রাজশাহীর বাগমারার তাহেরপুরে এক স্কুলশিক্ষককে আটক রেখে মারধর করে চাঁদা আদায় ও ফাঁকা স্ট্যাম্পে সই নেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। পুলিশ ঘটনার সঙ্গে জড়িত অভিযোগে দুই যুবককে আটক করেছে। তাদের গ্রেফতার দেখিয়ে সোমবার (৬ জানুয়ারি) আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
গ্রেফতার দুজন হলেন তাহেরপুর চৌকিরপাড়া গ্রামের শাহিনুর ইসলাম (২৯) ও আলমগীর হোসেন (২৫)। ঘটনার সঙ্গে জড়িত অন্যদেরও ধরার জন্য চেষ্টা চলছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
বাগামারা থানার তাহেরপুর পুলিশ তদন্তকেন্দ্রের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা উপপরিদর্শক (এসআই) সোহাইল হোসেন বলেন, চাঁদার টাকা, সোনা ও চেক উদ্ধারের পাশাপাশি অন্যদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। দুপুর ১২টায় গ্রেফতার দুই যুবককে আদালতে পাঠানো হয়েছে। ঘটনার পর থেকে ওই শিক্ষক মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছেন। তিনি স্ত্রীসহ তাহেরপুরে থাকতেন। তাকে মারধরে জড়িত যুবকরা একটি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে জড়িত বলে ফেসবুকে প্রচার চালানো হচ্ছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, উপজেলার হামিরকুৎসা ইউনিয়নের অর্জুনপাড়া উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আক্কাছ আলীকে (সাধন) গত শনিবার রাতে অপহরণ করে তাহেরপুর এলাকার শাহিনুর ইসলাম, আলমগীর হোসেনসহ ১০ তরুণ ও যুবক। তাকে তারা অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে মোটা অঙ্কের চাঁদা দাবি করে। চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানালে ঘরে আটক রেখে মারধর করে অপহরণকারীরা। একপর্যায়ে তার কাছে থাকা ১৫ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেওয়া হয়। পরে বিকাশের মাধ্যমে পরিবারের কাছ থেকে আরও ১২ হাজার টাকা নেয় অপহরণকারীরা। অপহরণকারীদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে তাদের দুই ভরি সোনা, ৬০০ টাকা মূল্যের দুটি নন-জুডিশিয়াল স্ট্যাম্প এবং ফাঁকা চেকে সই নিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়।
এরপর বিষয়টি পুলিশকে জানান আক্কাছ আলী। রবিবার তিনি বাদী হয়ে সাত জনের বিরুদ্ধে থানায় মামলা করেন। রাতেই পুলিশ অভিযান চালিয়ে মামলার প্রধান দুই আসামিকে নিজ নিজ বাড়ি থেকে গ্রেফতার করে।
ওই শিক্ষকের স্বজনেরা জানান, আক্কাছ আলী আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন। গত ৫ আগস্টের পর তিনি প্রকাশ্যে চলাফেরা করতেন না। অপহরণকারীরা চাঁদা দাবি করে আসছিলেন। মারধরের শিকার হওয়ার পর থেকে তিনি মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছেন। মুঠোফোন বন্ধ করে রেখেছেন। এ কারণে তার সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি।