মেট্রোরেল পরিচালনায় প্রথমবারের মতো দায়িত্ব পেলেন এই খাতে বৈশ্বিক অভিজ্ঞতাসম্পন্ন ফারুক আহমেদ নামে এক প্রকৌশলী। মঙ্গলবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) মেট্রোরেল নির্মাণ ও পরিচালনায় নিয়োজিত রাষ্ট্রায়ত্ত কোম্পানি ডিএমটিসিএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের (এমডি) দায়িত্ব নিয়েছেন তিনি।
আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেয়। এরপর মেট্রোরেল পরিচালনাকারী ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানির (ডিএমটিসিএল) এমডি নিয়োগে আন্তর্জাতিক বিজ্ঞপ্তি দেয় সড়ক পরিবহন মন্ত্রণালয়। এই পদে নিয়োগ পেতে দেশি-বিদেশি ৭৬ জন আবেদন করেন।
জানা গেছে, অস্ট্রেলিয়া, ভারত, সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত ও হংকং— এই পাঁচ দেশে মেট্রোরেল নির্মাণ ও পরিচালনায় কাজ করার অভিজ্ঞতা আছে ফারুক আহমেদের। তিনি ৩৭ বছর দেশে-বিদেশে বড় অবকাঠামো নির্মাণ ও পরিচালনার বিভিন্ন পর্যায়ে কাজ করেছেন। এর মধ্যে ২৫ বছরের অভিজ্ঞতা মেট্রোরেল পরিচালনা ও পরিবহন অবকাঠামো প্রকল্পে।
ফারুক আহমেদ এর আগে ভারতের উত্তর প্রদেশে মালামাল পরিবহনের জন্য ৩ হাজার ৭০০ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের বিশেষায়িত মহাসড়ক নির্মাণ প্রকল্পে কর্মরত ছিলেন। তারও আগে কলকাতা মেট্রোরেলের ইস্ট-ওয়েস্ট লাইনে কাজ করেছেন।
এমডি নিয়োগের জন্য নাম বাছাই কমিটি নিশ্চিত হয়েছে যে মেট্রোরেল নির্মাণ, পরিচালনা, নকশা প্রণয়ন, ঠিকাদারের সঙ্গে দর-কষাকষিসহ নানা বিষয়ে ফারুক আহমেদের বিস্তর অভিজ্ঞতা রয়েছে।
জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় ক্ষতিগ্রস্ত হয় মিরপুর-১০ ও কাজীপাড়া মেট্রোরেল স্টেশন। এ দুটি স্টেশন চালু করার ক্ষেত্রেও যুক্ত ছিলেন ফারুক আহমেদ। তখন আওয়ামী লীগ সরকার বলেছিল, ওই দুটি স্টেশন চালু করতে এক বছর সময় লাগতে পারে। খরচ হতে পারে সাড়ে ৩০০ কোটি টাকার মতো।
পরে অন্তর্বর্তী সরকার স্টেশন দুটি চালুর উদ্যোগ নেয়। তাতে যুক্ত হন ফারুক আহমেদ। প্রাথমিকভাবে অন্য স্টেশন ও স্থাপনা থেকে কিছু সরঞ্জাম স্থানান্তর এবং স্থানীয়ভাবে কিছু পণ্য কিনে প্রায় দুই কোটি টাকা ব্যয় করে তিন মাসের মধ্যে দুটি স্টেশন চালু করা হয়।
এদিকে ডিএমটিসিএল সূত্র জানায়, কাজীপাড়া ও মিরপুর-১০ নম্বর স্টেশনে আরও কিছু প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম কেনার জন্য দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে। এ কাজে সাকল্যে ১৮ কোটি টাকা লাগবে।
ফারুক আহমেদ চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (চুয়েট) থেকে ১৯৮২ সালে পুরকৌশল বিষয়ে স্নাতক করেন। ১৯৯০ সালে অস্ট্রেলিয়ার নিউ সাউথ ওয়েলস বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পুরকৌশলে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন। ২০০৪ সালে তিনি অস্ট্রেলিয়া থেকে ব্যবসায় প্রশাসনে স্নাতকোত্তর (এমবিএ) সম্পন্ন করেন।
এ ছাড়া আয়ারল্যান্ড, পর্তুগাল, হংকং, নিউজিল্যান্ড ও ম্যাকাও থেকেও নানা পেশাগত দক্ষতাবিষয়ক বিভিন্ন ডিগ্রি নিয়েছেন তিনি।