জার্মান কূটনীতিকরা সিরিয়ার অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতিনিধিদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন। বসতে চাচ্ছেন সরাসরি আলোচনায়। মঙ্গলবার (১৭ ডিসেম্বর) আনাদোলু এজেন্সি এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।
এর মধ্য দিয়ে বাশার আল আসাদের পতনের পর প্রথমবার অভ্যুত্থানকারীদের সঙ্গে সরাসরি আলোচনায় বসতে চলেছেন জার্মান কূটনীতিকরা।
তথ্য বলছে, জার্মান কূটনীতিকরা হায়াত তাহরির আল শাম (এইচটিএস) নেতা আহমেদ আল শারা নিযুক্ত নতুন সরকারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা ও মন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করবেন।
মঙ্গলবার সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কে অনুষ্ঠিতব্য আলোচনাটি জার্মান কর্মকর্তাদের এবং নতুন সিরিয়ার প্রশাসনের মধ্যে প্রথম উচ্চ-পর্যায়ের যোগাযোগের প্রতিনিধিত্ব করে।
জার্মান পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সূত্র জার্মান পত্রিকা বিল্ডকে বলেছে, সিরিয়ায় একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক ক্ষমতা স্থানান্তর প্রক্রিয়া এবং সংখ্যালঘুদের সুরক্ষার ওপর আলোচনা হবে। জার্মান প্রতিনিধিদলে ফেডারেল অর্থনৈতিক সহযোগিতা ও উন্নয়ন মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধি থাকবেন। বৈঠকে সম্ভাব্য মানবিক ও উন্নয়ন সহায়তার বিষয়েও আলোচনা হতে পারে।
সিরিয়ার অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে আলোচনা সফল হলে দামেস্কে জার্মান দূতাবাস পুনরায় চালু করার প্রস্তুতি শুরু করা হবে। কর্মকর্তারা ইতোমধ্যে খালি পড়ে থাকা দূতাবাস ভবনটি পরিদর্শন করছেন। তারা ধারণা করছেন, আসাদ সরকার ভবনটিতে নজরদারি ডিভাইস স্থাপন করে থাকতে পারে।
গেল ৮ ডিসেম্বর বিদ্রোহীদের টানা ১২ দিনের আকস্মিক অভিযানে দেশ ছেড়ে পালান দীর্ঘ দুই দশকের বেশি সময় ধরে স্বৈরশাসন চালানো বাশার আল আসাদ। তারপরই ভেঙে পড়ে সিরিয়ার সামরিক বাহিনীর কমান্ড।
আসাদ দেশ ছাড়ার পর ক্ষমতার দখল যায় হায়াত আল তাহরির আল শাম তথা এইচটিএস নামে একটি সশস্ত্র গোষ্ঠীর হাতে। এ গোষ্ঠীটির ইচ্ছাতেই অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হয়েছে এবং তাদের ইশারাতেই বর্তমানে সিরিয়ার নীতি-নির্ধারিত হচ্ছে।
এদিকে ক্ষমতার পালাবদলের পর বিভিন্ন স্থানে আসাদ বাহিনীর সেনাদের আত্মসমর্পণের নির্দেশ দেয় এইচটিএস। সেই ঘোষণা মোতাবেক সিরিয়ার পশ্চিমাঞ্চলীয় প্রদেশ টারতুসের আসাদের রাজনৈতিক দল বাথ পার্টির আঞ্চলিক সদরদপ্তরে অস্ত্র জমা দিতে আসেন সাবেক সেনা সদস্যরা। সেখানে অস্ত্র জমা নেওয়ার কাজ করছে স্থানীয় সশস্ত্র গোষ্ঠী আহরার আল শাম। এর আগে, আসাদ বাহিনীর সেনাসদস্য ও আসাদ সমর্থিত সশস্ত্র গোষ্ঠীর যোদ্ধাদের তুরতুসে বাথ পার্টির কার্যালয়ে নিজেদের অস্ত্র জমা দয়ার নির্দেশনা দেয় গোষ্ঠীটি।
সিরিয়ান সেনাবাহিনী একজন কর্মকর্তা, সাবেক মেজর আলি হাবাবা গণমাধ্যমকে বলেন, বিদ্রোহীরা যখন ক্ষমতা দখল করতে আসে তখন আমি দারা শহরে দায়িত্বরত ছিলাম। তারা কোনো প্রকার রক্তপাত ছাড়াই আমাদের সরে যেতে নির্দেশ দেয়। আমরাও কোনো লড়াই না করে সেনা প্রত্যাহার করি। এখন এখানে এসেছি বিষয়গুলো মীমাংসা করতে, আমরা আশা করি দেশের জন্য এটি একটি ভালো পদক্ষেপ হবে।
বিদ্রোহীরা ক্ষমতা দখল করার পর সিরিয়ার অবস্থা ভালো বলেও মন্তব্য করেন সাবেক সেনাসদস্যরা। আসাদ বাহিনীর সেনারা অস্ত্র সমর্পণ ও মীমাংসা বিষয়ে সহযোগিতা করছে বলে জানান আহরার আল শামের কর্মকর্তারা।