Homeদেশের গণমাধ্যমে‘মানুষ আগ্রহ নিয়ে খবর শোনে কিন্তু বিশ্বাস করেনা’

‘মানুষ আগ্রহ নিয়ে খবর শোনে কিন্তু বিশ্বাস করেনা’


আফজাল হোসেন, দেশের একজন মেধাবী অভিনেতা। তবে এর বাইরেও তার  আছে আরও কিছু পরিচয়। তিনি একাধারে নির্মাতা , চিত্রশিল্পী ও লেখক। সমাজ ও দেশের বিভিন্ন অসঙ্গতি উঠে আসে তার লেখায়। বিশেষকরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তিনি খুবই সরব থাকেন।

এই যেমন, ২৩ জানুয়ারি (বুধবার) তিনি নিজের ফেসবুক ওয়ালে একটি লেখা শেয়ার করেছেন। সেখানে এই অভিনেতা লেখেন, ‘আমাদের মধ্যে বাসা বেঁধে থাকে অবিশ্বাস। অবিশ্বাস  সেখানে নিয়মিত ডিম পেড়ে বাচ্চা ফুটিয়ে চলেছে। সেই বাচ্চারা ছোট বড় মাঝারি- নানা সাইজের। পৃথিবীর বহু দেশে অবিশ্বাস বসবাসের জন্য জায়গা পায়না। আমাদের মনে তার জন্য অগাধ জায়গা। সে জায়গা অতি নিরাপদ। অবিশ্বাস বাসা বেঁধেই বুঝে ফেলে, এখন থেকে কখনোই উচ্ছেদ হতে হবেনা।’ এরপর অভিনেতা লিখেছেন, ‘কোনও বাড়ির ঠিকানা খুঁজছেন, কেউ একজন দেখিয়ে দিলো- বাম দিক দিয়ে সোজা এগিয়ে গেলে ডাইনে রাস্তা পাবেন। সে রাস্তা ধরে খানিকটা সামনে গেলে বামে পাবেন আপনার ঠিকানা। বিস্তারিত শুনে আপনি এগুচ্ছেন কিন্তু মনে সন্দেহ নিশপিশ করবে, লোকটা ভুল রাস্তা দেখিয়ে দেয়নি তো!দোকান থেকে অনেক দরাদরি করে কোনও জিনিস কিনেছেন, যে দাম বলেছিলো তার থেকে ছয়শত টাকা কমাতে পেরে খুশিমনে কি বাড়ি ফিরতে পারেন? মনে হতে থাকবে, ছয়শত টাকা কমানো গেছে, তার মানে আরও শ খানেক হয়তো কমানো যেতো। দোকানদার ব্যাটা অনেক ঠকিয়েছে। ডাক্তার প্রেসক্রিপশনে ওসুধ লিখে দিয়েছে। মাত্র তিনটা ওসুধের নাম। মনে সন্দেহ লাফঝাঁপ দেয়া শুরু করে দেবে- এই কটা ওষুধে রোগ ভালো হবে কি?’ আফজাল হোসেন আফজাল হোসেন লিখেছেন, ‘কোনও বড় কর্তার অফিসরুমের বাইরে কেউ অপেক্ষা করছেন। জানানো হয়েছে রুমে একজন রয়েছেন, তিনি বের হলে আপনি যাবেন। কুড়ি বাইশ মিনিট পরে কর্তার ঘর থেকে একজন নারী বেরিয়ে আসেন। বাইরে অপেক্ষারত মানুষটা উঠে দাঁড়ান। যে সমস্যা নিয়ে কর্তার কাছে আসা- তা মাথা থেকে হুট করে সরে গেছে। মাথায় ঢুকে পড়েছে বড় কর্তা আর বেরিয়ে যাওয়া মেয়েটি। এতটা সময় তাঁকে বাইরে বসিয়ে রেখে ঘরে আসলে কি হচ্ছিলো? মাছ বিক্রেতা বলছে, দ্যাখেন স্যার টাটকা মাছ। মনে মনে হাসবে ক্রেতা- ব্যাটা পচা মাছ টাটকা দেখানোর নতুন কোনও ত্বরিকা পেয়ে গেছে বোধহয়!পদে পদে এইরকম অসংখ্য বিষয়ে অবিশ্বাস ছায়ার মতো আমাদের অনুসরণ করে চলেছে। মানুষ আগ্রহ নিয়ে খবর শোনে, দেখে, পড়ে- সবই অভ্যাসবশত, বিশ্বাস করেনা।’ আফজাল হোসেন তিনি এরপর লিখেছেন, ‘কেউ একজন বললো- নিরাশ হওয়ার কিছু নেই, দেশের ভালো হবে। শোনে, বিশ্বাস করেনা। আবার কেউ যদি খুবই বিরক্তি দেখিয়ে বলে- দেশের ভালো হবে, তার কোনও লক্ষন দেখিনা। এরকম মন্দ কিছু বললে, শুনলে মন সন্তুষ্ট হয়। মন্দ কথা সহজে বিশ্বাস করে ফেলে। মন্দে আমাদের আস্থা বেড়েছে। কারও প্রসঙ্গে, যে কোনও বিষয়ে মন্দ কথা মন্দভাবে বললে আমাদের বিশ্বাস করতে আরাম লাগে। ভালোয় আমাদের প্রবল অবিশ্বাস আর সকল মন্দে সপে দিয়েছি মন। এটা ভয়ঙ্কর এক রোগ। যার চিকিৎসা করা প্রয়োজন, তাও মনে করিনা কেউ, বরং যদি কাউকে শোনানো হয়, এটা একটা রোগ- উল্লেখ করা মানুষের সাথে সম্পর্ক নষ্ট হয়ে যাবে। মন্দে মন্দে আমরা আরও রুগ্ন হয়ে মরবো। জীবনভর অবিশ্বাসের সুখ ভোগ করে করে যখন মরবো- তখনও কি আমাদের মরদেহ অবিশ্বাস আক্রান্ত থাকবে?’

আসলে দেশের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়েই তিনি কথাগুলো লিখেছেন।

 





Source link

এই বিষয়ের আরো সংবাদ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -spot_img

এই বিষয়ে সর্বাধিক পঠিত