Homeদেশের গণমাধ্যমেহাটহাজারীতে মাদ্রাসা ছাত্রদের মানববন্ধনে হামলা-গুলি, আহত ৪

হাটহাজারীতে মাদ্রাসা ছাত্রদের মানববন্ধনে হামলা-গুলি, আহত ৪


চট্টগ্রামের হাটহাজারীর বুড়িশ্চর জিয়াউল উলুম কামিল মাদ্রাসায় সম্প্রতি সংঘটিত সন্ত্রাসী হামলার প্রতিবাদে সাবেক ও বর্তমান শিক্ষার্থীদের ডাকা মানববন্ধনে গুলি এবং হামলা চালানোর ঘটনা ঘটেছে। এতে চার জন শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন। তাদের প্রাথমিকভাবে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। 

রবিবার (৯ ফেব্রুয়ারি) দুপুর ১২টার দিকে উপজেলার বুড়িশ্চর নজুমিয়াহাট বাজারের চট্টগ্রাম-কাপ্তাই সড়কের ওপর মানববন্ধনে বক্তব্য চলাকালীন এ ঘটনা ঘটে। পরে হামলার প্রতিবাদে দুই কিলোমিটার দূরে নজুমিয়া হাট থেকে কাপ্তাই সড়ক হয়ে মিছিল নিয়ে মদুনাঘাট পুলিশ তদন্তকেন্দ্রের সামনে গিয়ে বিক্ষোভ করেন মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা। বিক্ষোভের কারণে কাপ্তাই সড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এতে লোকজনকে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়। পরে বেলা দেড়টার দিকে মদুনাঘাট পুলিশ তদন্তকেন্দ্রের পরিদর্শক মুহাম্মদ আশরাফ উদ্দিন হামলাকারীদের গ্রেফতারের আশ্বাস দিলে শিক্ষার্থীরা সড়ক ছেড়ে ফিরে যান। 

মানববন্ধনের আয়োজক বুড়িশ্চর জিয়াউল উলুম কামিল মাদ্রাসার সাবেক ও বর্তমান শিক্ষার্থী পরিষদের সমন্বয়ক এনামুল করিম বলেন, ‘চট্টগ্রামসহ সারা দেশে এই মাদ্রাসার সুনাম আছে। মাদ্রাসার অধ্যক্ষ এম এম ফরিদ উদ্দিন একজন সার্বজনীন গ্রহণযোগ্য আলেম। ৫ আগস্ট রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর বিএনপি-জামায়াতের একটি অংশ মাদ্রাসায় আধিপত্য বিস্তারের চেষ্টা করছে। এ কারণে ষড়যন্ত্র করে অধ্যক্ষকে পদত্যাগ করাতে তারা অরাজকতা সৃষ্টি করছে। প্রশাসনকে এসব ঘটনা খতিয়ে দেখে দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য আমরা ছাত্র পরিষদ আহ্বান জানিয়েছি। আজকের কর্মসূচিতে হামলায় চার শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন। তবে কেউ গুলিবিদ্ধ হয়নি। হকিস্টিক ও লাঠিসোঁটার আঘাতে আহত হয়েছেন তারা।’

মাদ্রাসার কয়েকজন শিক্ষার্থী জানান, তাদের মাদ্রাসায় দেড় হাজারের বেশি শিক্ষার্থী রয়েছেন। গত বৃস্পতিবার দুপুরে কয়েকজন লোক হঠাৎ মাদ্রাসায় ঢুকে শিক্ষার্থীদের বের করে দেন ক্লাস থেকে। তাদের হামলায় মাদ্রাসার প্রভাষক আবু তাহের ও আব্দুর রহিম আহত হন। আহতদের স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে হামলাকারীরা মাদ্রাসার ২০-৩০ জন শিক্ষার্থীকে জোর করে লাইনে দাঁড় করিয়ে বিক্ষোভ করান। ওই মাদ্রাসার অধ্যক্ষ এস এম ফরিদ উদ্দিনের বিরুদ্ধে স্লোগান দেওয়া হয় এবং তার পদত্যাগ দাবি করা হয়। 

সেদিনের হামলার প্রতিবাদে রবিবার দুপুরে প্রতিবাদ ও মানববন্ধনের আয়োজন করে মাদ্রাসার প্রাক্তন ও বর্তমান শিক্ষার্থী সমন্বয় পরিষদ। বেলা ১১টার দিকে মানববন্ধন শুরু হয়। বেলা সাড়ে ১১টার দিকে হঠাৎ ১০ থেকে ১২ জন লোক প্রকাশ্যে হকিস্টিক, লােহার রড হাতে মানববন্ধনে হামলা চালায়। ব্যানার কেড়ে নিয়ে কয়েকজন শিক্ষার্থীকে মারধর করে তারা। পরে ফাঁকা গুলি ছুড়ে পালিয়ে যায়।

এ প্রসঙ্গে মাদ্রাসার অধ্যক্ষ এস এম ফরিদ উদ্দিন বলেন, ‘এই মাদ্রাসার সুনাম নষ্ট করে এটিকে ধ্বংস করে দিতে আমাকে অধ্যক্ষের পদ থেকে সরিয়ে দিতে চাচ্ছে একটি মহল। আমার বিরুদ্ধে কোনও অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ নেই। মূলত ওই চক্রটি মাদ্রাসার নিয়ন্ত্রণ নিতে চায়। তারা রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী।’

মদুনাঘাট পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের পরিদর্শক আশরাফ উদ্দিন বলেন, ‘একটি পক্ষ ওই মাদ্রাসায় বিশৃঙ্খলা তৈরি করতে চায়। আমরা চেষ্টা করছি যেন সংঘাত না হয়। বৃহস্পতিবার কিছু লোকজন গিয়ে ঝামেলা করেছিল। এর প্রেক্ষিতে আজকে শিক্ষার্থীরা মানববন্ধন করেন। এতে হামলার ঘটনা ঘটে। মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষকেও বলা হয়েছে এ বিষয়ে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য। থানায় মামলা কিংবা অভিযোগ দিলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’





Source link

এই বিষয়ের আরো সংবাদ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -spot_img

এই বিষয়ে সর্বাধিক পঠিত