Homeদেশের গণমাধ্যমেস্ববিরোধী কথাবার্তায় রাষ্ট্রপতির পদে থাকার যোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তৈরি হয়: আসিফ নজরুল 

স্ববিরোধী কথাবার্তায় রাষ্ট্রপতির পদে থাকার যোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তৈরি হয়: আসিফ নজরুল 


আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল বলেছেন, ৫ আগস্ট উনি নিজের মুখে ভাষণে উনার কাছে পদত্যাগপত্র (সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার) দেওয়া এবং গ্রহণ করার কথা বলেছেন। একের পর এক কার্যাবলির মধ্য দিয়ে পুরো জাতির কাছে এটি স্পষ্ট যে উনি পরিষ্কার করেছেন, প্রধানমন্ত্রী পদত্যাগ করেছেন এবং উনি তা গ্রহণ করেছেন। আজ যদি উনি বলেন– প্রধানমন্ত্রী পদত্যাগপত্র দেননি, এতদিন পরে, প্রায় আড়াই মাস পরে, তাহলে এটা এক ধরনের স্ববিরোধিতা হয়। এটায় উনার শপথ লঙ্ঘন হয় এবং এই পদে উনার আর থাকার যোগ্যতা আছে কিনা সেটি নিয়ে প্রশ্ন তৈরি হয়।

সোমবার (২১ অক্টোবর) সচিবালয়ে রাষ্ট্রপতির বক্তব্য নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।

আসিফ নজরুল বলেন, রাষ্ট্রপতি বলেছেন উনি সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগপত্র পাননি। এটা একটি মিথ্যাচার। এটা হচ্ছে উনার (রাষ্ট্রপতির) শপথ লঙ্ঘনের শামিল। কারণ উনি নিজেই ৫ আগস্ট রাত ১১টা ২০ মিনিটে, পেছনে তিন বাহিনীর প্রধানকে নিয়ে জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে বলেছেন, ‘সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমার কাছে পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন’ এবং উনি তা গ্রহণ করেছেন। এরপর রাষ্ট্রপতির কাছ থেকে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের কাছে জানতে চাওয়া হয়––এই পরিস্থিতিতে করণীয় কী আছে? সংবিধানের ১০৬ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী উপদেশমূলক এখতিয়ার প্রয়োগ করে জানতে চাওয়া হয়। এটার পরিপ্রেক্ষিতে তৎকালীন সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি এবং অন্যান্য সব বিচারক মিলে একটি মতামত দেন।

সেই মতামতের প্রথম লাইন হচ্ছে– ‘দেশের বর্তমান উদ্ভুত পরিস্থিতিতে যেহেতু প্রধানমন্ত্রী পদত্যাগ করেছেন…’ । এই যে প্রধানমন্ত্রী পদত্যাগ করেছেন এবং রাষ্ট্রপতি জাতীয় সংসদ ভেঙে দিয়েছেন, এর প্রেক্ষিতে যে একটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করা যায়, সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের মতামতের ভিত্তিতে একটি নোট আমরা মন্ত্রণালয়ের দফতর থেকে রাষ্ট্রপতির কাছে পাঠাই। এই অভিমত রাষ্ট্রপতি দেখেছেন এবং গ্রহণ করেছেন। এরপর উনি নিজে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করেছেন, যুক্ত করেন আসিফ নজরুল।

তিনি বলেন, বাংলাদেশের সংবিধানে বলা হয়েছে, আপনার যদি মানসিক এবং শারীরিক সক্ষমতা না থাকে বা আপনি যদি গুরুতর অসদাচরণ করেন, তখন রাষ্ট্রপতি পদে থাকতে পারেন কিনা সেটা নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার সুযোগ আমাদের সংবিধানে আছে।

তিনি আরও বলেন, একজন সর্বোচ্চ পদে থাকা মানুষ পুরো জাতির সামনে ভাষণ দিয়ে পদত্যাগের বিষয়ে জানিয়ে, দেশের সর্বোচ্চ আদালত থেকে অভিমত নেওয়ার পরও উনি কীভাবে এটা বলতে পারেন এটি আমার বোধগম্য না। এখন উনার স্ববিরোধী কথাবার্তা বলার কোনও সুযোগ নেই। যদি তিনি তার বক্তব্যে অটল থাকেন তাহলে উনি নিজ পদে থাকার যোগ্য আছেন কিনা সেটি আমাদের উপদেষ্টামণ্ডলীর সভায় ভেবে দেখতে হবে।

পদত্যাগপত্র সরকারের কাছে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে আসিফ নজরুল বলেন, পদত্যাগ উনি করার কথা রাষ্ট্রপতির কাছে। রাষ্ট্রপতির দফতরে পদত্যাগপত্র থাকার কথা এবং বাংলাদেশের সংবিধান অনুযায়ী এটি নিয়ে কোনও আদালতে প্রশ্ন তোলারও সুযোগ নাই। এখন উনি যদি বলেন পদত্যাগপত্র নাই, তাহলে পদত্যাগপত্র উনি কী করেছেন আপনারা সেটা উনাকেই জিজ্ঞেস করবেন।

উল্লেখ্য, দৈনিক মানবজমিন পত্রিকার প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরীকে দেওয়া এক বিশেষ সাক্ষাৎকারে রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন বলেছেন, তিনি শুনেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদত্যাগ করেছেন। কিন্তু তার কাছে এ সংক্রান্ত কোনও দালিলিক প্রমাণ বা নথিপত্র নেই। সাক্ষাৎকারটি গত শনিবার (১৮ অক্টোবর) পত্রিকার রাজনৈতিক ম্যাগাজিন সংস্করণ ‘জনতার চোখ’-এ প্রকাশিত হয়েছে।

আরও পড়ুন- শেখ হাসিনার পদত্যাগপত্র আমার কাছে নেই: রাষ্ট্রপতি





Source link

এই বিষয়ের আরো সংবাদ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -spot_img

এই বিষয়ে সর্বাধিক পঠিত