Homeদেশের গণমাধ্যমেব্যাংকের পরিচালক পরিচয়ে প্রতারণা, অভিযুক্ত গ্রেপ্তার

ব্যাংকের পরিচালক পরিচয়ে প্রতারণা, অভিযুক্ত গ্রেপ্তার


ন্যাশনাল ব্যাংকের পরিচালক পরিচয় দিয়ে প্রতারণার মাধ্যমে চারটি স্বর্ণের চেইন নিয়ে যাওয়ার ঘটনায় আরাফাত রহমান সাহেদকে (৫৫) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

চাঁদপুর শহরের মহিলা কলেজ রোডের গোল্ডেন টাওয়ারে ‘স্বর্ণ মহরা’ নামে একটি জুয়েলারি দোকানে গিয়ে প্রতারণার মাধ্যমে চারটি স্বর্ণের চেইন হাতিয়ে নেন সাহেদ। 

বৃহস্পতিবার (৯ জানুয়ারি) বিকালে এই তথ্য নিশ্চিত করেন চাঁদপুর সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. বাহার মিয়া।

আসামি সাহেদ নোয়খালী জেলার সোনাইমুড়ী থানার ৭ নম্বর ইউনিয়নের বজরা গ্রামের মৃত মজিবুর রহমানের ছেলে। তিনি রাজধানীর উত্তরা পশ্চিম থানার ১২ নম্বর সেক্টরের ৩ নম্বর রোডের প্রিয়াংকা হাউজিং সোসাইটির ৯ নম্বর বাসায় থাকেন।

এই ঘটনায় গত ৩ জানুয়ারি চাঁদপুর সদর মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করেন ন্যাশনাল ব্যাংক চাঁদপুর শাখার ব্যবস্থাপক মো. সাইফুল ইসলাম।

মামলার বিবরণ থেকে জানা গেছে, গত ২ জানুয়ারি ব্যাংকের পরিচালকের ছোট ভাইয়ের মৃত্যুর সংবাদ পেয়ে কুমিল্লার বড়ুয়া থানার সোনাইমুড়ি গ্রামে যান সাইফুল ইসলাম। যাওয়ার সময় তিনি ব্যাংকের কাজে ব্যবহৃত মোবাইলটি ব্যাংকের অফিসার শামছুল ইসলামের নিকট রেখে যান। প্রতারক সাহেদ সন্ধ্যা ৭টার দিকে ওই মোবাইলে একাধিকবার ফোন দেন। শামছুল ইসলাম ওই কল রিসিভ করতে পারেননি। পরে রাত ৮টার দিকে দ্বিতীয়বার হোয়াটসঅ্যাপে কল দেন সাহেদ। এবার ফোন রিসিভ করলে সাহেদ নিজেকে জুলকার নয়ন এবং ব্যাংকের পরিচালক হিসেবে নিজেকে পরিচয় দেন। একই সাথে ব্যাংকের বিভিন্ন তথ্য জানতে চান। তার মোবাইল নম্বর ও ছবির সাথে ব্যাংকের পরিচালকের মিল পেয়ে তিনি তথ্য প্রদান করেন।

পরবর্তীতে ব্যাংকের ম্যানেজার সাইফুল ইসলামকে সাহেদের সাথে যোগাযোগ করার জন্য বলেন। পরে সাইফুল ইসলাম সাহেদের দেওয়া মোবাইল নম্বরে ফোন দেন। সেসময় সাহেদ তাকে জানান, তিনি চাঁদপুরে এক বিয়েতে অংশগ্রহণ করবেন এবং তিনি মৎস্য গবষেণা ইনস্টিটিউটের রেস্ট হাউজে রয়েছেন। ম্যানেজারকে বিয়ের অনুষ্ঠানে দাওয়াতও দেন।

কিছুক্ষণ পরে প্রতারক সাহেদ আবার ম্যানেজার সাইফুলকে ফোন দিয়ে জানান, তার স্ত্রী কিছু স্বর্ণের গহনা কিনবেন। সাইফুলের পরিচিত কোনো জুয়ালারি দোকান আছে কিনা! সেসময় সাইফুল ব্যাংকের গ্রাহক মোজাম্মেল হক ও স্বর্ণ মহরার স্বত্ত্বাধিকারী মো. নাজির আহম্মেদের কাছ থেকে স্বর্ণ কেনার পরমার্শ দেন।

এরপরই প্রতারক সাহেদ ওই দোকানে গিয়ে ৩ ভরি ৯.৫ আনা ওজনের ৫টি স্বর্ণের চেইন ক্রয় করেন এবং টাকা পরিশোধ করার জন্য তার ক্রেটিড কার্ড প্রদান করেন। ওই দোকানে ক্রেটিড কার্ড থেকে টাকা নেওয়ার ব্যবস্থা না থাকায় দোকানের কর্মচারীকে তার গাড়িতে করে মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটে নিয়ে যান। ওই কর্মচারীকে সেখানে বসিয়ে রেখে কৌশলে গাড়ি নিয়ে পালিয়ে যান প্রতারক সাহেদ।

এই ঘটনায় ন্যাশনাল ব্যাংক চাঁদপুর শাখার ম্যানেজার মামলা করলে তদন্তকারী কর্মকর্তা চাঁদপুর সদর মডেল থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) স্বপন নন্দী তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার এবং সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে প্রতারক সাহেদকে রাজধানীর উত্তরা থেকে বুধবার (৮ জানুয়ারি) বিকেলে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হন। রাতে তাকে চাঁদপুর সদর মডেল নেওয়া হয়।

চাঁদপুর সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. বাহার মিয়া বলেন, “ওই প্রতারককে গ্রেপ্তার করার পর তার দেওয়া তথ্য মতে মামলার আলামত হিসেবে ৬টি অ্যান্ড্রয়েড ফোন, নগদ ৯ লাখ ৮১ হাজার টাকা, ভিজিটিং কার্ড, ব্যাংক স্টেটমেন্ট ও স্বর্ণের খালি বাক্স জব্দ করা হয়। তবে স্বর্ণের চেইনগুলো সে বিক্রি করে দেয়।”

তিনি আরও বলেন, “গ্রেপ্তারের পর তাকে আদালতে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনার সাথে আর কেউ জড়িত আছে কিনা তা জানতে আসামির রিমান্ড আবেদন করা হবে।”





Source link

এই বিষয়ের আরো সংবাদ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -spot_img

এই বিষয়ে সর্বাধিক পঠিত