভিত্তিতে ‘মেডিক্যাল ভিসা’ দেওয়া হচ্ছে বলে জানা গিয়েছে ভারতীয় দূতাবাস এবং বিদেশ মন্ত্রক সূত্রে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে আগের মতোই ভিসা দেওয়া শুরু হবে বলেও জানানো হয়েছে।
দু’দেশের কূটনৈতিক সম্পর্ক নিয়ে ওয়াকিবহাল মহলের একাংশের বক্তব্য, বাংলাদেশে অশান্ত অবস্থার প্রেক্ষিতে প্রথমে ট্রেন চলাচল সাময়িক বন্ধের পক্ষপাতী ছিল ভারতই। যদিও পরবর্তী সময়ে ভারত এই রেল চলাচল শুরুর বিষয়ে উদ্যোগী হলেও এখন বাংলাদেশ সরকার কিছুটা ‘বেঁকে’ বসেছে। বাংলাদেশের রেল কর্তারা মনে করছেন, ভারতের ভিসা ইস্যু স্বাভাবিক না হলে ট্রেনে যাত্রী পাওয়া যাবে না। যাত্রীর অভাবে ইতিমধ্যে দু’দেশের সরকারি-বেসরকারি উড়ান চলাচলের সংখ্যাও কমিয়ে আনা হয়েছে।
এই প্রেক্ষাপটে দুই দেশের মধ্যে ট্রেন চলাচল আবার কবে শুরু হবে, তা এখনও স্পষ্ট নয়। পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক কৌশিক মিত্র জানান, বাংলাদেশের কাছ থেকে সবুজ সংকেত পাওয়া গেলেই দুই দেশের মধ্যে ট্রেন চলাচল আবার শুরু হবে।