Homeদেশের গণমাধ্যমেসমন্বয়ক পরিচয়ে কলেজছাত্রকে আটকে মুক্তিপণ দাবি, অতঃপর...

সমন্বয়ক পরিচয়ে কলেজছাত্রকে আটকে মুক্তিপণ দাবি, অতঃপর…


রাজশাহী সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটনের পরিত্যক্ত বাড়িতে সমন্বয়ক পরিচয়ে এক কলেজছাত্রকে আটকে রেখে মুক্তিপণ আদায়ের চেষ্টা করেছেন তিন যুবক।

বৃহস্পতিবার (১৬ জানুয়ারি) রাত সাড়ে ৮টার দিকে খবর পেয়ে পুলিশ নগরের উপশহরের ওই বাড়ি থেকে কলেজছাত্রকে উদ্ধার করে। এ সময় তিনজনকে আটক করে থানায় নিয়ে যায় পুলিশ।

আটক তিনজন হলেন- চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার কানসাট এলাকার শীষ মোহাম্মদের ছেলে শাহাদাত হোসেন (২৭)। তিনি রাজশাহী কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী। নাটোর সদরের সাইফুল ইসলামের ছেলে জাহিদুল ইসলাম (২০)। তিনি বাংলাদেশের পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থী ও নাটোরের কানাইখালী এলাকার তোজাম্মেল হোসেনের ছেলে তাহসান হোসেন আকাশ (২১)। তিনি শহীদ বুদ্ধিজীবী সরকারি কলেজের শিক্ষার্থী।

ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর নাম ফাহিম হোসেন জীম (১৭)। তিনি রাজশাহী নিউ গভর্মেন্ট ডিগ্রি কলেজের প্রথম বর্ষের ছাত্র।

ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী ফাহিম হোসেন জীম বলেন, আন্দোলনের সময় শেখ হাসিনার পদত্যাগ পর্যন্ত আমি আন্দোলনে ছিলাম। কিছুদিন ধরে আমাকে বার বার কল করা হচ্ছিল। বলা হচ্ছিল, আমি নাকি ছাত্রলীগ করি। আমি নগর ভবনের সামনে ছিলাম। সেখান থেকে আমাকে তুলে আনা হয়েছে। আনার পরে মারধর করে। বলে, আমার সঙ্গে নাকি ছাত্রলীগের যোগাযোগ আছে। তারা আমার কাছে চাঁদাও দাবি করেছিল। পরে আমি আমার দুজন বন্ধুকে ডাকলাম। আমার বন্ধুরা এসে লোকজন ডেকে আমাকে উদ্ধার করেছে।

জীমকে উদ্ধারে গিয়েছিলেন মহানগর ছাত্রদলের সাবেক সহ-প্রচার সম্পাদক আজিজুর রহমান কাফি। তিনি বলেন, আমরা খবর পাই যে সাবেক মেয়রের পরিত্যক্ত বাড়ির গ্যারেজে এক ছাত্রকে আটকে রেখে নির্যাতন করা হচ্ছে। তার কাছে মুক্তিপণ দাবি করা হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, আমরা গিয়ে দেখি, ওই ছাত্রকে গ্যারেজে অন্ধকারের মধ্যে আটকে রাখা হয়েছে। আমি ওই তিনজনের পরিচয় জানতে চাই। তখন তারা নিজেদের সমন্বয়ক পরিচয় দেয়। তখন বলে, ওপরের নির্দেশ আছে এ ছেলেকে ধরার জন্য। তার বন্ধু ছাত্রলীগ করে। একে ধরলে তার বন্ধুকে পাওয়া যাবে। আমি তাদের কাছে ওপরের নির্দেশটিই দেখতে চাই। কিন্তু তারা কোনো নির্দেশনা দেখাতে পারেনি। এরই মধ্যে পুলিশ চলে আসে। পুলিশ তাদের নিয়ে গেছে।

ছাত্রদলের সাবেক এ নেতা বলেন, এরা যে ছেলেটিকে ধরে আনে সে ছাত্রলীগ না। মোবাইলে ছবি দেখলাম সে নিজেই আন্দোলনে ছিল। ছেলেটির কাছে প্রথমে দেড় লাখ এবং পরে এক লাখ টাকা দাবি করেছিল। জিজ্ঞাসাবাদের একপর্যায়ে ওই তিনজন নিজেদের তাহাস নূর নামে একজনের লোক বলে পরিচয় দেয়। তাহাস ৫ আগস্টের পর শিক্ষার্থীদের নিয়ে নগর ভবন পাহারার দায়িত্বে ছিলেন।

তাহাস নূর রাজশাহী কলেজের সাবেক শিক্ষার্থী। যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমি নাগরিক কমিটির প্রতিনিধি। ওই তিনজন আন্দোলনের সময় আমার সঙ্গে ছিল। তারা একসঙ্গে নগর ভবন পাহারা দিয়েছে। আটককৃতরা জানায় যে, একজন ছাত্রলীগকে ধরেছে। তখন আমি তাকে পুলিশে দেওয়ার জন্য বলেছি। পরে কি হয়েছে সেটা আমি বলতে পারছি না।

আটকের সময় শাহাদাত হোসেন মুক্তিপণ আদায়ের অভিযোগ অস্বীকার করে সাংবাদিকদের বলেন, আমি কোনো টাকা-পয়সা দাবি করিনি। আমি শুধু ওকে (জীমকে) বলেছি, তোমার বন্ধু ছাত্রলীগ করে, তাকে এনে দাও। তারপর তুমি চলে যাও। অন্ধকারে পরিত্যক্ত বাসায় কেন, এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, যখন আসি তখন অন্ধকার ছিল না।

নগরের বোয়ালিয়া থানার ওসি মেহেদী মাসুদ কালবেলাকে বলেন, শুনেছি সমন্বয়ক পরিচয়ে এক কলেজছাত্রকে সাবেক মেয়রের পরিত্যক্ত বাসায় আটকে রাখা হয়েছিল। পুলিশ গিয়ে ছেলেটিকে উদ্ধার করেছে। তিনজনকে থানায় আনা হয়েছে। তাদেরকে জিজ্ঞাসাবাদ করে প্রয়োজনীয় আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।





Source link

এই বিষয়ের আরো সংবাদ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -spot_img

এই বিষয়ে সর্বাধিক পঠিত