চলতি জানুয়ারি মাসের শুরু থেকেই আরোং আনৈই-এ থেকে ৭০ শিশু পড়ালেখা করছে। যদিও এর উদ্বোধন করা হয়েছে গত রোববার। উদ্বোধন করেন টঙ্কাবতী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাংয়ং ম্রো। বিশেষ অতিথি ছিলেন ম্রো ভাষার লেখক ও গবেষক ইয়াংঙান ম্রো, দক্ষিণ হাঙর মৌজার হেডম্যান (মৌজাপ্রধান) পারিং ম্রো। উপস্থিত ছিলেন টঙ্কাবতী ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য মেনতাং ম্রো, য়ংঙি ম্রো। সভাপতিত্ব করেন ক্রংসের ব্যাংভু-এর সভাপতি সিংলক ম্রো। অনুষ্ঠানে এ ছাড়া অংশগ্রহণ করেন আরোং আনৈই-এ থাকা শিক্ষার্থীদের অভিভাবকেরা।
ক্রংসের ব্যাংকভুর সভাপতি ও ক্রামা ধর্মের পুরোহিত সিংলক ম্রো নিজেও বাংলা বলতে পারেন না। ম্রো ভাষায় তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ১০ বছর ধরে জমিয়ে প্রায় ২০ লাখ টাকা হয়েছে তাঁদের। সমিতির সর্বশেষ সভায় ম্রো শিশুদের বাংলা ও মাতৃভাষা ম্রোতে পড়াশোনা করানোর জন্য ছাত্রাবাস ও ছাত্রীনিবাস করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। এরই অংশ হিসেবে আরোং আনৈই প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। এ প্রতিষ্ঠানে শিশুদের নিজেদের ক্রামা ধর্ম, মাতৃভাষা ও বাংলা শিক্ষার ব্যবস্থা থাকবে। বাংলায় শিক্ষিত ম্রোদের যদি নিজেদের মাতৃভাষায় পড়ালেখা না জানা রোধ করা না যায়, ম্রো ভাষা হারিয়ে যাবে। তিনি আরও বলেন, তাঁদের প্রতিষ্ঠানটি টিকিয়ে রাখতে সরকারি-বেসরকারি সহযোগিতা দরকার। নইলে দীর্ঘ সময় ধরে পরিচালনা কঠিন হতে পারে।
ম্রো ঐতিহ্যবাহী স্থাপত্যে খুঁটির ওপর মাচাং দিয়ে আরোং আনৈই নির্মাণ করা হয়েছে। চারপাশে বাঁশের নিখুঁত বেড়া, ওপরে টিনের ছাউনি। সামনে রয়েছে খোলা বারান্দা। বারান্দায় দাঁড়িয়ে শিক্ষার্থীরা খোলা হাওয়া উপভোগ করতে পারে। ভেতরে একটি কক্ষে সবাই পড়াশোনা করে ও বিছানা পেতে ঘুমায়। শিক্ষার্থীরা মিয়ানমার সীমান্তবর্তী থানচির লেইক্রী, বড় মদক; আলীকদমের কুরুকপাতা ও রুমার নাইতিংয়ে দুর্গম এলাকার।